আরাফাত রহমান সানি। বয়স তার ৩২ ছুঁইছুঁই। তিনি একজন টাইলস মিস্ত্রী। সানি জুমায়রা ডেভেলপার কোম্পানিতে চাকরি করে।
১৭ জানুয়ারি তখন রাত ১টা। কাজ থেকে ষোলশহর ২নং গেট থেকে তার বাসায় ফেরার পথে অচেনা এক মহিলা আরাফাত রহমান সানিকে হাতে পায়ে ধরে আকুতি মিনতি করে বলেন, আমি মহিলা খুব অসুস্থ, আমাকে রৌফাবাদ পৌঁছে দেন।
তখন তার অনুরোধে একটি সিএনজি টেক্সি ঠিক করে ষোলশহর ২নং গেট থেকে উক্ত মহিলার কথামত রৌফাবাদ উত্তর গেট নামক স্থানে পৌঁছা মাত্রই অজ্ঞাতনামা ৫ জন মিলে জোরপূর্বক সানিকে অপহরণ করে বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন এশিয়াটিক কটন মিলের ভিতরে হারুনের বাড়ীর পশ্চিম পাশে ২য় তলার ঘরের ছাদের উপর নির্জন স্থানে নিয়ে যান।
পরবর্তীতে তাদের অন্যান্য সহযোগী মিলে তার প্যান্টের পকেটে থাকা সাড়ে ৯ হাজার টাকাসহ মানিব্যাগ, বাম হাতের আঙ্গুলে পরিহিত ২ আনা ওজনের স্বর্ণের ১টি আংটিসহ তার সাথে সব জিনিস নিয়ে নেয়।
এছাড়া সানির কাছে আরো ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তখন আরাফাত রহমান সানি তার পরিচিত এলাকার এক লোক বাবু আহমেদকে (৩৩) কে ঘটনার ব্যাপার জানিয়ে মুক্তিপণের টাকা আনার জন্য বললে ঐ লোক ২০ হাজার টাকা নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে।
তখন সানির প্রতিবেশী বাবু আহমেদকেও আটকে রেখে চক্রটি।
পরে মুক্তিপণের ২০ হাজার টাকাসহ তার কাছে থাকা নগদ ১২ হাজার টাকা ও তার বিকাশ নাম্বারে থাকা ৬ হাজার টাকা ক্যাশ আউট করে জোরপূর্বক নিয়ে নেয়। পরে সানির প্রতিবেশীকে উক্ত বিষয়ে কোন প্রকার মামলা মোকদ্দমা না করার জন্য ভয়ভীতি প্রদান করে তাদের দুইজনকে ছেড়ে দেয়।
পরে আরাফাত সানি ও বাবু আহমেদ যার যার বাসায় চলে যায়। পরদিন ১৮ জানুয়ারি বিকেলে বাদী বায়েজিদ বোস্তামী থানায় এসে ঘটনার বিষয়টি জানালে টহল পুলিশ ও একটি আভিযানিক দল বাদীকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন এশিয়াটিক কটন মিলের প্রাণ কোম্পানীর গাড়ী ওয়াশিংয়ের পশ্চিম পাশে পরিত্যাক্ত ভবনের সামনে বারান্দা থেকে চক্রের ৫ সদস্যকে আটক করে তাদের হেফাজত থেকে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক নেওয়া টাকার মধ্যে ১১ হাজার টাকা উদ্ধার করে।
থানা সূত্রে জানা যায়, আটককৃত অভিযুক্তদের ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায়, অভিযুক্ত মহিলা প্রতারণারমূলকভাবে অসুস্থতার ভান করে পরষ্পর যোগসাজশে তারা অপহরণ করে। পরে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মোট ৪৭ হাজার টাকা, ১টি আংটি ও ১টি ঘড়ি বলপূর্বক আদায় করে।
এ ব্যাপারে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি সনজয় কুমার সিনহা বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে ৩৬৫/৩২৩/৩৮৬/৫০৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পলাতক অভিযুক্তদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যহত আছে। মামলাটি তদন্তাধীন।