প্রথমবার সংসদে আসা আলোচিত আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এমপি হিসেবে পাওয়া সম্মানী ভাতা আর বরাদ্দের তথ্য ফেসবুকে চাউর করে দেওয়ায় বেজায় চটেছেন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এ বিষয়ে ক্ষোভ ঝেরেছেন তিনি। সুমনের নাম প্রকাশ না করেই বলেছেন, কেবল সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য নতুন সংসদ সদস্যের এমন আচরণ। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি তুলেছেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
জাতীয় পার্টির এমপি চুন্নু বলেন, আমাদের হাউজের একজন সংসদ সদস্য। নামটা বলতে চাই না, তিনি নতুন নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ফেসবুকে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে আমরা সবাই ভুক্তভোগী।
ফেসবুকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমনের অনুসারীর সংখ্যা ৫৭ লাখ। সেখানে কী এমন লিখেছেন তিনি, যে চুন্নুর নিজেকে ভুক্তভোগী মনে হচ্ছে? চুন্নু বলেন, তিনি (সুমন) বলেছেন, আপনারা জানেন এমপিরা কত টাকা বেতন পান তারাতো বলে না, গোপন করে। তিনি বলেছেন, ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা বেতন (মাসিক) পেয়েছেন। আমরা কত টাকা বেতন পাই তা লুকানোর কিছু নেই, ওয়েবসাইটে গেলে পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেছেন, তিন মাসের মধ্যে ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। সেটা কীভাবে পেলেন? তিন কোটি টাকা গমের জন্য। আর বাকি ২৫ কোটি টাকা পেয়েছেন রাস্তার জন্য।
স্পিকারকে উদ্দেশ করে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ বলেন, এই ২৮ কোটি টাকা কি আমি পেয়েছি? আপনি (স্পিকার) পেয়েছেন? প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন? ইতোমধ্যে ফেসবুকে দেখে আমাকে অনেকেই বলছেন, ২৮ কোটি টাকা পেয়েছেন, এই টাকা কই? তিনি (সুমন) বলেছেন, ২৫ কোটি টাকা পেয়েছেন, কিন্তু আমরাতো পাইনি।
স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে পাঁচ বছরে এমপিদের অনুকূলে যে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হত, সে কথা তুলে ধরে চুন্নু বলেন, এইবার বলেছেন পাঁচ বছরের জন্য ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পের নাম দেওয়ার জন্য। আগামী ৫ বছরের জন্য কয়টা প্রকল্প করব তার নাম দিয়েছি আমরা। টাকার সঙ্গে তো আমার কোনো সম্পর্ক নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগ জরিপ করে টেন্ডার করে, তারপরে বাস্তবায়ন করে। কিন্তু সংসদ সদস্য বলছেন, আমরা ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। শুধু তাই না, তিনি আরও বলেছেন, এমপি হলে যদি এত লাভ হয়, তাহলে আরও আগে এমপি হতাম।
এ ব্যাপারে স্পিকারের কাছে বিচার চেয়ে জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, আপনি হলেন এই সংসদের অভিভাবক। আমাদের কোনো সদস্য যদি এমন কোনো কথা বলেন, যে কথায় প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারসহ ৩৪৯ জন এমপি (সায়েদুল হক সুমন ছাড়া) সম্পর্কে ভুল বার্তা যাবে… তার সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করবার জন্য যদি এ ধরনের কথায় ভুল বার্তা যায়, বিষয়টা আপনি দেখতে পারেন।
আমরা এখানে অনেক কথা বলব, বিতর্ক করব। এমন কথা বলবার অধিকার নেই যাতে ৩৪৯ এমপির ইজ্জত যাবে। তাদের সম্পর্কে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তাই অভিভাবক হিসাবে ওই সংসদ সদস্যকে ডেকে তাকে কি করবেন, এটা ব্যবস্থা নেবেন।