মিয়ানমারের সংঘাতমুখর রাখাইনে (আরাকানে) বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও সেনাবাহিনীর ২৮৮ জন সদস্যকে গতকাল নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএর জেটি ঘাট থেকে একটি জাহাজে করে তাদের পাঠানো হয় বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মিয়ানমার নৌ–বাহিনীর একটি জাহাজে। সেখানে তাদের তুলে দেওয়া হয় মিয়ানমারের জান্তা সরকার কর্তৃপক্ষের কাছে।
গত ৩ মার্চ থেকে কয়েক দফায় মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর এসব সদস্য প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সদস্যদের হস্তান্তর বিষয়ে গতরাত পর্যন্ত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এর আগে ভোরে কক্সবাজারের রামু সংলগ্ন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সদর থেকে তাদের কড়া নিরাপত্তায় বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাটে আনা হয়। মিয়ানমারে ফেরত ২৮৮ জনের মধ্যে ২৬১ জনই সেদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্য। বাকি ২৭ জন সেনাবাহিনী ও ইমিগ্রেশনসহ অন্যান্য দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা।
এরআগে গত বুধবার সকালে মিয়ানমারের কারাগারে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগ শেষে মুক্তি পাওয়া ১৭৩ জন বাংলাদেশিকে নিয়ে জাহাজটি সেন্টমার্টিনে আসে। সেখান থেকে তাদের নিয়ে আসা হয় কঙবাজারে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এসময় মিয়ানমারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলও কঙবাজারে আসে। এই প্রতিনিধিদলকে সড়কপথে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে বিজিবির ব্যাটালিয়নে অবস্থিত একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই বিদ্যালয়েই বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনাসদস্যরা ছিলেন।
মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা তাদের পরিচয় শনাক্ত করেন এবং দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সম্মতি প্রকাশ করেন। এ সময় বিজিবির কঙবাজার সেক্টরের কমান্ডার, নাইক্ষ্যংছড়ির জোন কমান্ডারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি একইভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া আরও ৩৩০ জনকে একটি জাহাজে করে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে (আরাকানে) সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির ভয়াবহ সংঘাত চলছে।