কনকনে শীতে কাঁপছে নগরবাসী। এই শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষকে। অনেকের গায়ে গরম কাপড় নেই। নগরীর বিভিন্ন সড়কের ফুটপাতে পলিথিন মুড়িয়ে বানিয়েছে অস্থায়ী ঘর। সেখানে গাদাগাদি করে থাকছে চার পাঁচজন। এরমধ্যে শিশু ও বয়ষ্কও রয়েছে। শীত থেকে বাঁচতে অনেকে রাস্তার পাশে কাগজ পুড়িয়ে নিচ্ছে উষ্ণতা। এটি গত কয়েকদিনের নিয়মিত চিত্র।
গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে চেরাগী পাহাড় এলাকায় কথা হয় হোসেন আলী নামের এক ভিক্ষুকের সাথে। গায়ে কম্বল জড়িয়ে তিনি ভিক্ষা করছেন। শীতের প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, দুইদিন আগে এক লোক তাকে কম্বলটি দিয়েছেন। চট্টগ্রাম রেল স্টেশন ও বদনা শাহ মাজার এলাকায় রাত কাটে তার। এদিকে নগরীতে সবচেয়ে বেশি ভাসমান মানুষ দেখা যায়, রেল স্টেশন এলাকায়। তাদের জীবনটাই যেন যেখানে রাত, সেখানে কাঁত। গতকাল রাতে দেখা যায়, শাহেদা আকতার নামের এক নারী তিন বছর বয়সী বাচ্চাকে শাড়ির আঁচলে মুড়িয়ে বসে আছেন স্টেশন রোডের ব্রিজের নিচে। শীতে যে তিনি কাঁপছেন সেটি স্পষ্টত দেখা যায়। জানতে চাইলে বলেন, শীত লাগলেও কি আর করার আছে বলেন। গরম কাপড় তো আর পাই না। তাই রাত একটু বাড়লে আগুন জ্বালিয়ে গরম নিতে হয়।
নগরীর দেওয়ান হাট মোড়ের ফ্লাইওভারের নিচে একসঙ্গে বসে আছেন ১০–১২ জন ভাসমান মানুষ। শীতের ঝাপ্টায় তাদের অবস্থা খুব বেগতিক। সাধারণত মোড়ে টেম্পু থেকে যাত্রীরা নামলে তাদের কাছ থেকে ভিক্ষা নিয়েই জীবন চলে তাদের। এদেরই একজন নুর হোসেন বলেন, সারাদিন ভিক্ষা করে ২০০–৩০০ টাকা পাওয়া যায়। সেগুলো খাওয়া খরচে শেষ হয়ে যায়। তাই চাইলে শীতের কাপড় কেনা যায় না। শীত থেকে গত তিনদিন আগে তার জ্বর হয়েছে। এখন জ্বর সারলেও কাঁশি বেড়েছে বলে জানান তিনি।
নগরীর কাজীর দেউড়ি শিশু পার্কের দেয়াল ঘেঁষে বসবাস করছেন ১০–১৫ জনের ভাসমান মানুষ। এরমধ্যে ষাটোর্ধ্ব নারীও রয়েছেন। কনকনে হিমশীতল বাতাসে জীবন যায় যায় অবস্থা। এদের কারো গায়ে কম্বল নেই।