শিশু-কিশোররা মুগ্ধ উৎফুল্ল অভিভাবকরা

ফুলকির সাংস্কৃতিক উৎসব উদ্বোধন

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২০ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৩৮ পূর্বাহ্ণ

ফুলকির আয়োজনে তিন দিনব্যাপী শিশুকিশোর সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধন হয়েছে। গতকাল বিকেল সাড়ে তিনটায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন ছড়াকার ও শিশু সাহিত্যিক সুকুমার বড়ুয়া। আজ (শুক্রবার) সকালে শিশুকিশোর সমাবেশে অতিথি থাকবেন সাহিত্যিক ও কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক। প্রথম দিনে গতকাল বিকেল সাড়ে ৩ টায় ফুলকির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ব্রতচারী নৃত্যের (কাঠিনৃত্য ও রায়বেঁশে নৃত্য) মাধ্যমে শুরু হয় উৎসব। কারাতে পরিবেশনা, উদ্বোধনী সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনের পর ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়ার ছড়া থেকে আবৃত্তি করে খুদে শিক্ষার্থীরা। এসময় সুকুমার বড়ুয়াকে ফুল ও উপহার দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। পরে বিজ্ঞানভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, ফুলকির চারুকলার শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবির প্রদর্শনী এবং সন্ধ্যায় নাট্যপালা ‘বক বধ’ মঞ্চায়নের মাধ্যমে প্রথম দিনের আয়োজন শেষ হয়। উৎসব শুরুর আগে থেকেই শিশুকিশোর ও অভিভাবকদের ভিড় বাড়তে শুরু করে শিল্পকলা একাডেমিতে।

নিজেদের সমবয়সীদের অংশগ্রহণে নৃত্যগানসহ বিভিন্ন পরিবেশনায় মুগ্ধ হতে দেখা যায় শিশুকিশোরদের। অভিভাবকদেরও উৎফুল্ল হতে দেখা যায়। আয়োজকরা জানান, তিনদিনের এ উৎসবে আজ (শুক্রবার) শিশু সমাবেশ, নাটক, পাপেট শো, চিত্র প্রদর্শনী, শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজন রয়েছে। শেষ দিন (শনিবার) জাদু প্রদর্শনী উপভোগ ছাড়াও বাঁশি, তালপাখা, শীতল পাটি, ছাপচিত্র, ক্র্যাফট ও মাটি দিয়ে তৈরি জিনিসপত্রের কর্মশালায়ও অংশ নেবে শিশুকিশোররা। ৯ থেকে ১৬ বছরের সকল শিশুকিশোর নিবন্ধনের মাধ্যমে এ কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। নন্দনকাননের ফুলকি প্রাঙ্গণে নিবন্ধন করা যাবে। এছাড়া কর্মশালার দিন (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে দশটা পর্যন্ত জেলা শিল্পকলা একাডেমির উৎসব প্রাঙ্গণেও নিবন্ধনের সুযোগ রয়েছে। আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও জাদু প্রদর্শনের মাধ্যমে এ উৎসবের শেষ হবে।

উদ্বোধনকালে ছড়াকার ও শিশু সাহিত্যিক সুকুমার বড়ুয়া বলেন, ১৯৫০ সালের পর থেকে চট্টগ্রামের নালাপাড়া এলাকায় বিভিন্ন পূজা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান, নাচ ও যাত্রা দেখা যেত। প্রায় ৭২ বছর পর সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে অনেকটাই। যে সকল অভিভাবক শিশুদের এখনও সাংস্কৃতিক কাজে অনুপ্রেরণা দেন তাদের সাধুবাদ জানান তিনি।

সাহিত্যিক ও ফুলকির সভাপতি আবুল মোমেন বলেন, শিশুদেরকে নম্বর দিয়ে বিবেচনা করা যায় না। শুধুমাত্র পাঠ্যবই ও পরীক্ষাকেন্দ্রিক শিক্ষা দিয়ে জ্ঞান অর্জন সম্ভব নয়। শিশুদের শিক্ষার পরিবেশ হতে হবে আনন্দময়। তাদেরকে সাংস্কৃতিক কাজে যুক্ত করতে হবে। সরকার নতুন শিক্ষাক্রমে সে প্রকল্প নিয়েছে। ফুলকি শুরু থেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি সৃজনশীল শিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ফুলকির সর্বাধ্যক্ষা শীলা মোমেন বলেন, যে সকল গুণীজনদের লিখা পড়ে শিশুরা বড় হচ্ছে, এই উৎসবের মাধ্যমে তারা সেসব লেখকদের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। সত্যিকার বড় মানুষদের তারা চিনতে শিখছে। শৈশবের স্মৃতিগুলোই শিশুদের বড় হতে সহায়তা করে। শিশুদের শৈশব হতে হবে আনন্দময়। তাদের কৈশোর হতে হবে ফুটন্ত ফুলের মত। স্বাধীনভাবে তাদের বেড়ে উঠতে না দিলে তাদের সৃজনশীল বিকাশ হবে না। সৃজনশীল কাজে শিশুরা জ্ঞানে, মেধায়, শরীরে, মননে ও চিন্তায় বাড়বে।

অনুষ্ঠানে সুকুমার বড়ুয়াকে নিয়ে ছড়া নিবেদন করেন সাংবাদিক ও ফুলকির সম্পাদক ওমর কায়সার। ফুলকির অধ্যক্ষা সৈয়দা খুরশীদা বেগম উপস্থিত অভিভাবক, শিক্ষক, অতিথি ও শিক্ষার্থীদের প্রতি শুভেচ্ছা জানান। উৎসবের বাকি দিন গুলোতেও সকলকে উপস্থিত থকার আমন্ত্রণ জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবন্দরের সাবেক কর্মকর্তার ফ্ল্যাটে দুর্ধর্ষ চুরি
পরবর্তী নিবন্ধসাকিব-ইফতেখারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে জয় বরিশালের