আগামী ২০২৪–২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে যথাপোযুক্ত ও সাহসী পদক্ষেপ উল্লেখ করে তা বাস্তবায়নে নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি খলিলুর রহমান। গতকাল প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ অভিমত প্রকাশ করেন।
খলিলুর রহমান বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) রাজস্ব আহরণের জন্য ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার যে লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে, তার যথাযথ তদারকি এবং সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা না গেলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে। বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ বরাদ্দ বৃদ্ধি
এবং ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ বরাদ্দ কমানোর ফলে জনগণের জীবনাযাত্রার খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে।
নিয়মিত কর প্রদানকৃত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উপর করের বোঝা না বাড়িয়ে নতুন করদাতা সৃষ্টির উপর গুরুত্ব প্রদানসহ পরিবহন ও যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। করদাতাদের হয়রানি কমাতে আয়কর রিটার্ন অ্যাসেসমেন্টের বিধান বাতিল করায় ব্যক্তি ও কোম্পনি দুই শ্রেণির করদাতাই কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে।
যেহেতু বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা, তাই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধি, ডলার সংকট এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি ১০ এর কোটায় উঠায় বর্ধিত উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিতে প্রতিকূল অবস্থার কারণে দেশের বৃহৎ বৈদেশিক মুদ্রা আয়কারী পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে শূন্য শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।
খলিলুর রহমান বলেন, বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে আনার যে প্রত্যাশা রাখা হয়েছে, তাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা রক্ষায় দেশের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনতে দেশীয় শিল্প উৎপাদন প্রবৃদ্ধির প্রয়াসে বিশেষ করে টেক্সটাইল সেক্টরে যথা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান আবশ্যক। পাশাপাশি রপ্তানি শিল্প এবং দেশের যাবতীয় মেশিনারিজ প্ল্যান্ট আমদানিতে সকল প্রতিবন্ধকতার অবসান করে শুধুমাত্র প্যাকিং লিস্ট মতে মেশিনারি চালান ছাড় দিয়ে তার যাবতীয় কার্যক্রম প্রতিস্থাপন ইত্যাদির তদারকি ভ্যাট বিভাগের উপর ন্যাস্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করি। মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি বলেন, বাজেটে ঘাটতি মোকাবেলায় দেশি বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে সচেতনতার প্রয়োজন বলে মনে করি। বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিক তদারকি এবং জবাবদিহিতার আওতায় আনলে ব্যয় বৃদ্ধি ও সময়ক্ষেপণ হ্রাস পাবে।
এ ক্ষেত্রে প্রকল্প পরিচালকের বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার জবাবদিহিতার জন্য প্রতি ত্রৈমাসিক অন্তর প্রকল্প অগ্রগতির রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রেরণসহ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমানোর লক্ষ্যে সম্পূরক শুল্ক মূল্য বৃদ্ধি সময়োপযোগী বলে মনে করি।