মায়ের আরেক লক্ষ্মী রূপ হলো শাশুড়ি মা। দেবী দুর্গার যেমন অনেক রূপ ঠিক তেমনি মায়েরই আরেক জ্যোর্তিময়ী প্রতিমূর্তি হলো শাশুড়ি মা। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় : ‘সুখের দুখের কথা, /একটুখানি ভাবব এমন সময় ছিল কোথা! /এই জীবনটা ভালো কিম্বা মন্দ কিম্বা যা–হোক – একটা– কিছু,/ সে কথাটা বুঝবো কখন, দেখব কখন ভেবে আগুপিছু! /একটানা এক ক্লান্ত সুরে,/ কাজের চাকা চলছে ঘুরে ঘুরে’।
সেই সময়কার নারীদের কথা লিখে গেছেন বিশ্বকবি। প্রায় প্রতিটি নারীর জীবনে কোথাও না কোথাও আজও এর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। সংসার জীবনের শুরু থেকে নিজের সংসারকে সে আঁকড়ে ধরে। বিয়ের আগে মা বাবা ঠাকুমা দাদুর আদরে লালিত হওয়া মেয়েটি যখন অজানা অচেনা শ্বশুরবাড়িতে আসে তখন ‘ইচ্ছা করে, আপনার করি যেখানে যা কিছু আছে’…এই হয় তার মনের কথা।
শ্বশুরবাড়িতে একান্নবর্তী পরিবারের মধ্যমনি থাকেন শাশুড়ি মা। তবে শাশুড়ি কে নিজের মায়ের স্থানে তখনি বসানো যায় যখন তিনিও ঘরের বউটিকে নিজের মেয়ের জায়গায় বসান।
আমার শাশুড়ি মা যখন বলতেন, ‘তোমার মা ডাকটা খুব সুন্দর’ –শুনে আমি খুশিতে আপ্লুত হয়ে যেতাম। এটাই নিয়ম। আপন করলেই আপন হওয়া যায়। সংসারে কষ্ট থাকবেই, শাশুড়ির একটু স্নেহে বউমা‘রা হাসিমুখে জয় করে নেবার ক্ষমতা রাখে। গীতার সেই বাণী…‘কর্ম কর, ফলের আশা করো না’…সানন্দে মাথা পেতে নিয়ে নেয় দায়িত্বের দায়, নিজের সংসারের মঙ্গলের জন্য। একজন শাশুড়ি যখন বউয়ের কঠিন সময়গুলোকে সহজ আর সহজ সময়গুলোকে মজাদার করতে পারেন তাহলে সেখানে স্বর্গ নেমে আসবে।