অভিযানের পর চারটি চিংড়িঘেরে ডাকাতি

কর্মচারীদের মারধর, অর্ধকোটি টাকার মাছ লুট

চকরিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ৯ জুলাই, ২০২৩ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় এলাকা চিলখালী, বড়চর, ছোটচর, মেদের ঘোনাসহ আশপাশের অন্তত চারটি চিংড়ি ও মৎস্যঘেরে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সংঘবদ্ধ ও অস্ত্রধারী ডাকাতদল হামলা চালিয়ে চিংড়ি ও বিভিন্ন প্রজাতির মাছসহ অন্তত অর্ধকোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। এ সময় মারধর করা হয়েছে ঘের কর্মচারীদের। ডাকাতদল ত্রাস সৃষ্টি করতে ব্যাপক ফাঁকা গুলিও ছুঁড়েছে। তবে এসব ঘেরের কোনো কর্মচারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে ঘের কর্মচারীরা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগে একে একে এসব ঘেরে ডাকাতি সংঘটিত করে সশস্ত্র ডাকাতসন্ত্রাসীরা।

গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল শনিবার ভোররাত পর্যন্ত মৎস্যঘেরসমূহে লুটপাটের এই ঘটনা ঘটেছে বলে ঘের মালিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোররাত পর্যন্ত র‌্যাব চিলখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭ অস্ত্রধারীকে গ্রেপ্তার করে। র‌্যাবের অভিযানের পর পরই ডাকাতির এ ঘটনা ঘটল।

এদিকে ঘেরগুলোতে হঠাৎ এ ঘটনার পর থেকে উপকূলীয় এলাকায় ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করছে। হুমকির মুখে পড়েছে ঘের মালিকদের হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ। এই অবস্থায় সংঘবদ্ধ ডাকাত ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ঘের মালিকসহ ভুক্তভোগীরা।

ছোট চরের ঘের কর্মচারী আহত নুরুল কবির জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় একদল সশস্ত্র ডাকাত অতর্কিতভাবে তাদের মৎস্যঘেরে ঢুকে পড়ে। নিজেরাই জাল চালিয়ে তারা বিপুল পরিমাণ মাছ আহরণ করে নিয়ে গেছে। তাদের খামার বাড়িতে ব্যাপক লুটপাটও চালায় তারা। তিনি জানান, ডাকাতদলের সবাই অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত থাকায় শ্রমিকরা ভয়ে পালিয়ে গেছেন।

মোহাম্মদ হারুন নামের আহত আরেক ঘের কর্মচারী জানান, শুক্রবার সকালের দিকে চিলখালীসহ কয়েকটি মৎস্যঘেরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালায়। কিন্তু এদিন সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন ঘেরে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ ও মৎস্যঘেরে নিয়োজিত শ্রমিকদের মারধর করে মাছসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত বাহিনী।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর মৎস্যঘেরের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে দূরে থাক, উল্টোটা ঘটেছে এখানে। ডাকাতির সময় ঘেরগুলো থেকে চিংড়ি, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, লালনকারী ছাগল, মুরগীসহ খামারবাড়িতে থাকা বিভিন্ন দামি মালামালও লুট করে সশস্ত্র ডাকাতসন্ত্রাসীদল। এতে কম করে হলেও অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ঘের মালিকদের।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুল জব্বার দৈনিক আজাদীকে বলেন, এখনো পর্যন্ত ঘেরে ডাকাতি বা অন্য কোনো ঘটনার বিষয়ে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুর্গম চিংড়ি জোনে র‌্যাবের অভিযান
পরবর্তী নিবন্ধভারতের সঙ্গে রুপিতে লেনদেন শুরু ১১ জুলাই