আগস্ট মাস বাংলাদেশের মানুষের কাছে শোকের মাস হিসাবে পরিচিত। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পরিবারের সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পৃথিবীর অনেক দেশে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্ব হত্যার শিকার হয়েছেন। ভারতে মহাত্মা গান্ধী নাথুরাম গডসের গুলিতে নিহত হন। প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ভারতের ইন্দিরা গান্ধী তাঁর দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। মার্টিন লুথার কিং আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। এই সকল রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের বিষয় বিচার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড সবচাইতে নির্মম। কারণ বঙ্গবন্ধুর সাথে তাঁর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুনন্নেসা, তাঁর তিন ছেলে, পুত্রবধূ এবং বঙ্গবন্ধুর ভাই একই বাড়িতে সকলকে একই সাথে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর দুই বোনের বাড়িতে হামলা করা হয়। সেখানেও বঙ্গবন্ধুর আত্মীয় স্বজনকে হত্যা করা হয়। তার কয়েক মাস পর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। এমন নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান সরকারের কাছে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছিলেন। ১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়। ১৭ দিনের যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশ সম্পূর্ণরূপে অরক্ষিত ছিল। যখন লাহোরের বিভিন্ন সেক্টরে কিংবা খেমকারান সেক্টরে বাঙালি সৈন্যরা যুদ্ধে প্রাণ দিচ্ছে তখন পূর্ব পাকিস্তান পুরোপুরি অরক্ষিত ছিল। বিমানবাহিনীর মাত্র চারটি সেভার জেট ছাড়া কোনো ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এমনকী নৌবাহিনীরও কোনো নৌ–প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। তখনই পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ উপলব্ধি করতে পারে যে পাকিস্তান শুধুমাত্র শাসন করার জন্য বাঙালিদেরকে ব্যবহার করছে। সেই সময় দুই অর্থনীতি বা টু–ইকনমি নামে একটি ধারণা বুদ্ধিজীবী মহল চালু করে। তাঁদের বক্তব্য ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনীতি শক্ত ও সবল। অপরদিকে পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতি অত্যন্ত দুর্বল। পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে ব্যাপক বৈষম্যের উপর ভিত্তি করে বঙ্গবন্ধু ৬ দফা আন্দোলন শুরু করেন।
১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হবার পর স্বাধিকারের জন্য আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সংগ্রাম চালায়। ১৯৬৬ এবং ১৯৬৭ সালে ৬ দফার জন্য আন্দোলনকারীদের উপর পাকিস্তান সরকারের পুলিশ নির্মম অত্যাচার চালায়। ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে ক্যান্টনমেন্টে আটকে রাখা হয়। বঙ্গবন্ধুর অনুগত এবং সব আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী একজন ছাত্রনেতা যিনি পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন, তিনি আমাকে একবার বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কয়েকটি কারণে রাজনৈতিক ভাবে বিপুল প্রশংসা অর্জনকারী একজন নেতা ছিলেন। তিনি বলেছিলেন ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণয়ন বঙ্গবন্ধুর জীবনে সবচাইতে বড় সাফল্য। এর মধ্য দিয়ে তাঁর গণতান্ত্রিক চেতনা ও মুল্যবোধের পরিচয় ফুটে ওঠে। ১৯৫৭ সালের ১৪ ই আগস্ট পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর দীর্ঘসময় ধরে পাকিস্তানের শাসক রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগ একটি সংবিধান প্রণয়ন করতে পারেনি। ১৯৫৮ সালে সামরিক বাহিনীর প্রধান ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান ক্ষমতা দখল করে দীর্ঘ ১০ বছর কুক্ষিগত করে রাখে। তাঁ তাঁ
রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসা ওই ছাত্রনেতা আমাকে বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু কতটুকু গণতান্ত্রিক এবং উদার মনোভাবের অধিকারী তার প্রমাণ মিলে ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ এর মধ্য দিয়ে। পাকিস্তান আমলে ঢাকা এবং পশ্চিম পাকিস্তানের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পরিচালিত হত কালা কানুনের মাধ্যমে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতির একটি পরিচালনা ব্যবস্থা তৈরি করেন। যা এখন ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ নামে পরিচিত। