গণতন্ত্র ‘পুনরুদ্ধারে’ ১০ দফা দাবিতে ঢাকার বাড্ডা থেকে মালিবাগের আবুল হোটেল পর্যন্ত সোয়া চার কিলোমিটার পথ ‘নীরব পথযাত্রা’ করেছে বিএনপি। গতকাল শনিবার দুপুর আড়াইটায় বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ারের সামনের সড়ক থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে বিকাল ৪টার দিকে মালিবাগ আবুল হোটেলের সামনে এসে শেষ হয়। নেতাকর্মীদের হাতে ছিলো সরকার পদত্যাগ, দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদী স্লোগান সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড এবং জাতীয় ও দলীয় পতাকা। তবে তাদের কণ্ঠে ছিল না কোনো স্লোগান। খবর বিডিনিউজের।
এ পথযাত্রা কর্মসূচির উদ্বোধন করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে আমরা এক নতুন আন্দোলন শুরু করলাম। এই সংগ্রামের মধ্যে ঢাকা শহরে এই নীরব যাত্রার মধ্য দিয়ে, এই নীরব প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে সরে যেতে বাধ্য করব। আসুন, এই পদযাত্রার মধ্য দিয়ে এই সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই– আর কাল বিলম্ব না করে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন; তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন এবং নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে তার ভোটের অধিকার প্রয়োগ করবার ক্ষমতা দিন।
দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের চালের দাম বেড়ে গেছে, আমাদের ডালের দাম বাড়ছে, আমাদের ডিমের দাম বেড়ে গেছে, তেলের দাম বেড়েছে, লবণের দাম বেড়ে গেছে। এই যে রিকশা–শ্রমিক ভাইয়েরা, কারখানার শ্রমিক ভাইয়েরা তারা এখন জীবন–যাপন করতে পারছে না। তারা চাল–ডাল–তেল লবণ কিনতে পারছে না। বাচ্চাদের ডিম দিতে পারছে না। শুধু তাই নয়, আজকে কথা বলতে গেলে গ্রেপ্তার করা হয়, প্রতিবাদ করতে গেলে মামলা হয়, মিথ্যা মামলা–গায়েবি মামলা দিয়ে সমস্ত বিরোধী দলকে আটক করে রাখা হচ্ছে। সমগ্র দেশকে এরা (সরকার) একটা কারাগারে পরিণত করেছে। আমরা কী এটা মেনে নেব?
বিএনপি মহাসচিব প্রশ্ন রেখে বলেন, আমাদের ভোটের অধিকার কি আছে? আমাদের ভোটের অধিকার নাই। সেই অধিকার আমাদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে, আমাদেরকে কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিনি এদেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন–লড়াই করেছেন, এখনও যিনি গৃহবন্দি হয়ে আছেন, তাকে মুক্তি করবার জন্য। আমাদের নেতা তারেক রহমান তিনি মিথ্যা মামলায় সুদূরে নির্বাসিত হয়ে আছেন, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের ৩৫ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা তাকে প্রত্যাহার করতে হবে, যারা কারাগারে আছেন তাদেরকে মুক্ত করতে হবে, দেশে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনো দিন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সেই কারণে আওয়ামী লীগ সরকারকে, শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, এই সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে।