তেইশ সালে ২৩ লাখ গাছ লাগাবে জেলা প্রশাসন

আজাদী প্রতিবেদন

কর্মসূচি উদ্বোধন করলেন ফজলে করিম | রবিবার , ১১ জুন, ২০২৩ at ৫:১০ পূর্বাহ্ণ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বৃক্ষরোপণ সপ্তাহে চট্টগ্রামে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসনের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় ২৩ সালে ২৩ লাখ বৃক্ষরোপণ করব। এতে বিভিন্ন ধরনের বনজ, ফলজ, ভেষজ ও নান্দনিক বৃক্ষরোপণ হবে।’

চট্টগ্রামজুড়ে ‘তেইশ সালে তেইশ লাখ’ গাছ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সংক্রান্ত এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। গতকাল বিকাল ৩টায় নগরীর সার্কিট হাউসে এ ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সাড়ে তিনটায় সার্কিট হাউস প্রাঙ্গণে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন রাউজানের এমপি ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। জেলা প্রশাসক বলেন, প্রতি বছরই কারণেঅকারণে প্রচুর গাছ কাটা হয়, রোপণ করা হয়, কিন্তু পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। অনিয়ন্ত্রিত বন ব্যবস্থাপনা, অবাধে বৃক্ষ নিধন ও বন উজাড়ের কারণে বন ও বনজ সম্পদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে। অবাধে বৃক্ষ নিধনে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন। তাই অযাচিত বৃক্ষ নিধন রোধে জেলা প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি বলেন, স্কুলকলেজের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একটি করে গাছের চারা দেয়া হবে। তারা সেগুলো লাগাবে, আবার তারাই পরিচর্যা করে বড় করে তুলবে। সেটি করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেম তৈরি হবে।

সার্কিট হাউসের ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, আমাদের এই কর্মসূচিতে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আজকের শিক্ষার্থীরাই ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশের নাগরিক। তাই আগামীতে পরিবেশ রক্ষায় তারাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে গণভবণে বৃক্ষরোপণের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণ করতে এবং কমপক্ষে ৩টি গাছ লাগানোর উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জেলার ১৫টি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কমপক্ষে ১০ হাজার করে মোট ২১ লাখ ১ হাজার এবং নগরীর ৬টি রাজস্ব সার্কেলে মোট ২ লাখ ৭৮ হাজার (সর্বমোট ২৩ লাখ ৭৯ হাজার) বিভিন্ন ধরনের বনজ, ফলজ, ভেষজ ও নান্দনিক বৃক্ষরোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের অনন্য এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘২৩ সালে ২৩ লাখ’। এর আওতায় ২০২৩ সালের মধ্যে ২৩ লাখ বিভিন্ন ধরনের বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

কোথায় কোথায় এসব গাছ লাগানো হবে সে বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, সরকারি খাস জায়গা, আশ্রয়ণ কেন্দ্রের খালি জায়গা, নদীর পাড়, সড়কের দুপাশে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠের চারপাশে, পতিত জমি, জনগণের বসতবাড়ি ও বিভিন্ন সরকারিবেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন গাছের নামে চট্টগ্রামের যে সকল স্থান রয়েছে, যেমন আমবাগান, কদমতলী, বটতলী, নিমতলা, সে স্থানে সেই গাছ লাগানো হবে যাতে ওই স্থানের নামের সার্থকতা ফিরে আসে।

বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরসংস্থা ও এনজিওর সাথে সমন্বয় করে এই কর্মসূচি পরিচালনা করবে জেলা প্রশাসন উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক আরো বলেন, এই কর্মসূচির সাথে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ সর্বস্তরের মানুষ সম্পৃক্ত থাকবেন।

এ সময় রাউজানের উপজেলা চেয়ারম্যান এহছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাকিব হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) আবু রায়হান দোলন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম, কাট্টলী সার্কেলের এসিল্যান্ড ওমর ফারুক ও জেলা প্রশাসকের স্ট্যাফ অফিসার প্লাবন কুমার বিশ্বাস। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে এমপি ও জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা নগরীর বটতলী এবং আমবাগান এলাকায় যান। সেখানে বট গাছ, আম গাছসহ নানা প্রজাতির গাছ লাগানো হয়। এরপর জেলা প্রশাসক ফৌজদারহাটের ডিসি পার্কে যান এবং নানা প্রজাতির ১০ হাজার বৃক্ষরোপন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউখিয়ায় আগ্নেয়াস্ত্র ও ওয়াকিটকিসহ রোহিঙ্গা যুবক গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপি অগ্নিসন্ত্রাস করতে জামায়াতকে মাঠে নামিয়েছে : কাদের