লঘুচাপের প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলে ৩ নং সতর্ক সংকেত জারি হওয়ার পর থেকে বন্ধ রয়েছে নৌ চলাচল। আবহাওয়া অধিদপ্তর গত শুক্রবার বিকেলে সংকেত ঘোষণা করার পর শনিবার ও গতকাল রোববার দুই দিন নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে গিয়ে যথাসময়ে ফিরতে পারেনি অন্তত দুই শতাধিক পর্যটক।
গতকাল দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্কসংকেত বলবৎ রাখায় টেকনাফ–সেন্টমার্টিন নৌ–পথে পর্যটকবাহী জাহাজসহ নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে গতকালও পর্যটকেরা ফিরতে পারেননি। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো: সেলিম হোসেন।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, ৩ অক্টোবর থেকে সারা দেশে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়বে। আগামীকাল ৩ ও ৪ অক্টোবর সারা দেশে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এরপর বৃষ্টির প্রবণতা কমবে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ আরও শক্তিশালী হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এরপর বাংলাদেশের স্থলভাগ অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর টেকনাফ ট্রাফিক সুপারভাইজার মো. জহির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, সতর্কসংকেত থাকায় রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো জাহাজ, সার্ভিস ট্রলারসহ সব নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আবহাওয়ার সতর্কসংকেত কেটে গেলে সোমবার (আজ) থেকে পুনরায় জাহাজ ও ট্রলার চলাচল শুরু হবে। টেকনাফ থেকে জাহাজ গিয়ে আটকে পড়া পর্যটকদের ফেরত আনবে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক সংকেত জারি করায় নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। সেন্টমার্টিনে বেড়াতে আসা কয়েকশ পর্যটকরা ফিরে যাননি। পরবর্তী সময়ে রোববারও জাহাজ চলাচল না করায় তারা সেন্টমার্টিনে অবস্থান করছেন। তবে উপকূলে স্থানীয় ৩ নং সতর্ক সংকেত উঠিয়ে নেওয়ায় সোমবার (আজ) থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হবে।
সৈকতকর্মী জয়নাল আবেদীন বলেন, গত শুক্রবার বিকেলে সতর্কসংকেত জারি হওয়ার পর হোটেল–রিসোর্টে থাকা পর্যটকদের টেকনাফে চলে যাওয়ার জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হলেও পর্যটকেরা কানে নেননি। ফলে অনেকে দ্বীপে আটকে পড়েন।
ঢাকার মুন্সিগঞ্জ থেকে আসা এক পর্যটক বলেন, পরিবারসহ সেন্টমার্টিন বেড়াতে এসে আটকে পড়ে গেলাম। পায়ে হেঁটে সমুদ্রসৈকত ঘোরা ও সমুদ্রস্নান ছাড়া আর কিছু করার নেই। কবে ফিরতে পারব, জানি না।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকদের যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, সে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রোববার বিকেলের পর সর্কত সংকেত প্রত্যাহার করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সোমবার (আজ) সকালে টেকনাফ থেকে জাহাজ গিয়ে আটকেপড়া পযটকদের ফেরত আনা হবে।