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি যেমন প্রশংসার যোগ্য, তেমনি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিও ছিল অনেক সুদূরপ্রসারী। যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয় তখন বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রাকৃতিক সম্পদ পাকিস্তানের হাতে লুট হয়েছে। তিনি তিতাস গ্যাস ফিল্ড শেল কোম্পানির কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন এবং আরও কয়েকটি গ্যাস ক্ষেত্র বিদেশি মালিকানায় পাকিস্তান কর্তৃক লিজ দেওয়া অবস্থা থেকে তিনি কিনে নিয়ে বাংলাদেশের নিজস্ব সূত্র থেকে জ্বালানির ব্যবস্থা করেছিলেন। ওই সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্তের কারণে পরবর্তীকালে বাংলাদেশকে তেল গ্যাস আমদানির উপরে নির্ভরশীল হতে হয়নি। অর্থনৈতিক সাফল্যের আরও একটি নীতিগত বিষয় হচ্ছে সমুদ্র সীমা বিস্তৃত করে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আদালত থেকে বিরাট ধরনের জয় পেয়েছে। যার কর্মকাণ্ড শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ভবিষ্যতের বাংলাদেশে সমুদ্র এক বিরাট সম্পদ জোগানদার হিসেবে পরিচিত হবে। তখন বাংলাদেশের রফতানি করার মতো কোনও সম্পদ ছিল না। ১৯৭২–৭৩ সালে বাংলাদেশ সব দিক থেকে অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়েছিল। অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ‘এক্সপোর্ট লেট গ্রোথ’ এই পরিকল্পনায় যাওয়ার কোনও সুযোগ ছিল না। বঙ্গবন্ধু তখন অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার ডাক দেন এবং কৃষি উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য তিনি সার সেচ ব্যবস্থা এবং বীজের ব্যবহারের উপরে সমবায় ভিত্তিক উৎপাদন পদ্ধতির প্রয়োগ করে যথেষ্ট সাফল্য লাভ করেন।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর বিশ্বাসঘাতক আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাক ক্ষমতা দখল করেছিলেন। তার সাথে আরও কিছু বিশ্বাসঘাতক নেতা যোগ দিয়েছিল। যে সকল নেতা বিশ্বাসঘাতকতায় যুক্ত হননি, তাঁরা অনেক বিপদের মধ্যে ছিলেন। নভেম্বর মাসে চার জাতীয় নেতাকে জেলখানায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পরবর্তীকালে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেন এবং ইনডেমনিটি আইনের জোরে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল কুশীলব কারা সে বিষয়টি আড়ালে থেকে যাবে। এই বিষয়ে আমরা জানি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে এবং বিচারে অনেকের শাস্তি হয়েছে। কিন্তু শাস্তি হওয়ার পরেও কয়েক জন ঘাতক বিদেশে লুকিয়ে জীবনযাপন করছে। বাংলাদেশের কিছু রাজনৈতিক নেতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বলে থাকেন। বাকশাল গঠন করার জন্য বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করা হয়। তখন যারা বাকশালের সমালোচনা করতেন বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকা অবস্থায় তাদের সংখ্যা খুব বেশি ছিল না। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে একটি জাতীয় সরকার গঠন করার জন্য বঙ্গবন্ধুকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তিনি সেটি না করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরকে নিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করেছিলেন। তখন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রশ্নটি অবান্তর ছিল। কারণ স্বাধীনতা বিরোধী দলগুলি তখনও সক্রিয় ছিল এবং কোন স্বাধীন দেশে স্বাধীনতাবিরোধী নেতারা রাজনৈতিক দল চালাতে পারবেন এটা গ্রহণযোগ্য নয়। বাকশালের গঠন কাঠামো কী ছিল এবং বাকশাল কীভাবে অগণতান্ত্রিক সেই বিষয়ে কোনও ব্যাখ্যা না দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে বাকশাল গঠনের জন্য দোষারোপ করা হয়। কিন্তু বাকশালের গঠন কাঠামো পর্যালোচনা করলে সেসময় বাকশাল কতটুকু প্রয়োজন ছিল তা উপলব্ধি করা সম্ভব। রাজনীতিতে এরশাদের সামরিক সরকার এবং জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকার বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা বললেও তারা স্বাধীনতাবিরোধী এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদেরকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করেছেন। যার ফল এখন আমাদের ভোগ করতে হচ্ছে। একটি দেশে গণতন্ত্র খুবই প্রয়োজনীয় একটি শাসন পদ্ধতি। কিন্তু গণতন্ত্রের মধ্যে প্রশাসনিক কাঠামো এবং পরিচালনার প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে।
গণতন্ত্রকে কার্যকর করার জন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলি শক্তিশালী করার প্রশ্ন দেখা দেয়। এই প্রতিষ্ঠানগুলি দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারছে কিনা তার উপর গণতন্ত্র নির্ভর করে। রাষ্ট্রের বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ এবং আইন পরিষদ যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে তাহলে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলি শক্ত সামর্থ হয়ে ওঠে। নির্বাচন কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশন এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলি যত শক্তিশালী হবে, গণতন্ত্র ততই জোরদার হবে। আমাদের দেশে বিরোধী দলগুলি রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কর্তৃত্ববাদী নেতা হিসেবে বক্তব্য দেন। কর্তৃত্ববাদের প্রধান শর্ত হল সেন্ট্রালাইজেশন। সেন্ট্রালাইজেশন এর কারণ হচ্ছে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ না হওয়া। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ না হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন পয়েন্ট অফ ডিসেন্ট্রালাইজেশন; অর্থাৎ যাদের কাছে ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে তারা যদি সে ক্ষমতা ব্যবহার করতে না পারে তাহলে ক্ষমতা উল্টো ভাবে উপরের দিকে চলে যায়। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করার জন্য যেমন প্রয়াজনযোগ্য ও সাহসী মানুষের, তেমনি প্রয়োজন বিভিন্ন স্তরে বিকেন্দ্রীকৃত ক্ষমতা ব্যবহার উপযোগী কাঠামো। আমরা যদি ভারত বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের দেশের তুলনা করি এবং আমরা যদি বলি যে ভারতের বা যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র শক্তিশালী, আমাদের গণতন্ত্র দুর্বল তাহলে প্রথমেই দেখতে হবে ভারতে অনেকগুলি রাজ্য রয়েছে। যেখানে রাজ্য সরকার কাজ করে। যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলি নিজেদের সরকার গঠন করতে পারে। তাদের উপরে থাকে ফেডারেল সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকার। আমাদের দেশে এককেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থার কারণে এবং প্রধানমন্ত্রীর হাতে অনেক বেশি ক্ষমতা থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের শাসনব্যবস্থা ভারতের বা যুক্তরাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা থেকে আলাদা দৃশ্যমান হয়। এজন্য শেখ হাসিনাকে কর্তৃত্ববাদী শাসক বলা যুক্তিসঙ্গত নয়। বরং গত ১৪ বছরে তিন দফায় ক্ষমতায় থাকায় ও আওয়ামী লীগের সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যে সকল কাজ করছে তাতে জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ এবং স্থানীয় সরকারের কার্যক্রম বিবেচনায় একে প্রশংসনীয় বলা উচিত। দেশের ছোট বড় সকল প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত যদি প্রধামন্ত্রীর অফিসে কেন্দ্রীভূত হয় তাহলে বাহির থেকে এই প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থা বলে মনে হতে পারে। আমার মনে হয় এ বিষয় নিয়ে আওয়ামীলীগ ভাবছে না।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড একটি জঘন্য ঘটনা। এই হত্যাকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা অনেক পিছিয়ে পড়েছে। যা অর্জন করতে পারত, তা অর্জিত হয়নি। বরং এখন বাংলাদেশে স্বাধীনতার পক্ষে এবং বিপক্ষের শক্তির যে বিভাজন, তা আরও বিপদের কারণ হয়ে উঠছে। বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত পদক্ষেপগুলি বিচার বিশ্লেষণ করে আমরা ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা বের করে নিতে পারি। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের অনেকেই এখন বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিচারে তাদের সাজা হওয়া সত্ত্বেও তাদের ফেরত আনা যাচ্ছে না। ১৫ আগস্টের রাতে যে সকল খুনি ৩২ নম্বরের বাড়িতে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেছিল তাদের বাইরে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা কারা করেছিল তারও বিচার বিশ্লেষণ হওয়া দরকার। মাত্র কয়েকজন খুনি এতবড় হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে এটি মেনে নেওয়া যায় না। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিদিন ভাষণ দেওয়ার সময় তার মা বাবা ভাইয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এই দিক থেকে বিচার করলে বঙ্গবন্ধুর একজন যোগ্য উত্তরসূরি তিনি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে অনেক কাজ করছেন। দুটি বিষয় উল্লেখ করতে হয়, বঙ্গবন্ধু গৃহহীনদের জন্য চিন্তা ভাবনা করতেন। তার কন্যা আজ বাড়ি বানিয়ে ভূমিহীনদের জমি এবং ঘর দিচ্ছেন। ডিজিটালাইজেশনের ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু কন্যার অবদান উল্লেখযোগ্যভাবে একদিন প্রশংসিত হবে।
পিতার আদর্শ বাস্তবায়নে শেখ হাসিনা এতই তৎপর যে আগামী প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুকে ভোলার কোনও সুযোগ নেই। আগামী দিনে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম নতুন ভাবে বঙ্গবন্ধুকে বিচার বিশ্লেষণ করবে। রবার্ট ফ্রস্ট বলেছেন, ‘হ্যাভেন গ্লিম্পসেস ওনলি টু দোস, নট ইন এ পসিশন টু লুক ভেরি ক্লোস’। যারা দূর থেকে দেখে, তাদের কাছে ঘটনা কতবার দৃশ্য স্বর্গীয় মনে হয়? আমরা অথবা আমাদের বয়সের লোকজন যারা বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখেছি এবং আজকের প্রজন্ম যারা বঙ্গবন্ধুকে দূর থেকে দেখছে তাদের দেখার মধ্যে পার্থক্য হতে পারে। কিন্তু একটি বিষয়ে মিল থাকবে সেটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন। কে কোন রাজনৈতিক দল করে না করে তার উপরে ওঠে তিনি শত্রু মিত্র সকলকে আপন করে নিতে পারতেন।
লেখক: প্রাক্তন অধ্যক্ষ, সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, চট্টগ্রাম;
শিক্ষাবিদ, কলাম লেখক।