উদাসীনতায় যেন অতিবাহিত না হয় রোজার মাস

আ ব ম খোরশিদ আলম খান | সোমবার , ১০ এপ্রিল, ২০২৩ at ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ

আল্লাহ্‌র ইবাদতবন্দেগিতে আত্মনিবেদিত হলে এবং মানুষের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সচেষ্ট হলে অবশ্যই জীবন হয়ে উঠবে পুণ্যময় ও সার্থক। জীবনের পূর্ণতা, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য সময়ের মূল্যায়ন করতে হবে।

অনেকেই বুড়ো বয়সে অবসর সময়ে আল্লাহকে অধিক পরিমাণে ডাকবো, নামাজরোজাদানসদকা, সৎ কাজে তখন খুব মনোযোগী হবোএমনটা বলে থাকেন। এটা কখনো সঠিক নয়। কারণ আগামী রোজা পর্যন্ত আপনি সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকবেন বা আদৌ বাঁচবেন কিনা সেই নিশ্চয়তা যেমন নেই, তেমনি হাতে যার যেটুকু সময় আছেসময়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে জীবনকে পুণ্যময় ও কীর্তিময় করে তোলার চেষ্টায় এখন থেকেই পূর্ণ মনোযোগ দেওয়াই হচ্ছে সুবিবেচনা এবং বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত। জগতে যারা জ্ঞানী, গুণী, মনীষী, আল্ল্লাহর ওলী ও সাধক ব্যক্তিত্বকে আমরা দেখি তাদের সকলেই সময়কে কাজে লাগিয়ে আজ কীর্তিমান, শ্রদ্ধার আসনে আসীন। আমাদের বড় পীর গাউসুল আজম হযরত সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী () রমজানের প্রতিদিনই কুরআন শরিফের পূর্ণ খতম দিতেন। ৩০ পারা কুরআন মজিদের খতম দেওয়া সহজ কাজ নয়, খুবই সময় ও ধৈর্যসাপেক্ষ। আর প্রতিদিন এভাবে কঠিন ধৈর্যনিষ্ঠার সাথে আল্ল্লাহর ইবাদতে রত থেকে, নিবিষ্ট পড়াশোনা, ইলমে দ্বীন চর্চা ও আল্লাহর সৃষ্টিজগতের রহস্য সন্ধানে মগ্ন থেকে তিনি জগতবাসীর কাছে হয়ে উঠলেন গাউসুল আজম বা বড়পীরের মতো মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তিত্বে। যারা আল্ল্লাহ্‌র ওলী, সাধকজ্ঞানীমনীষী সবার সাফল্য ও শ্রেষ্ঠত্বের পেছনে বড় কারণ এই যে, তাঁরা সময়কে কাজে লাগিয়েছেন, স্রষ্টার ধ্যানে, সৃষ্টির প্রতি কর্তব্য পালনে তাঁরা আত্মনিবেদিত বলেই যুগ যুগ ধরে মানুষ তাঁদের স্মরণ করে শ্রদ্ধায়, ভালবাসায়। মাহে রমজানের পুণ্যময় মুহূর্তগুলোকে ইবাদতেসাধনায়পরকল্যাণে অতিবাহিত করার মধ্য দিয়ে আল্ল্লাহর কাছে যে প্রতিদান মিলবে তা বছরের অন্য সময়ের চেয়ে অতুলনীয়। একটি পুণ্যকর্মের বিনিময় বা প্রতিদান এ মাসে সত্তর গুণ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বর্ধিত হয়। তাই, অযথা সময় নষ্ট না করে, সময়ের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে সকলকে আল্ল্লাহর ইবাদতে ও সৎ কাজে অগ্রসর হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে যেতে হবে রোজার দিনগুলোতে। মনে রাখতে হবে মানুষের সামনে যে সুযোগ ও সময় আছে তা ক্ষণিকের জন্য। রোজার মাসটি যাতে উদাসীনতায় অতিবাহিত হতে না পারেএ ব্যাপারে আমাদের সক্রিয়তা জরুরি।

রোজার মাধ্যমে দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তা ও কর্মের ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন সূচিত হয় তাতে আগামী দিনগুলোও যেন সুন্দর, সার্থক, বর্ণিল হয় সে চেষ্টাই করে যেতে হবে আমাদের। তবেই রোজার সার্থকতা আসবে। সিয়াম সাধনার উসিলায় সুন্দর আগামীর ও আত্মনির্মাণের পথ তৈরির সুযোগের জন্য মহান রবের কাছে তৌফিক চাই বিনম্রআকুতিতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরের ৫ মার্কেটের ভূ-গর্ভে জলাধার চায় ফায়ার সার্ভিস
পরবর্তী নিবন্ধতীব্র গরম, মানুষের কষ্ট