কক্সবাজারের চকরিয়ার চিংড়ি জোনের দুর্গম চিলখালি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছে র্যাবের আভিযানিক দল। এ সময় দেশে তৈরি বিভিন্ন সাইজের পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ কার্তুজ, সেনাবাহিনীর নকল ইউনিফর্ম, অত্যাধুনিক বাইনোকুলার ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় ডাকাত দলের কাছে অস্ত্র ভাড়াদানকারী চক্রের সাত সদস্যকে।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে শুক্রবার ভোররাত পর্যন্ত র্যাব–১৫ এই অভিযান পরিচালনা করে। এই ঘটনায় র্যাবের পক্ষ থেকে গতকাল শনিবার দুপুরে মামলা রুজু করে চকরিয়া থানায় গ্রেপ্তারকৃতদের সোপর্দ এবং উদ্ধারকৃত অস্ত্র–গোলাবারুদ জমা দেওয়া হয়েছে।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে রয়েছে দুটি ওয়ান শুটার এক নলা বন্দুক, একটি ওয়ান শুটার কাটা রাইফেল, একটি ওয়ান শুটার রাইফেল (এলজি), একটি এয়ার রাইফেল/গান, দুই রাউন্ড মেশিনগানের (এমজি) বুলেট, ১০ রাউন্ড রাইফেলের বুলেট, ১১ রাউন্ড ১২ বোর কার্তুজ, ৮৯ রাউন্ড এয়ার রাইফেল বল, একটি বড় রামদা, এক সেট সেনাবাহিনীর ভুয়া ইউনিফর্ম, একটি বাইনোকুলার, আটটি মোবাইল ফোন এবং ১০টি সীম কার্ড উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন– চকরিয়ার নলবনিয়ার মৃত সিদ্দিকের ছেলে খায়রুল আমিন, ঈদগাঁওর মধ্যেম শিয়াপাড়ার মৃত আবদুস ছত্তারের ছেলে মাহবুব তৈয়ব, লামার আজিজ নগরের নূর ইসলাম, চকরিয়ার দরগা পাড়ার মৃত ডা. আব্দুল মোতালিবের ছেলে মো. আব্দুল হাসিম, খুটাখালীর দক্ষিণ মেদাকচ্ছপিয়ার মৃত আব্দুর শুক্কুরের ছেলে জুলফিকার আলী ভুট্টো, পূর্ব হাজীপাড়ার মো. হোসেনের ছেলে মো. সেলিম ও গর্জনতলীর মো. হোসেনের ছেলে শাহাব উদ্দিন।
র্যাব জানায়, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া ও মহেশখালী থানাসহ উপকূলবর্তী বিভিন্ন এলাকায় সশস্ত্র ডাকাত দলের নিয়মিত তৎপরতার প্রেক্ষিতে র্যাব–১৫, কক্সবাজার সশস্ত্র ডাকাত দলের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তার প্রচেষ্টার পাশাপাশি তাদের অস্ত্রের উৎস খুঁজে বের করতে অনুসন্ধানে নামে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব–১৫ জানতে পারে যে, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন স্থল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুর্গম চিলখালির জনবসতিহীন সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় অবস্থান করে একটি চক্র টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন ডাকাত দলের নিকট আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, দেশীয় অস্ত্রসহ ডাকাতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী নিয়মিত ভাড়া দিয়ে থাকে।
র্যাব জানায়, এক ঘণ্টার পায়ে হাঁটা পথ ব্যতীত সেখানে যাওয়ার আর কোনো স্থলপথ নেই। আশেপাশে ১/২ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে অপরিচিত কোনো মানুষ ঢুকলেই ডাকাতদের নিযুক্ত চেকারদের মাধ্যমে তাদের কাছে তথ্য চলে যায় এবং তখন তারা গা ঢাকা দিয়ে দেয়। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে র্যাব–১৫, কক্সবাজার এর সিপিএসসি এর একটি দল উক্ত চক্রটিকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ভিন্ন কৌশলে অভিযান চালায়। এ সময় চক্রটির ৭ অস্ত্রধারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুল জব্বার র্যাবের এই অভিযান পরবর্তী থানায় মামলা রুজুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।












