মহেশখালীর মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দরে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনায় ‘মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০২৪’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
জানা যায়, সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, এলএনজি–এলপিজি টার্মিনাল, ইকোনমিক জোনসহ ৩৭টি মেগা প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে মহেশখালীতে। এসব পরিকল্পনা সমন্বয় করতে একটি শক্তিশালী কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০২৪ করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ ও নির্বাহী পরিষদের কার্যাবলি অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে সমন্বয়ে একটি গভনিং বোর্ড গঠনের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এ আইনে অর্থমন্ত্রীকে ভাইস–চেয়ারম্যান রাখা হয়েছে। এছাড়া সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, বাণিজ্য মন্ত্রী, নৌপরিবহন মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার বিভাগ মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিবসহ ১৭ জন সদস্য থাকবেন কমিটিতে। মহেশখালী–মাতারবাড়ী ইন্টিগ্রেটেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (মিডি) মহাপরিকল্পনার (কম্প্রিহেনসিভ মাস্টার প্ল্যান) জন্য নতুন এ আইন করছে সরকার।
গতকালের মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, মহেশখালী মাতারবাড়ি সমন্বিত উন্নয়ন কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরকালে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যৌথ ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণার আওতায় মাতাবাড়িতে উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়। তিনি জানান, মাতারবাড়িকে কেন্দ্র করে যাতে অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করা যায়, সেখানে গভীর সমুদ্রবন্দর সুবিধা থেকে শুরু করে উন্নয়নের মৌলিক কিছু অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে সামগ্রিক কিছু অঞ্চল চিহ্নিত করে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করা যায়, সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সমন্বিতভাবে এসব কাজ করতে মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ কর্তৃপক্ষের গভর্নিং বোর্ডের প্রধান হিসেবে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রীসহ কয়েকজন মন্ত্রীকে নিয়ে ১৭ সদস্যের বোর্ড থাকবে। কর্তৃপক্ষের মূল কাজ হবে নির্ধারিত এলাকায় ভূমি ব্যবহারের মাস্টারপ্ল্যান করে তা বাস্তবায়ন করা। যাদের ভূমি দেওয়া হবে, তারা যেন যথাযথভাবে কাজ করেন। ৫৫ হাজার ৯৬৮ একর জমি নিয়ে প্রকল্প এলাকার যে মাস্টারপ্ল্যান হবে, সেখানে যেন পরিবেশ সংরক্ষণ করা হয়, লবণ চাষ, পান চাষও যেন সুরক্ষিত থাকে, তা নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশি–বিদেশি বিনিয়োগ যাতে ঘটে, তাতে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা দিতে এটি করা হচ্ছে। কিছু পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো নিষ্পত্তি করে পুনরায় আইনটি মন্ত্রিসভায় তোলা হবে। কঙবপ্রধান কার্যালয় হবে। ঢাকায় লিয়াজো অফিস করা যাবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।