ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার বৃহত্তম হাসপাতাল আল–শিফায় ঝটিকা অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। হামাসের যোদ্ধারা হাসপাতালটিতে অবস্থান নিয়ে আছে অভিযোগ করে তাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছে তারা। এই হাসপাতালটিতে ৬৫০ জনের মতো রোগী, ২০০ থেকে ৫০০ কর্মী ও আশ্রয় নেওয়া প্রায় দেড় হাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনি আছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার রাত ২টার একটু পর ইসরায়েলি বাহিনী ‘হামাসের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ও লক্ষ্যযুক্ত’ অভিযান শুরু করার ঘোষণা দিয়ে হাসপাতালটিতে প্রবেশ করতে শুরু করে।
কয়েকদিন ধরেই গাজা সিটিতে শিফা হাসপাতালের আশপাশে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে হামাস যোদ্ধাদের তীব্র লড়াই চলছিল। এ সময় আশপাশে বেশ কয়েকবার বোমাবর্ষণ করে ইসরায়েল। এবার ইসরায়েলি বাহিনী প্রথমবারের মতো সরাসরি হাসপাতালটিতে প্রবেশ করল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ডা. মুনির আল–বুর্শ আল জাজিরা টেলিভিশনকে বলেছেন, ইসরায়েলি সেনারা মেডিকেল কমপ্লেক্সটির পশ্চিম পাশে অভিযান চালাচ্ছে। তিনি বলেন, সেখানে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে। আমরা যেখানে আছি সেখানে ধূলা প্রবেশ করেছে। আমাদের বিশ্বাস হাসপাতালের ভেতরেও একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিহীন হাসপাতালটিতে চিকিৎসা কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। স্তূপ হয়ে পড়ে থাকা শতাধিক মৃতদেহে পচন ধরেছে। হাসপাতালটিতে থাকা নবজাতক ও রোগীরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন।
এ অবস্থায় আল–শিফার নাজুক পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের মধ্যেই সেখানে অভিযান শুরু করল ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলের অভিযোগ, আল–শিফার নিচে ভূগর্ভে হামাসের একটি কমান্ড সেন্টার আছে এবং হাসপাতালটিকে ও এর নিচে থাকা টানেলগুলোকে সামরিক অভিযান গোপন করতে ব্যবহার করছে তারা, জিম্মিদেরও সেখানে বন্দি করে রেখেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এবং অভিযানের প্রয়োজনীয়তায় আইডিএফ বাহিনী শিফা হাসপাতালের নির্দিষ্ট একটি এলাকায় হামাসের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ও লক্ষ্যযুক্ত অভিযান চালাচ্ছে। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তাদের নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যও ইসরায়েলের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে।
গতকাল হামাস বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা হাসপাতালটিতে ইসরায়েলের অভিযানের জন্য কার্যকর সবুজ সংকেত দিয়েছে। এই অভিযানের জন্য ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সম্পূর্ণভাবে দায়ী বলে বিবেচনা করা হবে। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে হোয়াই হাউজ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।