গরমের কারণে ফুটবলে কুলিং ব্রেক নামে একটি বিরতি চালু করা হয়েছিল অনেক আগেই। ক্রিকেটে তেমন নির্দিষ্ট কোন বিরতি চালু না হলেও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সে ধরনের বিরতি চালুর অনুরোধ আসে নানা সময়। এবারে যেমন নিজেদের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে এ ধরনের বিরতি প্রদানের পরামর্শ দিয়েছেন খোদ বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ টৌধুরী। কয়েক দিন ধরে প্রচন্ড গরমের সঙ্গে লড়াই করেই চলছে ক্রিকেটারদের অনুশীলন। অনুশীলনে তবু নিজেদের মতো করে চালানোর সুযোগ আছে। প্রয়োজনমত থাকে পানি পানের বিরতি। কিন্তু ম্যাচ চলাকালে নির্ধারিত সময়ের আগে কোনো বিরতির সুযোগ নেই। টেস্ট ম্যাচের আগে এমন অসহনীয় গরম সংশ্লিষ্ট সবার জন্যই বড় ভাবনার জায়গা। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী যেমন সম্ভাব্য করণীয় ভেবে রেখেছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে পানি পানের বিরতি বাড়ানোর পরামর্শ তার। পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচে সাধারণত দিনের খেলায় দুই ঘণ্টা পরপর থাকে সেশন বিরতি। আর প্রতি সেশনে এক ঘণ্টা পরপর দেওয়া হয় পানি পানের বিরতি। গরমের প্রচন্ডতার কারনে আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে পানি পানের বিরতি বাড়ানোর কথা বলছেন বিসিবি চিকিৎসক।
গতকাল তিনি সাংবাদিকদের বলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ‘ দলের বিপক্ষে যে সিরিজটি চলছে এখন সিলেটে সেখানে দুই দলের সম্মতির ভিত্তিতে আমরা বিরতির সংখ্যা বাড়িয়েছিলাম। টেস্ট ম্যাচেও এমন হবে কি না, সেটি ম্যাচ রেফারি অথবা দলের সঙ্গে কথা বলে একটা ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু ক্রিকেটারদের স্বাস্থ্যগত দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা চাইব বিরতির সংখ্যা বাড়ানোর জন্য। অথবা কোনো ক্রিকেটার যখনই পানি বা ছায়ার জন্য ডাকবে, ওদের জন্য এই ছাড়টা যেন দেওয়া হয়। গত বেশ কিছু দিন ধরে সারা দেশে চলছে তাপদাহ। আগামী আরও এক–দেড় সপ্তাহ এই অবস্থা অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যেই চলছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অনুশীলন।
এমন দাবদাহে ক্রিকেটারদের স্বাস্থ্যকে ভাবনায় রেখে কিছু ছাড় দিয়ে রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। যার যতটুকু স্বচ্ছন্দ্য মনে হচ্ছে, ততটুকুই ব্যাটিং–বোলিং করছেন ক্রিকেটাররা। রানিং ও ফিটনেস সেশনে বাড়তি জোর দেওয়া হলেও সেটি বিসিবির চিকিৎসা বিভাগের সুনির্ধারিত নিয়মের মধ্যেই চলছে। উচ্চ তাপমাত্রার পাশাপাশি বাতাসের আর্দ্রতার কারণে শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই ক্রিকেটারদের শরীরকে প্রস্তুত করার জন্য অনুশীলনের আগের সময়ের মতো পরের সময়েও সমান জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দেবাশিষ।
ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে আমরা ডিহাইড্রেশন প্রিভেন্ট করার জন্য প্রিহাইড্রেশন করতে বলি। অর্থাৎ খেলার আগের দিন থেকেই নিজেদের হাইড্রেশনের অবস্থাটা ধরে রাখতে হবে। এখন সূর্যের যে সরাসরি তাপ সেটা কমানোর জন্য আমরা সুযোগ পেলেই ঘন ঘন বিরতির ব্যবস্থা করি। ওই সময় ছায়া বা বড় ছাতার নিচে ওদের থাকতে বলি। বিরতির সময় ওদের হাইড্রেশন দেখা হয়। ঠন্ডা পানি দিয়ে ওদের সারা শরীরের অনাবৃত স্থানগুলো মুছে দেওয়া হয়। যখনই ওরা ভেতরে চলে আসে, তখনই আমরা শরীরের বিশেষ বিশেষ জায়গায় আমরা বরফ দিয়ে থাকি। বরফ দেওয়ার মাধ্যমে শরীরের ভেতরের তাপটাকে আমরা কমানোর চেষ্টা করি। এছাড়া আইস বাথেরও ব্যবস্থা আছে। অনুশীলন বা খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও কেন শরীরের সমান যত্ন নিতে হবে, সেটিও ব্যাখ্যা করেছেন এই চিকিৎসক।