পৌষের সকাল। ভোর থেকে সূর্যের সে কী প্রাণান্তকর প্রয়াস! তাপ দিয়ে ঝলসে দিতে চায় পৃথিবীকে। কিন্তু কুয়াশা প্রাচীর হয়ে বুঝিয়ে দিল সূর্যই চূড়ান্ত শক্তির আধার নয়। আবার প্রাণিকূলের হাড় কাঁপানোর কৃতিত্ব নিয়ে যখন মাঘ ভাবে সেইই সেরা তখন ফাগুন হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে যেতে তার দর্প চূর্ণ হয়ে যায়। অতঃপর গাছপালায় নবীন পাতাদের কচি সবুজ নিয়ে দুলতে দেখে মুক হয়ে থাকা কোকিল যখন মুখরিত হয়ে ওঠে বসন্তের বুকে তখন রঙ ছড়ানোর উচ্ছাস।
রাজ্যের অহংকার নিয়ে সে ভাবে -আমিই তো ঋতুরাজ। কোকিকের কুহুতানের মাঝেই পৃথিবী যখন সূর্যের দিকে হেলে যায় তখন বসন্তের সাজানো বাগানকে বিবর্ণ করে দিয়ে দাপুটে হয় গ্রীষ্ম। নদ-নদী,খাল-বিল শুকিয়ে রুক্ষ হয়ে যাওয়া প্রকৃতির রূপ দেখে যখন বাংলার কবি লিখেন- ‘ঘাম ঝরে দরদর গ্রীষ্মের দুপুরে, খাল-বিল চৌচির জল নেই পুকুরে।’
তখন ঝুপ ঝুপ করে বর্ষা এসে গ্রীষ্মের তপ্ততাকে মিটিয়ে দিয়ে বলে অহংকার ঋতুদের নয় বরং ষড় ঋতুর বিভাজনকারী মহান স্রষ্টার।