প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নদীগুলোকে মানবদেহের সঙ্গে তুলনা করে এগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য পানির প্রবাহ যথাযথভাবে প্রবাহমান রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, হার্টে ব্লক তৈরি হলে মানুষ মারা যায়। আমাদের নদী ও খালগুলো মানুষের প্রাণের মতো। এগুলোকে প্রবাহিত রাখতে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল সোমবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে পানি সম্পদ মনন্ত্রণালয়ের ৮০টি উন্নয়ন প্রকল্প ও পুনঃখননকৃত ৪৩০টি ছোট নদী–খাল–জলাশয়ের উদ্বোধন এবং নতুন অনুমোদিত ২০টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে ভাষণে একথা বলেন।
শেখ হাসিনা একই অনুষ্ঠান থেকে স্বাস্থ্য ও পরিকার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন দেশের প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কমিউনিটি আই সেন্টার স্থাপন কার্যক্রমের ৪র্থ পর্যায়ে ৬৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে স্থাপিত কমিউনিটি আই সেন্টারের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ নদীমাতৃক, নদীই আমাদের জীবন। এগুলো ঠিক শরীরের ধমনি–শিরা–উপশিরার মত। তিনি উদাহারণ দেন হার্টের ধমনি ব্লক হলে রক্ত যেমন সঞ্চালন হতে না পেরে মানুষ মারা যায়। আমাদের দেশের নদী–নালাও আমাদের জীবনের মতই। তাদের সচল রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। নদীর প্রবাহ যেন অব্যাহত থাকে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের প্রতিটি প্রকল্প গ্রহণ ও সম্পন্ন করতে হবে। খবর বাসসের।
এজন্য বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বা উন্নয়নের নাম করে কিন্তু সমস্ত খাল, বিল, নদী–নালা, পুকুর পর্যন্ত ভরাট করে ফেলা হয়। আমি মনে করি এটা অত্যন্ত গর্হিত একটি কাজ। যশোরের শার্শা উপজেলা, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা এবং মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিল। প্রধানমন্ত্রী গত ১৫ বছরে বাস্তবায়িত উন্নয়ন পরিকল্পনা সমন্বিত ‘জয়যাত্রা’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের ওপর দুটি পৃথক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ব–দ্বীপ উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে, যা পরবর্তীতে ২১০০ সাল পর্যন্ত এই বদ্বীপকে ধরে রাখা এবং উন্নত করার জন্য ‘ডেল্টাপ্ল্যান–২১০০’ এ রুপান্তর করা হয়। আমাদের ব্যবসা–বাণিজ্য ও পণ্য পরিবহন সবচেয়ে সুলভে হয় নৌ–পথে। যে কারণে একে সচল রাখায় তাঁর সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপেরও উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, যখন কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয় রাস্তা–ঘাট, রেললাইন, স্থাপনা যাই করা হোক সেখানে যেন কোনোভাবেই পানির প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত না হয়। কালভার্ট বা ব্রিজ করে দেয়ার জন্য তাঁর নির্দেশনা রয়েছে। অথবা বন্যার সময় রাস্তা ভেঙে গেলে যে জায়গাটা ভেঙে যাচ্ছে সেখানে আর মাটি ভরাট না করে কালভার্ট বা ব্রিজ করে দেয়ারও নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে, যেন পরবর্তীতে বানের পানি সঠিকভাবে নেমে যেতে পারে।