চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে যাঁর অনবদ্য ভূমিকা রয়েছে তিনি হলেন অধ্যাপক ড. এ. আর. মল্লিক। ড. মল্লিক একজন মেধাবী ইতিহাসবিদ, গবেষক, ক্লাস–সফল শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সর্বোপরি একজন দূরদর্শী দক্ষ প্রশাসক। আপনব্রতে নিবেদিত কর্মবীর। পুরো নাম আজিজুর রহমান মল্লিক। শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পরিসরে সমীহ করার মতো একটি নাম। অবয়ব, আচরণ, বচন, বসন ও বিচরণে তিনি ছিলেন একজন পরিশীলিত রুচির মানুষ এবং হতে পেরেছিলেন তাঁর নমস্য শিক্ষকদের মতো। কর্ম ও কৃতিগুণে তিনি বাঙালি মুসলমানের ইতিহাসচর্চায় যেমন মেধার স্বাক্ষর রেখেছিলেন, তেমনি দেশ ও দশের স্বার্থে সাংগঠনিক কর্মে ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। শিক্ষক–গবেষকের পরিচয় ছাপিয়ে দেশ–সমাজের জন্য প্রভূত অবদান রেখে একজন দূরদর্শী দক্ষ প্রশাসক হিসেবে নিজেকে সমাদৃত করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় প্রথমে প্রকল্প পরিচালক ও পরে প্রথম উপাচার্য হওয়া, মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বজনমত গড়ে তোলা, স্বাধীনতাত্তোর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা রেখে একজন দূরদর্শী দক্ষ প্রশাসকের ভূমিকা পালন করে তিনি ইতিহাসে প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে আছেন।
এ. আর. মল্লিক ৩১ ডিসেম্বর ১৯১৮ সালে বৃহত্তর ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাই–বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। গৃহ শিক্ষকের নিকট আরবী ও কোরআন শিক্ষা লাভ করেন। এরপর পিতা মোহাম্মদ ইসমাইল মল্লিকের চাকরিসূত্রে সপরিবারে বার্মার রেঙ্গুনে চলে যান। সেখানে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন। সপ্তম শ্রেণিতে থাকাকালীন পারিবারিক কারণে ঢাকায় ফিরে আসেন। ১৯৩৪ সালে মানিকগঞ্জ মডেল হাইস্কুল থেকে লেটারসহ প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক এবং ১৯৩৬ সালে ঢাকা সরকারি কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হন। তিনি ১৯৩৯ সালে উক্ত বিভাগ থেকে বি.এ. (সম্মান) এবং ১৯৪০ সালে এম.এ. পাশ করেন। এম.এ. শেষ বর্ষে অধ্যয়নের সময় তিনি সলিমুল্লাহ হল থেকে প্রকাশিত প্রথম ইংরেজি ম্যাগাজিনের সম্পাদনার কাজ করেন।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন শেষ করে এ. আর. মল্লিক ১৯৪১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদানের মাধ্যমে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ হাসান এর সঙ্গে বিশ্বদ্যিালয়ের বিভিন্ন বিষয়ে মতের মিল না হওয়ায় চাকরি ছেড়ে দেন। ১৯৪৩ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে যোগদানের এক মাসের মধ্যে তাঁকে রাজশাহী কলেজে বদলী করা হয় এবং ১৯৫১ সাল পর্যন্ত সেখানে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৫১-’৫৩ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের বরেণ্য অধ্যাপক সি.এইচ. ফিলিপ্স এর তত্ত্বাবধানে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন School of Oriental and African Studies থেকে “The Development of the Muslims of Bengal and Bihar 1833-1856” শিরোনামে অভিসন্দর্ভ রচনা করে রেকর্ড সময় ২১ মাসে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন। লন্ডন থেকে ফিরে তিনি সদ্য প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগদান করেন। সেখানে একাধারে তিনি কিছুদিন লাইব্রেরিয়ান, তৎকালীন জিন্নাহ হলের (বর্তমান শেরে বাংলা হল) প্রভোস্ট ও কলা অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬০ এর দশকের প্রথম ভাগে পাক–ভারত উপমহাদেশের মধ্যে ড. মল্লিক–ই প্রথম শিক্ষাবিদ যিনি আমেরিকায় পৃথিবী বিখ্যাত (আইভিলীগ) পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম Full Professor হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার গৌরব অর্জন করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে South-east Asian Regional Studies Department এর তিনিই প্রতিষ্ঠাতা।
