ফেভারিটের তকমা নিয়ে বিশ্বকাপে আসা অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা হলো হার দিয়ে। ষষ্ট বিশ্বকাপে জয়ের স্বপ্নের পথে শুরুতেই হোঁচট খেল অসিরা। স্বাগতিক ভারতের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। আর স্বাগতিক ভারতের শুরুটা হলো দারুণ এক জয় দিয়ে। চেন্নাইয়ের এম চিদাম্বরম স্টেডিয়ামের উইকেট বরাবরই স্পিনারদের বন্ধু। আর সে উইকেটের ফায়দাটা তুলে নিয়েছে ভারতের স্পিনাররা।
জাদেজা, কুলদিপ যাদব, অশ্বিনদের ঘুর্ণিতে কাবু অসি ব্যাটাররা। আর এদের গড়ে দেওয়া মঞ্চের উপর দুর্দান্ত পারফর্ম করলেন কোহলি–রাহুল। এ দুজনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে আসে অনায়াস জয়। নিজেদের মাঠে তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের মিশনটা এমনই করতে চেয়েছিল ভারত। যেখানে প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়া। তবে সেই অসিরা পাত্তা পেল না ভারতের কাছে। যদিও শুরুতে ধক্কা খেয়েছিল ভারতের ব্যাটিং। কিন্তু সে ধাক্কা সামলে বিরাট কোহলি এবং লোকেশ রাহুল মিলে ব্যাটিং করে নিরাপদে দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। আর অস্ট্রেলিার শুরুটা হলো হার দিয়ে। চেন্নাইয়ের এম চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়া শুরুতেই ধাক্কা খায়। দলের খাতায় ৫ রান যোগ হতেই ফিরেন মিচেল মার্শ। এরপর অবশ্য ডেভিড ওয়ার্নার এবং স্টিভেন স্মিথ মিলে ভালভাবেই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ৬৯ রান যোগ করেন দুজন। দুজনই ফিরেছেন হাফ সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে। এমনিতেই চেন্নাইয়ের উইকেট পুরোপুরি স্পিন নির্ভর। আর সে উইকেটে ভেল্কি দেখাতে থাকেন ভারতের স্পিনাররা। ৫২ বলে ৪১ রান করে কুলদিপ যাদবের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ওয়ার্নার। এরপর মার্নাস লাবুশেনকে নিয়ে ৩৬ রানের জুটি গড়েন স্মিথ। দলীয় ১১০ রানের মাথায় ফিরে যান স্মিথও। ৭১ বলে ৪৬ রান করেন তিনি। রবীন্দ্র জাদেজার বলে বোল্ড হন স্মিথ। জাদেজার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ৪১ বলে ২৭ রান করে আউট হন লাবুশেন। এরপর ভারতের স্পিনারদের সামনে আর কোমর সোজা করে দাড়াতে পারেনি অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা। রানের খাতা খোলার আগে আলেক্স ক্যারিকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় শিকার পূরণ করেন জাদেজা। এরপর কুলদিপ যাদবের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তিনি করেন মাত্র ১৫ রান। ক্যামেরন গ্রিন ৮ রান আর ১৫ রান করে প্যাট কামিন্স ফিরলে দুইশ রানের নিচে অল আউট হওয়ার শংকায় পড়ে অস্ট্রেলিয়া। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই। ১৯৯ রানে অল আউট হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ৩ বল বাকি থাকতে। মিচেল স্টার্কের ২৮ রানই মূলত অস্ট্রেলিয়াকে দুইশর সীমানায় নিয়ে যায়। ভারতীয় স্পিনার রবিন্দ্র জাদেজা নিয়েছেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন কুলদিপ যাদব এবং জসপ্রিত বুমরাহ। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ, হার্দিক পান্ডিয়া এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন। মাত্র ২০০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই টালমাটাল ভারত। ইনিংসের চতুর্থ বলে ফিরেন ইশান কিষান। পরের ওভারে ফিরেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। দুজনই রানের খাতা খুলতে পারেননি। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে আবার হ্যাজেলউডের আঘাত। এবার তার শিকার শ্রেয়াশ আইয়ার। তিনিও খুলতে পারেননি রানের খাতা। ২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে যখন টালমাটাল ভারত তখন হাল ধরেন বিরাট কোহলি এবং লোকেশ রাহুল। যদিও ২০ রানে চতুর্থ উইকেট হারাতে পারতো ভারত। হ্যাজেলউডের বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন কোহলি। ক্যারি এবং মার্শ দুজনই ছুটে এসেছিলেন ক্যাচটি নিতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মার্শের হাত ফসকে বেরিয়ে যায় ক্যাচটি। এরপর অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটতে থাকে কোহলি এবং রাহুল। শেষ পর্যন্ত তাদের থামাতে পেরেছে হ্যাজেলউড। তবে ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। বিরাট কোহলিকে ফিরিয়ে ১৬৪ রানের এ জুটি ভাঙেন হ্যাজেলউড। কোহলি ফিরেছেন ১১৬ বলে ৮৫ রান করে। আউট হয়ে যাওয়ায় সেঞ্চুরি করতে পারেননি বিরাট কোহলি। তবে অপরাজিত থেকেও সেঞ্চুরি করতে পারেননি লোকেশ রাহুল। ৫২ বল বাকি থাকতে জয় নিয়ে মাঠ চাড়ে ভারত। ১১৫ বলে ৮টি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ৯৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন লোকেশ রাহুল। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে হ্যাজেলউড নিয়েছেন ৩ উইকেট।