অস্ট্রেলিয়ার সিডনি স্বপ্নের শহর। সিডনি সাউথ ওয়্যারলস রাজ্যের রাজধানী। অস্ট্রেলিয়ার ছয়টি স্টেটের মধ্যে সিডনি একটি। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে লুমিয়া শহর। অনেক বাংলাদেশিদের বসবাস। পাশাপাশি লাখেম্বায় আরো বেশি বাংলাদেশি। রাস্তার দু’পাশে সব বাড়ি ঘর যেন ছবির মত সাজানো। সবকটি বাড়ি একতলা কটেজ টাইপ বাংলো বাড়ি। মাঝেমধ্যে আবার হাতেগোনা দোতলা লাল ইটের বাড়ি। লাল ইটের পুরানো ধাঁচের বাড়ি টালির ছাউনি দেখতে খুব সুন্দর। পুরো অস্ট্রেলিয়া শহরে স্বকীয় সৌন্দর্যে ভরপুর বাড়ি মার্কেট ইত্যাদি। সব বাড়ির আঙিনায় ছোট বড় পুলের বাগান। অস্ট্রেলিয়ায় এখন বসন্তকাল। ঠান্ডা ও নয় গরমও নয় এখানে চারটি ঋতু। বাহারি রঙের পুল শোভা পাচ্ছে। বাড়িঘর ছাড়াও রাস্তার দুপাশে মনলোভা পুল স্বর্গের অপরূপ শৈল শোভা যেদিকে তাকাই মন জুড়িয়ে যায়। বসবাসের এলাকায় মার্কেট অফিস আদালত চোখে পড়েনি। প্রতিটি রাস্তা এলাকা সুপরিকল্পিতভাবে সাজানো। সারাদিনে কেউ হয়তো বসে নেই, এমনকি ছাত্র–ছাত্রীরা ও স্কুল কলেজে পড়ালেখার পাশাপাশি শপিংমলে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে ঘন্টা হিসেবে। খুব ব্যস্ত শহর হাজার লোকের আসা–যাওয়া লাইন ধরে গাড়ি চলছেতো চলছে কোন হরণ নেই। নেই কোনো দুর্ঘটনা। যানজট নেই পুলিশ নেই রাস্তায় কোন ময়লা আবর্জনা নেই সিগন্যাল লাইট দেখে গাড়ি চলছে আবার থামছে। যত্রতত্র গাড়ির পার্কিং নেই। আইনের প্রতি সবাই শ্রদ্ধাশীল। সিডনি শহরের লুমিয়া ও লাখেম্বায় অনেক বাংলাদেশি পরিবার হিন্দু বৌদ্ধ মুসলিম। পবিত্র বড়ুয়া ও হৈমন্তী বড়ুয়া হিমু তাদের এক ছেলে হিয়েন বড়ুয়া মেয়ে অনামিকা বড়ুয়া। তাদের সুন্দর গোছানো সংসার নিজস্ব বাড়িতেই থাকে। তাদের জন্মস্থান চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার জলদি গ্রামে। এখন অস্ট্রেলিয়ান পাসপোর্টধারী। আমার পরম আত্মীয়। অস্ট্রেলিয়ায় তারা আমার স্থানীয় অভিভাবক যে ক’মাস এখানে আছি। বাংলাদেশের আর অস্ট্রেলিয়ার ঘড়ির সময় ৫ ঘন্টা বেশি আর কম মানে তফাৎ। প্রথমে আমার ঘুম নিয়ে একটু সমস্যা হলেও এখন অনেকটা ঠিক হয়ে গেছে। প্রায় দিন আমরা বেরিয়ে পড়ি বেড়াতে ঘুরতে। পবিত্র –হিমু ড্রাইভিং এ পাকা। তাদের বিলাসবহুল গাড়িতে এখানে সেখানে যাওয়া। তারা দীর্ঘ বছর অস্ট্রেলিয়ায় বিধায় রাস্তা তাদের জানা জানা। এখানে প্রায় জনের ব্যক্তিগত গাড়ি আছে। আর যাদের নচেৎ গাড়ি নাই তারা ট্রেন এবং লোকাল বাজে চলাফেরা করেন স্বাচ্ছন্দ্যে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে প্রতিটি গ্রাম যেন রং তুলিতে আঁকা। ঘরে ঘরে পানি বিদ্যুৎ রাস্তার সুব্যবস্থা। একটি শপিং মলে ডাক্তার থেকে শুরু করে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়া যায়। শপিংমলে স্থানীয় ছাড়াও বাঙালি, নেপালি কোরিয়ান, ফিলিপাইনি পাকিস্তানি শ্রীলঙ্কানদের দোকান।এখানে একটি বাংলাদেশ মালিকের দোকান আছে নাম চকবাজার। বাংলাদেশি পণ্যের বিশাল সমাহার। বাঙালিরা সময় পেলেই এই দোকানে গিয়ে সওদা করেন। এখানে পার্কিং ছাড়া কোন মার্কেট নেই স্কুল কলেজ কিচ্ছু নেই। যেখানে সেখানে মার্কেটে নেই সরকার অনুমোদিত ছাড়া ছোট বড় কোন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় নেই। নেই কোন চাকরির ভর্তির কোচিং সেন্টার। ইচ্ছে করলে যে কেউ যে কোন পেশার চাকরি করতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট কাজের অস্ট্রেলিয়ান ডিপ্লোমা দরকার। সবার একমাত্র সাধনা কাজ আর কাজ সুন্দর জীবন গড়া।