চট্টগ্রামে ব্রেইনের চিকিৎসায় অভাবনীয় এক সাফল্যের দেখা মিলেছে। চট্টগ্রামের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ব্রেইনের এনজিওগ্রাম করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে এই এনজিওগ্রাম করা হয়। দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে কষ্টে থাকা একজন রোগীর ব্রেইনে সফলভাবে এনজিওগ্রামসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্রেইন এর চিকিৎসায় সর্বাধুনিক সংযোজন হচ্ছে ব্রেইন এনজিওগ্রাম (ডিএসএ)। অনেকটা হৃদরোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের করা এনজিওগ্রাম এর মতো ব্রেইনের এনজিওগ্রাম করা হয়। ব্রেইন স্ট্রোক, ব্রেইন এনিউরিজম, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ, এভিএম, ব্রেইন টিউমারসহ ব্রেইন এবং মেরুদন্ডের বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসায় এই বিশেষ চিকিৎসা দেয়া হয়। উন্নত বিশ্বে এটি আরো আগ থেকে চলে আসলেও চট্টগ্রামবাসী এর থেকে বঞ্চিত ছিল। অবশেষে চট্টগ্রাম মা–ও–শিশু হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের ক্যাথল্যাবে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের উদ্যোগে প্রথম এই চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। গত ১৯ জুন দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে বমি, বমির ভাব, মাথা ব্যাথা, অত্যাধিক শারীরিক দুর্বলতায় ভুগতে থাকা ৯ বছর বয়সী এক শিশুর সফল ভাবে ডি এস এ (Digital Substract Angiograph) সম্পন্ন করা হয়। বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও ইন্টারভ্যানশনাল কার্ডিওলজিস্ট চট্টগ্রাম মা–ও–শিশু হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আবু তারেক ইকবাল ও নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মঈনউদ্দিন মাহমুদ ইলিয়াছ (বাবু) রোগীকে উপরোক্ত চিকিৎসা প্রদান করেন। চিকিৎসা প্রদানের পর রোগী সুস্থ হয়ে ইতোমধ্যে বাড়ি ফিরে গেছেন।
চট্টগ্রাম মা–ও–শিশু হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির জেনারেল সেক্রেটারী মোহাম্মদ রেজাউল করিম আজাদ বলেছেন, চট্টগ্রামের চিকিৎসা সেবায় আমাদের এই অর্জন একটি নতুন মাইলফলক। এতোদিন চট্টগ্রামের মানুষ আধুনিক এই চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। তিনি এখন থেকে ব্রেইন স্ট্রোক, ব্রেইন টিউমার, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ, ব্রেইন সার্জারি, প্যারালাইসিস ও মেরুদন্ডের সকল প্রকার রোগের জন্য ছুটির দিনসহ সপ্তাহের সাতদিনই সার্বক্ষণিকভাবে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে যোগাযোগের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি জনগণের টাকায় গড়ে উঠা জনগণের এই হাসপাতালে স্বল্পমূল্যে সর্বাধুনিক এই চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হবে বলেও এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন।