ইউক্রেইনের পর এবার যুক্তরাষ্ট্রের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে রাশিয়া বলেছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারি বাসভবনে ড্রোন হামলার পেছনে ওয়াশিংটনের হাত রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মস্কোর দুর্গ সদৃশ ক্রেমলিনের গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্যালেসে থাকেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেখানেই গতকাল বুধবার ভোররাতের দিকে দু’টি ড্রোন আঘাত হানে বলে পুতিনের দপ্তরের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করে রাশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা রিয়া নোভোস্তি।
ক্রেমলিন একে ‘পরিকল্পিত সন্ত্রাসী তৎপরতা’ বলে উল্লেখ করে ইউক্রেইন ওই হামলা চালিয়েছে বলে তৎক্ষণাৎ অভিযোগ করে বলেছিল, প্রেসিডেন্ট পুতিনকে হত্যা করাই ছিল ওই হামলার উদ্দেশ্য।
ইউক্রেইন ওই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এ সবই রাশিয়ার নাটক।
ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পরদিন এবার ক্রেমলিন প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে আঙুল তুলেছে যদিও এবারও তারা তাদের বক্তব্যের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ আজ বৃহস্পতিবার (৪ মে) বলেন, “কিইভ এবং ওয়াশিংটন উভয়েরই এ ঘটনার দায় অস্বীকার করার প্রচেষ্টা নিশ্চিতভাবেই ভীষণ হাস্যকর। আমরা ভালো করেই জানি এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সিদ্ধান্ত কোথা থেকে আসে। এই ধরনের সন্ত্রাসী হামলার সিদ্ধান্ত কিইভ নয় বরং ওয়াশিংটন থেকে নেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রই যে এই হামলার পেছনে সেই বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।”
ক্রেমলিনে ড্রোন হামলার বেশ কয়েকটি ভিডিও সামনে এসেছে। সেগুলোর একটিতে দেখা যায়, গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্যালেসের দিকে একটি ড্রোন উড়ে যাচ্ছে এবং পরক্ষণেই সেটির বিস্ফোরণে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।
আরেকটি ভিডিওতে ক্রেমলিন দুর্গের উপর থেকে আগুন ও ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। তবে সেটি আসলে ড্রোন ছিল কি না কিংবা ড্রোন হামলার কথা বলা হলেও আসলে ঠিক কী ঘটেছে সেটি স্পষ্ট নয়।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, ক্রেমলিনের দাবি যদি সত্যি হয়, আর পুতিনকে হত্যাই যদি এর আসল উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তবে তা ক্রেমলিনের জন্য সত্যিই চরম বিব্রতকর।
ওই হামলার বিষয়ে পেসকভ আরো বলেন, “ওয়াশিংটন প্রায়শই ইউক্রেইন কোথায় এবং কীভাবে হামলা করবে তা ঠিক করে দেয়।প্রায়শই সমুদ্রের ওপার থেকে হামলার নির্দেশনা আসে। আমরা এটা খুব ভালো করেই জানি এবং এ বিষয়ে সচেতনও থাকি…ওয়াশিংটনে তাদের অবশ্যই এটি খুব পরিষ্কারভাবে বোঝা উচিত যে আমরা এটা জানি।”
রাশিয়া ইদানিং আরো ঘন ঘনই বলছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেইন যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণকারীদের একজন বলেই বিবেচনা করে।
রাশিয়া বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে কৌশলগতভাবে পরাজিত করতে চায়।
যুক্তরাষ্ট্র এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য ইউক্রেইনকে অস্ত্র দিচ্ছে এবং ১৪ মাসেরও বেশি সময়ের যুদ্ধে মস্কো অবৈধভাবে ইউক্রেইনের যেসব অঞ্চল দখল করেছে তা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করছে।