এবার দেশে যখন এসে পৌঁছাই তখন রমজান মাস শুরু হবার আরো সপ্তাহ দুয়েক বাকি। রমজান উপলক্ষে ইতিমধ্যে রাস্তাঘাট, সড়কের অনেকাংশ দখল করে গড়ে উঠা বাজারে ব্যস্ততা চোখে পড়ার মত। রমজান, রমজান শেষ হলেই ঈদ। সবকিছু মিলে এই সময়টায় ক্রেতা, বিক্রেতা, ভোক্তা সবার মাঝে বাড়তি ব্যস্ততা লক্ষ্য করি। ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী বন্ধু, সুহৃদ যারা আছেন, যাদের কারো কারো সাথে আমার অনেক দিনের সম্পর্ক, তাদের কেউ কেউ তাগিদ দেন কবে তাদের ওখানে যাব। সবার এক কথা, রোজা সামনে, তার আগেই আমরা বসি, আড্ডা দেই, খাওয়া–দাওয়া করি। খাওয়াটা গৌণ হলেও প্রতিটি নেমন্ত্রণে গিয়ে দেখি বিশাল আয়োজন। যেন সেটিই মুখ্য। যারা ডাকেন তারা নিতান্তই ভালোবেসে ডাকেন। কেননা তাদের সাথে আমার কোন চাওয়া–পাওয়ার ব্যাপার–স্যাপার নেই। তাদের কেউ কেউ সমাজের এমন অবস্থানে অবস্থানরত, আমার মত নিতান্তই সাধারণ এক প্রবাসীকে ধর্তব্যে না এনে একেবারে এড়িয়ে গেলেও তাদের কিচ্ছু যায় আসেনা। সে হিসেবে আমি সৌভাগ্যবান। আর এই কথাটি আমাকে মনে করিয়ে দিয়ে আমার পরিচিতজনদের কেউ কেউ বলেন, ‘আপনি কী সৌভাগ্যবান! দেশে এলে প্রতিবারই দেখি ওনাদের ওখানে আপনার নিমন্ত্রণ।’ দেশে এসে শহর, শহরের বাইরে এমনতর নেমন্ত্রণ খেতে খেতে চলে এলো রমজান। এবার শুরু হলো ‘ইফতার পার্টিতে’ যোগ দেয়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে কয়েক হাজার মাইল দূরে সাত সাগর পাড়ের দেশে বসে গিন্নীর খেদোক্তি– ‘আমাকে হল্যান্ড ফেরত পাঠিয়ে নিজে খুব মজা করে প্রতিদিন ইফতার পার্টি খাওয়া হচ্ছে।’ উত্তরে বলি, ‘একটু বাড়িয়ে বলা হলো না? প্রতিদিন তো আর খাচ্ছিনে, মাঝে মধ্যে। প্রায় প্রতিদিন ইফতারের দাওয়াত পাই বটে, কিন্তু সবখানে তো আর যাওয়া হয় না।’
শুক্রবার, কিছুক্ষণ পর শুরু হবে জুমার নামাজ। ঘরের ডাবল–গ্লাস ভেদ করে ধারে–কাছের মসজিদে যে বয়ান চলছে তা কানে ভেসে আসছে। বাসায় একা। সুমনা ফিরে গেছে দিন দশেক আগে। তিন সপ্তাহের ছুটি নিয়ে সে সঙ্গী হয়েছিল। গতরাত ফোন করে যখন বললে, ‘এবার তোমাকে বেশি মিস করছি‘’, উত্তরে বলি, ‘মনে হয় আমার দিন ঘনিয়ে আসছে, বুঝি তাই।’ বরাবরের মত দেরি করে ঘুম থেকে উঠে ড্রয়িং রুমে বসে ডাইনিং টেবিলটাকে মেইক–শিফট পড়ার–টেবিল বানিয়ে ল্যাপটপ খুলে বসেছি। কেবল প্রথম লাইন লিখেছি। এমন সময় মোবাইল ফোন বেজে উঠে। স্ক্রিনে দেখি কামরুন ভাবি, মালেক ভাইয়ের (দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক) সুযোগ্যা সহধর্মিনী। এ–কথা, ও–কথা বলার পর ভাবি বলেন, ‘সোমবার কী করছেন, চলে আসুন, আমাদের সাথে ইফতার করতে।’ উত্তরে বলি, সে আমার সৌভাগ্য। কিন্তু আমার মত বে–রোজাদারকে ইফতার খাওয়ালে ‘সোয়াফ’ হবে না। তিনি বলেন, ‘অমন করে বলবেন না। আমাদের মাঝে ধর্ম, ভিন্ন–ধর্ম বলে কোন ভেদাভেদ নেই।’ কথাটি যে কতটা সত্য সে আমার চাইতে আর কেউ বেশি জানেন বলে মনে হয় না। সপ্তাহ দুয়েক আগেও ভাবীর গ্রামের বাড়ি, আনোয়ারা উপজেলার তৈলারদ্বীপ গ্রাম বেড়িয়ে এসেছিলাম। বিশাল এলাকা নিয়ে গড়ে উঠা এই গ্রামের বাড়ি, কেবল বাড়ি নয়, যেন ‘সামার–রেজোর্ট’। সকাল থেকে বিকেল অবধি গোটা বাড়ি, এলাকা ঘুরে বেড়িয়েছি। পুকুরের মাছ, গাছের ডাব, বাড়ির সবজি সহ প্রতিবারের মত ছিল টেবিল ভর্তি খাবার। ফেরার সময় ভাবি সুমনাকে দিলেন পুকুর থেকে ধরা বেশ কটি মাছ। আমরা কেবল দুটি প্রাণী। কে খাবে অত মাছ। শহরে ফেরার পথে অর্ধেকের বেশি মাছ সুমনা দিয়ে দিল ওর মামার গ্রামের বাড়ি। আমাদের চালক ইব্রাহিমের কপালেও জুটলো একটি। সে মহাখুশি, এই কারণে জ্যান্ত ও খাঁটি মাছ। ফরমালিন ছাড়া। মালেক ভাইয়ের দ্বিতীয় সন্তান শিহাব (মালেক), তার স্ত্রী সাদাফ ঘুরে ঘুরে দেখালো বাড়ির বিভিন্ন দিক, কোনটি কি গাছ, ফল ইত্যাদির বর্ণনা দিলো। সেদিন শিহাবের কাছ থেকে জানলাম, পুকুরের পানি গভীর হলে তাতে মাছ বড় হয় না। অগভীর পানিতেই মাছ বড় হয়। এ বিশ্বের কত কিছুই অজানা। ফিরে যাই রমজানে।
এতদিন কেবল শুনেছি, পত্রিকার পাতায় পড়েছি আর ছবি দেখেছি ভূতপূর্ব মেয়র এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে গোটা মাস ধরে আয়োজিত ইফতার মাহ্ফিলের কথা। এবার কাছ থেকে দেখার সুযোগ হলো। এখানে বলে নেই, ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব আয়োজিত মেগা–ইফতার পার্টিতে যোগ দিয়েছিলাম। আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ক্লাবের প্রেসিডেন্ট সালাউদ্দিন মোঃ রেজা। বিশাল ও চমৎকার ছিল সে আয়োজন। তাতে ক্লাবের সদস্য, সাংবাদিক, তাদের পরিবারের সদস্য ছাড়াও অংশ নিয়েছিলেন সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তার মধ্যে নগরীর মেয়র থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ, উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, কূটনীতিক, বিজ্ঞ ও সিনিয়র সাংবাদিক। অন্যতম ছিলেন একুশে পদক প্রাপ্ত বরণ্য সাংবাদিক, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক। সেখানে দেখা, কথাবার্তা অনেক দিন দেখা–সাক্ষাৎ হয়নি তেমন কয়েক সিনিয়র সাংবাদিকের। চমৎকার মিলনমেলা ছিল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সেদিনের ইফতার পার্টি। তবে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী ও আমার দৃষ্টিতে অবাক–করা ইফতার মাহফিল ছিল প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেদিন সকালে গিয়েছিলাম বন্ধুসম ড. সেলিম আকতার চৌধুরী পরিচালিত বেলভিউ হাসপাতালে। তিনি সন্ধ্যেয় প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত ইফতার পার্টিতে যোগ দেবার আমন্ত্রণ জানালে সাথে সাথে প্রস্তাবটা লুফে নেই, এই কারণে এতদিন যা শুনে এসেছি সেটি এবার কাছ থেকে দেখার সুযোগ হবে বলে। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকতেই আমার দু–চোখ কপালে উঠার দশা। কয়েক হাজার রোজাদার মাটিতে বিছানো চাদরে সারিবদ্ধ বসে আছেন, প্রত্যেকের সামনে প্লেটভর্তি ইফতারি, মগ ভর্তি শরবত, কোথাও কোন হইচই, হুল্লোড়, অনিয়ম নেই। তখন একদিকে মাইকে ধর্মীয় বয়ান করে চলেছেন এক মাওলানা। দেখলাম সমাজের হত–দরিদ্র থেকে শুরু করে রিকশাওয়ালা, ভিখিরি–ভিখিরিনি, খেটে–খাওয়া মানুষ, ফেরিওয়ালা সবাই নীরবে শুনছেন মওলানার বয়ান এবং অপেক্ষায় কবে ভাঙবেন সারাদিনের রোজা। ওদের পাশ কাটিয়ে গেলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে। ঢুকতেই সেলিম ভাই বরাবরের মত দরদ–ভরা কণ্ঠে ‘দাদা আইয়ন’ বলে বসতে বললেন। তার পাশের চেয়ারে প্রয়াত মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর দ্বিতীয় সন্তান, বোরহানুল হাসান চৌধুরী। তার সাথে এই প্রথম দেখা। বিনয়ী এই তরুণ উদ্যোক্তার সাথে নানা বিষয় নিয়ে আলাপ হলো। মহিউদ্দিন চৌধুরী আজ বেঁচে থাকলে বোধকরি বেশি খুশি হতেন। আমি সব সময় বলি, আজ মহিউদ্দিন চৌধুরী বেঁচে থাকলে চট্টগ্রাম অন্য রূপ ধারণ করতো। তিনি চলে গেছেন, কিন্তু রেখে গেছেন তার দুই যোগ্য সন্তানকে। তার এক সন্তান দেশের শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সাথে প্রথম সাক্ষাতে তাই মনে হয়েছিল। গেল বছর ড. সেলিম চৌধুরী সহ রাত প্রায় সাড়ে দশটার দিকে তার চশমা হিল বাসভবনে দেখা করতে গেলে তিনি সহাস্যে হাত বাড়িয়ে বলেছিলেন, ‘আপনার লেখা তো আমি ছোটকাল থেকে পড়ে আসছি।’ উত্তরে মৃদু হেসে বলি, ‘আপনি মনে করিয়ে দিলেন যে আমি বুড়ো হয়ে গেছি।’ শুনে কিছুটা বিব্রত হয়েছিলেন। যাই হোক, ইফতারে উপস্থিত রোজাদার মানুষের সংখ্যায় বিস্ময় প্রকাশ করলে বোরহানুল হাসান চৌধুরী জানান, গত ছয় বছর ধরে প্রতি রমজানে গোটা মাস ধরে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এই ইফতারির আয়োজন করা হচ্ছে, যেখানে প্রতিদিন প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার রোজাদার অংশ গ্রহণ করেন। কেবল যে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা অংশ নেন তা নয়, ভিন্নধর্মী কেউ কেউ এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে অংশ নেন। সেদিন দেখলাম আমাদের সাথে এক বৌদ্ধ তরুণ ডাক্তার।
বিলেতে ছয় বছর উচ্চশিক্ষা শেষে দেশে ফিরে এসে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের মেম্বার সেক্রেটারি, বোরহানুল হাসান চৌধুরী পরিবারের বিভিন্ন ব্যবসার হাল ধরেছেন। তার পাশে বসা ড. সেলিম চৌধুরী বলেন, ‘সে গত ছয় বছর ধরে বড় ত্যাগ দিচ্ছে।’ কীভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বোরহানুল গত ছয় বছর প্রতিদিন বাসায় তার পরিবারের সাথে ইফতার না করে এখানে এসে সাধারণ জনতার সাথে সামিল হয়ে ইফতার করছে।’ এ বছর কেবল প্রথম দিন বাসায় ইফতার করেছিলেন বলে জানালেন বোরহানুল হাসান চৌধুরী। কেবল তাই নয়, ১৫ আগস্ট টুঙ্গি পাড়ায় খাবারের আয়োজন করা হয় ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে। তাতে প্রায় ৩০–৪০ হাজার লোক অংশ গ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম থেকেই বাবুর্চি, রান্নার কাজে বাবুর্চিকে সাহায্য করার জন্যে এক দল মহিলা, যাবতীয় মসল্লা, এমন কি কসাই পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। কেননা এত বিরাট আয়োজনের জন্যে দক্ষ কসাই ও বাবুর্চি গোপালগঞ্জে পাওয়া যায়না। এমন কী ৪০ কেজি খাবার ধারণ করা যায় তেমন ডেকচিও চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এতো বড় ডেকচি অন্য কোন জেলায় পাওয়া যায় না। অবশ্য ইদানীং ঢাকায় পাওয়া যায় বলে তিনি জানান। এছাড়া এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশন থেকে রৌফাবাদ মানসিক প্রতিবন্ধী সেন্টারে প্রতি সপ্তাহে ৯০ লিটার দুধ সরবরাহ করা হয় ৩৩০ প্রতিবন্ধী শিশুর জন্যে। ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হলেন প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী আওয়ামী লীগ নেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন। যাই হোক, এক সময় আমরা অংশ নিলাম গণ–ইফতারে। আমাদের সামনে বসা গেঞ্জি গায়ে, পরনে লুঙ্গি পড়া বেশ কয়েক রোজাদার। আরো যারা বসে আমাদের সামনে তারা সাধারণ পথচারী, খেটে–খাওয়া মানুষ। বোধকরি এমন দৃশ্য কেবল এই পবিত্র রমজান মাসেই দেখা মেলে। কোন ভেদাভেদ নেই। ভিন্ন সময় এইভাবে একই সারিতে বসে খাবারের চিন্তাও করা যায় না। এখানেই বুঝি রমজানের অন্যতম মাহাত্ম। সবার পাতে একই খাবার, কারো পাতে স্পেশাল কোন আইটেম নেই, আমাদের পাতেও না। কৌতূহলী দৃষ্টি নিয়ে এদিক–ওদিক তাকাই। কিছুটা দ্বিধা টের পেয়ে পাশে বসা সেলিম ভাই বলেন, আপনি চাইলে ছবি তুলতে পারেন। বেশ কিছু ছবি তুলে নিলাম চট জলদি। দেখি বিজয় টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান ছবি তুলে চলেছে জনতার, আমাদের। এক সময় আজান পড়লো। সবাই মাথা নিচু করে খেতে থাকে। ইফতার শেষে আমরা ফিরে যাই বোরহানুলের অফিস কক্ষে। বলেন, সেমাই খান চায়ের সাথে। সেমাই খাব কী খাব না এই নিয়ে দ্বিধা করছি, তা টের পেয়ে বোরহানুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের তৈরি খাঁটি ঘি দিয়ে তৈরি। বাজারের ঘি নয়। দুধও আমাদের তৈরি।’ বেশ ভালো লাগলো। সেলিম ভাই বলেন, ‘হল্যান্ড যাবার সময় দিয়ে দেব আপনাকে।’ ঘিয়ের প্রতি দুর্বলতা আমার। মনে পড়ে, অফিস যাবার সময় বাবা গরম ভাতের সাথে ঘি মিশিয়ে খেতেন, খাবারের কিছু অংশ রেখে দিতেন, সে রেখে যাওয়া অংশটুকু মজা করে খেতাম। সেটি পাকিস্তান আমলের কথা। এখন বাংলাদেশ। দেশে এখন ঘি কেন, কোন খাবারে যে ভেজাল আর ফরমালিন মেশানো নয় এই ভেবে ঘি থেকে শুরু করে সমস্ত ফল ‘নিষিদ্ধ’, খাইনে। এমন কী কলাও। তাই সেলিম ভাই যখন বললেন, হল্যান্ড যাবার আগে ঘি হাতে ধরিয়ে দেবেন, তখন মনে মনে খুশিই হয়েছি। এখন ভাবছি ফিরে যেতে আরো সপ্তাহ দেড়েক বাকি। অদ্দিন কথাটা তার মনে থাকবে তো? যে ব্যস্ত মানুষ তিনি।
লেখক
সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট