আনোয়ারায় ঘর থেকে টেনে বের করে বাড়ির পাশের জমিতে নিয়ে মো. আনোয়ার মিয়া (৫৫) নামে এক টেক্সি চালককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার হাইলধর ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আনোয়ার মিয়ার বর্তমান স্ত্রী পারভীন আকতার বাদী হয়ে আনোয়ারের প্রাক্তন স্ত্রীর স্বামী মো. শাহাদাত হোসেনকে প্রধান আসামি করে ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। রাতেই অভিযান চালিয়ে মামলার তিনজন আসামি মো. পারভেজ (২২), শাহজাহান (৪২) ও শাহ আলম (৪০)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহতের চাচাতো ভাই সিরাজুল ইসলাম জানান, নিহত টেক্সি চালক মো. আনোয়ার মিয়া ওমান প্রবাসী ছিলেন। ১৯৯৫ সালে মরিয়ম নামের এক নারীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্ত্রীর একাউন্টে আনোয়ার বিদেশ থেকে টাকা জমা রাখতো। কিন্তু বিয়ের ১০/১২ বছর পর আনোয়ারের স্ত্রী মরিয়ম হাইলধর ইউনিয়নের কাজী বাড়ির বাসিন্দা মো. শাহাদাত হোসেনের সাথে পরকিয়ার জেরে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে আনোয়ার পারভীন আকতার নামের এক নারীকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। বর্তমানে তাদের সংসারে তাসপিয়া (১০) রাইসা (৭) নামের দুই কন্যা ও তানভির (৯) একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
গত কয়েক মাস আগে হঠাৎ করে মো. শাহাদাত হোসেন প্রথম স্ত্রী মরিয়ম কে নিয়ে এলাকায় ফিরেন। এরপর থেকে শাহাদাত বিভিন্ন সময়ে উল্টো আনোয়ার মিয়ার সাথে ঝগড়া শুরু করতো এবং মারধর করার চেষ্টা করতো। সর্বশেষ গত বুধবার আনোয়ারকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে খুন করে। সন্ধ্যা ৭ টায় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহত আনোয়ার মিয়ার বর্তমান স্ত্রী পারভীন আকতার অভিযোগ করে বলেন, বুধবার রাতে প্রথমে পারভেজ নামের এক ছেলে আমাদের ঘরে এসে নানান কথা বলে। এর পর পর রাত ১২ টার দিকে মো. শাহাদাত আমাদের ঘরে ঢুকে প্রথমে আমাকে মারধর করে আহত করে। আমার স্বামী আনোয়ারকে জোর করে ঘর থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে খুন করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পুলিশকে জানানোর পর। পুলিশ এসে আমার স্বামীর লাশ উদ্ধার করে। আমি এখন ৩ ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে কোথায় যাব, আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইলিয়াস খোকন বলেন, আনোয়ারের প্রথম বউ পালিয়ে যাওয়ার পর সে অনেকটা মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। প্রথম স্ত্রীর কারণে সে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে সে আবার দ্বিতীয় বিয়ে করে। অনেক কষ্ট করে সংসার চালায়। রাতে আমি এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পাই শাহাদাত আনোয়ার কে খুন করে পালিয়ে যায়। আনোয়ারা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রশীদ জানান, টেক্সিচালক আনোয়ার মিয়াকে রাতে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তবে হাসপাতালে আনার আগে আনোয়ারের মৃত্যু হয়।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) সোহেল আহম্মদ জানান, টেক্সিচালক আনোয়ার মিয়া খুনের ঘটনায় হত্যা মামলা রেকর্ড হয়েছে। মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।