রাঙ্গুনিয়ায় চাঞ্চল্যকর প্রবাসী ইউসুফ আলী হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আবু তালেবকে (৩৮) কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
আজ সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৫ এ আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। আবু তালেব উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের বগাবিলি গ্রামের নবীর হোসেনের ছেলে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বগাবিলি গ্রামে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নিহত হয়েছিলেন ইউপি সদস্য পদে বিজয়ী আবু তৈয়বের বড় ভাই প্রবাসী ইউসুফ আলী। আবু তালেব এই মামলার অন্যতম আসামি এবং মামলার মূল আসামি আজগরের ভাই।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এসইউএম নুরুল ইসলাম জানান, ইউসুফ আলীর ওপর নৃশংসভাবে হামলার পর তিনি যখন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছিলেন তখন এই মামলায় আবু তালেব নিম্ন আদালত থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি জামিন নিয়েছিল। এর মধ্যে হাসপাতালে মারা যায় প্রবাসী ইউসুফ আলী।
এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি মামলায় ৩০২ ধারা (হত্যা মামলা) যোগ হয়৷ সম্প্রতি মামলাটির চার্জশিট প্রণয়ন করা হলে আদালতে সেটি গৃহীত হয়। সেদিনই সে সময়ের আবেদন করলে আদালত তা না মঞ্জুর করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। সর্বশেষ আজ সোমবার আবু তালেব আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাণীরহাট থেকে রাজানগরের বগাবিলী গ্রামে যাওয়ার পথে ইউসুফের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে দুর্বৃত্তরা। এসময় তার ওপর হামলা চালায় তারা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় ইউসুফ আলীর স্ত্রী শাহিনুর আকতার বাদী হয়ে নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আজগর আলীসহ ১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
ইউপি নির্বাচনে তৈয়বের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আজগর আলী পরাজিত হয়ে তার লোকজন নিয়ে এ হামলা চালিয়েছিল বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
মামলায় এখন পর্যন্ত আজগর, মুবিন, আবু তালেব কারাগারে রয়েছে। অন্তর্বর্তিকালীন জামিনে রয়েছেন মুহসিনুল হক, মামুন, সাগর ও আলমগীর। এখনো পলাতক রয়েছে আরও ৫ জন আসামি।
নিহতের ছোট ভাই ইউপি সদস্য মো. আবু তৈয়ব বলেন, “নির্বাচনের পর তারা সবাই মিলে প্রথমে আমার এক সমর্থকের ওপর হামলা চালায়। এরপর আমাকে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। এর কয়েকদিনের মধ্যে আমার ভাইকে তারা পরিকল্পতিভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। মামলা দায়েরের পর থেকে তারা আমাকেও মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলেছে। এমনকি জামিনে থাকা আসামি ও পলাতক আসামিদের অব্যাহত হুমকির কারণে আমার ভাবিও ঘরে ছেড়ে সন্তান নিয়ে অন্যত্র থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এই ব্যাপারেও থানায় জিডি দায়ের করা হলেও তারা হুমকি অব্যাহত রেখেছে। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তারপরও আমরা ভাই হত্যার বিচার দাবি করছি।”