টাঙ্গাইল শাড়ির ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মেইল করে আবেদনের সব কাগজপত্র পাঠিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম। এছাড়া আজ বুধবার মন্ত্রণালয়ে হার্ডকপি জমা দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম বলেন, ভৌগলিক দিক থেকে টাঙ্গাইল বাংলাদেশের একটি অংশ। সেই পরিপ্রেক্ষিতে টাঙ্গাইল নামধারী যে কোনো পণ্যই বাংলাদেশের পণ্য। আমাদের অত্যন্ত গর্বের যে টাঙ্গাইল শাড়ি, এটি প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার দাবিদার। আমরা তিন মাস আগে টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতি পেতে কাগজপত্র প্রস্তুত করার কাজ হাতে নিয়েছি। সেটি এ মুহূর্তে চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। আমরা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেতে আবেদন করেছি। খবর বাংলানিউজের।
তিনি আরও বলেন, সেই আবেদনের প্রক্রিয়ার মধ্যেই ভারত টাঙ্গাইল শাড়িকে তাদের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ভারত স্বীকৃতি না দিলেও এ সপ্তাহে আমরা টাঙ্গাইল শাড়ির জন্য আবেদন করতাম। টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই স্বীকৃতি লাভের জন্য শাড়ির ইতিহাস, এর সঙ্গে মানুষের জীবন জীবিকার তথ্যাদি, এর অরিজিন, গত প্রায় আড়াইশ বছরের ইতিহাসের তথ্যাদি সম্বলিত করে নথিপত্র তৈরি করেছি। জিআই স্বীকৃতি লাভের জন্য পদ্ধতিগত কাজগুলো যেমন পে অর্ডার জমা, আবেদন করা, ডকুমেন্ট (নথিপত্র) রেডি করা, নমুনা শাড়ি জমা দেওয়া, সেগুলো সব কিছু করে মঙ্গলবার (গতকাল) মন্ত্রণালয়ে সফট কপি পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, আশা করছি, দ্রুত আমরা টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতি পাব। ভারতে টাঙ্গাইল শাড়ি অব বেঙ্গল নামে যে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে, তা বাংলাদেশের স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমরা আশাবাদী, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।
গত বৃহস্পতিবার ভারতের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে করা একটি পোস্টে বলা হয়েছে, টাঙ্গাইল শাড়ি, পশ্চিমবঙ্গ থেকে উদ্ভূত, একটি ঐতিহ্যবাহী হাতে বোনা মাস্টারপিস। এর মিহি গঠন, বৈচিত্র্যময় রং এবং সূক্ষ জামদানি মোটিফের জন্য বিখ্যাত। এটি এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। টাঙ্গাইলের প্রতিটি শাড়ি ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ সৌন্দর্যের মেলবন্ধনে দক্ষ কারুকার্যের নিদর্শন। এরপর থেকে টাঙ্গাইলসহ সারাদেশে ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এর একপর্যায়ে পোস্টটি সরিয়ে নেয় ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।