উৎপত্তিস্থলের গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার

৪.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল ঢাকা

আজাদী ডেস্ক | শনিবার , ৬ মে, ২০২৩ at ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ

ছুটির দিনের সকালে রাজধানীবাসীর ঘুম ভাঙিয়েছে ভূমিকম্পের কাঁপুনি, যা অনুভূত হয়েছে আশপাশের অন্যান্য জেলাতেও। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় গতকাল শুক্রবার ভোর ৫টা ৫৭ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩।

ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র ছিল ঢাকার দোহার থেকে ১৪.২ কিলোমিটার পূর্ব দক্ষিণপূর্বে, ঢাকার আজিমপুর থেকে ২৩.৪ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণপশ্চিমে এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে ২৪.৭ কিলোমিটার পশ্চিম দক্ষিণপশ্চিমে। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ দশমিক কিলোমিটার গভীরে। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা জানান, ঢাকার ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে দোহার এলাকায় এ ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়।

অন্যান্যবার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের গভীরতা ৩০৪০ কিলোমিটার হলেও এবার ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার। ভূতত্ববিদরা বলছেন, ভূমিকম্পটি ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে হওয়ায় এ নিয়ে কিছুটা চিন্তিত তারা।

এই ভূমিকম্পের বৈশিষ্ট্য উৎপত্তিস্থল ঢাকা শহরের খুব কাছে এবং ভূপৃষ্ঠের খুব কাছাকাছি। সব মিলিয়ে এই পরিস্থিতিতে ঢাকার কী ধরনের ঝুঁকি রয়েছে এবং তা মোকাবিলায় করণীয় সম্পর্কে জানতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, এটি খুবই সাধারণ বিষয়। বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার কাছে অবস্থিত। কিন্তু আমাদের এই এরিয়াটা একেবারে কাছে না, একটু দূরে আছে। এখানে ছোটখাটো ভূমিকম্প প্রায়ই হয়। ঢাকার আশপাশে এ রকম ৩৪ বা ৫ মাত্রার অনেক ভূমিকম্প হয়েছে। এ রকম ছিল সকালের ভূমিকম্প।

তিনি বলেন, এগুলো ছোটখাটো উৎস থেকে হয়। আমরা মনে করতে পারি, পদ্মা নদীর আশেপাশে যেহেতু একটি লিনিয়ার স্ট্রাকচার আছে, এখানে হয়তো কোনো ফল্ট আছে। এই ফল্টে বা সংযোগস্থলে হয়তো এই ভূমিকম্প হয়েছে। এতে আতঙ্কের কিছু নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুব্রত কুমার সাহা বলেন, আজকের ভূমিকম্প নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। এ রকম ভূমিকম্প প্রায়ই হয়। তবে রিখটার স্কেলে কম মাত্রার এসব ভূমিকম্পে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, রিখটার স্কেলে মাত্রা বেশি এমন ভূমিকম্পে বড় ধরনের ঝুঁকি আছে ঢাকার। এজন্য আমরা সবাইকে সতর্ক করছি। একইসঙ্গে ভবন তৈরির ক্ষেত্রে সকল নিয়ম মেনে ভূমিকম্প সহনীয় করে নির্মাণ করলে ঝুঁকিমুক্ত থাকা যায়।

এদিকে ভোরবেলা কাঁপুনিতে ঘুম ভেঙে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে মৃদু এ ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক। এর আগে গত ২৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের তারাবো এলাকায় ৩ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্বের অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ূন আখতার জানান, ২০০৮ থেকে ২০১০ সালের দিকে ঢাকার কাছাকাছি কুমিল্লা অঞ্চলে ৪.২ থেকে ৪.৫ মাত্রার কয়েকটি ভূমিকম্পের রেকর্ড রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙামাটির দুর্গম এলাকায় হাহাকার
পরবর্তী নিবন্ধএয়ার কন্ডিশনার ফেব্রিক্সসহ ৭৬ লট পণ্যের নিলাম মঙ্গলবার