১৯৬৫ সালে অধ্যাপক এ. আর. মল্লিক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন এবং পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত হন ও একই সাথে তৎকালীন পাকিস্তানের স্ট্যান্ডিং কমিটি অব ভাইস–চ্যান্সেলরস এর চেয়ারম্যান ছিলেন যেটি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের মন্ত্রিসভার প্রথম শিক্ষা সচিবের দায়িত্বসহ ভারতে (একই সঙ্গে নেপাল ও ভুটানে) রাষ্ট্রদূত ছিলেন এবং এ দায়িত্ব পালনকালে তিনি আফগানিস্তান ও আলজেরিয়ার স্বীকৃতি আদায় করেন। ১৯৭৪ সালের শেষের দিকে তাজউদ্দীন আহমদ অর্থমন্ত্রীর পদ ছাড়লে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুরোধে ড. মল্লিক অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু মল্লিক স্যারকে বলেছিলেন, “…..অর্থমন্ত্রী হতে অর্থনীতি জানতে হয় না। …..ইমপার্সিয়ালিটির প্রয়োজন হয়। নিজের বিচারের প্রতি বিশ্বাস থাকতে হয়। আর দেশকে ভালবাসতে হয়। এ সবই আপনার মধ্যে আছে। আপনি পদ নিলে আমার উপকার হয়।” ড. মল্লিককে ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর ৮৩ দিনের প্রেসিডেন্ট মোশতাক এর অর্থমন্ত্রীও হতে হয়েছিল বন্দুকের নলের মুখে। ১৯৭৬ সালে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৮৩ সালে উক্ত বিভাগের প্রফেসর ইমেরিটাস হন। একই বছর তিনি ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত উক্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার ব্যাপারে অধ্যাপক মল্লিকের মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগানো হয়েছিল। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর কাজ ছিল প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক। পাকিস্তান সরকার তাঁকে প্রকল্প পরিচালক বা উপাচার্য করার কথা না; কারণ তিনি আইয়ুব–মোনায়েম কাউকেই পছন্দ করতেন না, মুসলিম লীগও সমর্থন করতেন না। সর্বোপরি তিনি প্রথাবিরোধী। কিন্তু তাঁর শর্তে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। অধ্যাপক মল্লিক উপাচার্যের স্বাধীনতা চাইলে মোনায়েম খানের উত্তর ছিল, “আপনি আপনার ইচ্ছেমত বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে পারেন।” তাঁর কাজে মোনায়েম খান কোনো হস্তক্ষেপ করেন নি। ড. মল্লিক মরুভূমিতে মরুদ্যান রচনা করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে আজকের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলেছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কৃতজ্ঞতার নিদর্শনস্বরূপ প্রশাসনিক ভবনের নামকরণ করেছেন ‘এ. আর. মল্লিক ভবন’।
পাকিস্তান সরকার অধ্যাপক মল্লিককে ১৯৬৬ সালেই ক্লাস শুরু করার জন্য পরামর্শ দেন। মল্লিক স্যারের দূরদৃষ্টি ছিল। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, অল্প সময়ে বিশাল এলাকা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণে হাত দেওয়া সমীচীন হবে না, তাতে একটি বড় বিল্ডিং নির্মাণ করাও সম্ভব হবে না। তাই তিনি ছোট ক্যাম্পাস নির্মাণ করেন যাতে অন্তত: প্রথম দুই তিন বৎসরের চাহিদা পূরণ হয়। সাথে সাথে তিনি বাস্তুকলাবিদ নামক একটি আর্কিটেক্ট ফার্মকে সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্ল্যান ও ডিজাইন করার দায়িত্ব দেন। যেখানে ছোট ক্যাম্পাস নির্মিত হয় সেখানে পরবর্তীকালে স্কুল এবং কলেজ চালু হয়েছে।
১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর গভর্নর মোনায়েম খান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বোধন ঘোষণা করেন। বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস ও অর্থনীতি এই চারটি বিভাগে মোট দুইশত ছাত্র নিয়ে ২৮ নভেম্বর ক্লাস শুরু হয়। প্রত্যেক বিভাগে ২ জন করে চার বিভাগে ৮ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার অসাধ্য সাধন করার জন্য ড. মল্লিকের আত্মকথন প্রণিধানযোগ্য, “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার প্রস্তাব যখন পেলাম তখন আবার এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ করা পাহাড় ঘেরা গ্রামটিতে দাঁড়িয়ে ক্ষণিকের জন্য থমকে গেছি। মাত্র এক বছরে এ পাহাড় কেটে পারবো কি বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে? পারতেই হবে – এ প্রত্যয় নিয়ে কাজে নেমেছি। পেয়েছি পরিশ্রমী সহকর্মী এবং মানুষের আশীর্বাদ। সফল হয়েছি মানুষের অঙ্গীকার রক্ষায়।” প্রকৃতপক্ষে সফল মানুষের সাফল্যের পেছনে কাজ করে তাঁর দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. এ. আর. মল্লিক তাঁর উপাচার্যের মেয়াদ শেষ করার পূর্বেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পরেই অধ্যাপক মল্লিক চট্টগ্রামবাসীকে সংগ্রামী আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে আহবান জানান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা ওড়ান। তাঁরই সহযোগিতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ ঘাঁটিতে পরিণত হয়। ২৩ মার্চ ১৯৭১, মল্লিক স্যার জনতার সামনে দ্বিধাহীন কন্ঠে ঘোষণা দেন, “আজ থেকে আমি আর উপাচার্য নাই। দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত একজন মুক্তি সংগ্রামী হিসেবে নিজেকে মনে করবো।” মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তিনি ‘ড্যানিয়েল’ ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন।
ড. মল্লিক এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে রামগড় হয়ে সপরিবারে আগরতলা যান; সেখান থেকে কলকাতা। কলকাতায় তাঁর প্রথম কাজ ছিল বুদ্ধিজীবীদের সংগঠন ‘লিবারেশন কাউন্সিল অব ইন্টেলিজেন্টসিয়া’ গঠন করা। সভাপতির দায়িত্ব নেন তিনি নিজে; সাধারণ সম্পাদক হন প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান। তাছাড়াও অধ্যাপক মল্লিক বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতিরও দায়িত্ব পালন করেন। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। কলকাতা ছাড়ার আগে তাজউদ্দীনের অনুরোধে ড. মল্লিক স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। অধ্যাপক মল্লিক যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের সপক্ষে বক্তৃতা করেন। তিনি জাতিসংঘেও বক্তৃতা করেন। তাঁর বক্তৃতায় থাকতো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যা এবং বাঙালির ন্যায়সঙ্গত প্রতিরোধ যুদ্ধের কথা। মল্লিক স্যারের বক্তৃতাসমূহ আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বজনমতকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছিল।
মল্লিক স্যার একাধিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি বাংলা একাডেমি ও বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলো এবং বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতি ও বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬১ সালে তাঁর পিএইচ.ডি. অভিসন্দর্ভ এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে British Policy and the Muslims in Bengal, 1757-1856 শিরোনামে প্রকাশিত হয়। আমার জীবনকথা ও বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম তাঁর রচিত এক অনবদ্য আত্মজীবনী।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক মল্লিকের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. আবদুল করিম তাঁর সম্পর্কে বলেছেন, একজন দূরদর্শী দক্ষ প্রশাসক যিান বাইরে শক্ত, ভেতরে নরম অর্থাৎ ব্যক্তি হিসেবে বাইরে একটা শক্ত বর্ম পরা মনে হলেও ঐ নারকেলের মতোই, বাইরে কঠিন, আর ভিতরে একদম স্বচ্ছ–সলিলা–বরুণা। বঙ্গবন্ধু ড. এ. আর. মল্লিক সম্পর্কে বলেছেন, “আমার চারপাশে পোর্টফোলিও নিয়ে পলিটিক্যাল লোকজন ঘোরাফেরা করে। অনেক সময় সিদ্ধান্ত ঠিক মতো নিতেও পারি না। আপনার মতো লোক যদি প্রথম থেকে থাকতো যে কোনো রাজনীতি করে না, তাহলে হয়তো আমার উপকার হতো, দেশের উপকার হতো।” বঙ্গবন্ধু ড. মল্লিককে চিনে তাঁকে সম্যকভাবে কাজে লাগিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু আয়ু পেলে জাতি এ. আর. মল্লিকের আরও অবদানে সমৃদ্ধতর হতো। এই জ্ঞানতাপসের মহাপ্রয়ান ঘটে ১৯৯৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি পবিত্র লাইলাতুল কদরের রাতে। শ্রদ্ধেয় মল্লিক স্যার তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শ, সততা, ন্যায়নীতি এবং উজ্জ্বল কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে অনন্তকাল বেঁচে থাকবেন প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে। সেই সাথে ভালো থাকুক স্যারের হাতে গড়া আমার প্রিয় শিক্ষাঙ্গন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিয় কর্মস্থল, শিক্ষক–শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা–কর্মচারী সবাই।
তথ্যসূত্র : এ.আর. মল্লিক, আমার জীবনকথা ও বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম, ওহীদুল আলম, চট্টগ্রামের শিক্ষা সাধনা, আবদুল করিম, সমাজ ও জীবন (২য় খন্ড)।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়