বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) সদর দপ্তরের নিজস্ব ভবন চট্টগ্রামে নির্মাণ করা হচ্ছে। ৩২ বছরের বেশি সময় ধরে চট্টগ্রামে সদর দপ্তর থাকলেও সংস্থাটির কার্যক্রম চলে ভাড়া ভবনে। দীর্ঘদিন নানাভাবে উদ্যোগ নিয়েও নতুন ভবন নির্মাণ প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি। অবশেষে বাকলিয়া নোমান কলেজের পাশে এক একরের বেশি জমিতে শুরু হয়েছে সংস্থার নিজস্ব ভবন তৈরির কার্যক্রম। সদর দপ্তরের ভবন নির্মাণের জন্য কনসালটেন্ট নিয়োগের প্রক্রিয়াসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশের জ্বালানি তেল আমদানি এবং বিপণনের একমাত্র নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিপিসির সদর দপ্তর ছিল ঢাকায়। ১৯৯০ সালে সংস্থাটির সদর দপ্তর নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রামে। তখন থেকে বিপিসি চট্টগ্রামে ভাড়া ভবনে সদর দপ্তরের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। শুরুতে আগ্রাবাদে হাউজ বিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেশনের ভবনে জায়গা ভাড়া নেয় বিপিসি। সেখানে ২০০০ সাল পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে। এরপর ২০০১ সালে বিপিসির সদর দপ্তর বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) ভবনে স্থানান্তর করা হয়। বন্দর ভবনের সামনে সল্টগোলা রোড ভবনে ফ্লোর ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম চালাতে গিয়ে প্রতি মাসে বিপিসির আনুষাঙ্গিক খরচ হয় প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
বিপিসি সূত্র জানায়, নগরীর জামালখান সংলগ্ন জয় পাহাড়ে সংস্থাটির বিপুল পরিমাণ জায়গা রয়েছে। রয়েছে সংস্থার আবাসিক এলাকা। এখানে সদর দপ্তর নির্মাণের জন্য বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু পরিবেশবাদীরা এই উদ্যোগের বিরোধিতা করে। চট্টগ্রামের অন্যতম সবুজ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত জয় পাহাড়ে বিপিসির সদর দপ্তর নির্মাণে পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার শঙ্কা থাকায় সেই উদ্যোগ গতি পায়নি।
সংস্থার তহবিলে বিপুল অর্থ এবং নিজস্ব জায়গা থাকলেও বিপিসির সদর দপ্তরের জন্য নিজস্ব ভবন নির্মাণ করতে না পারার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। অবশেষে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে কালুরঘাট থেকে চাক্তাই খালের মুখ পর্যন্ত নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধ-কাম সড়কের পাশে বাকলিয়ার নোমান কলেজের সন্নিকটে ১.১৯ একর ভূমিতে বিপিসির সদর দপ্তরের নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পুরো জায়গা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা দেয়া হয়েছে। চলছে ভূমি উন্নয়ন কার্যক্রম।
বিপিসির পরিকল্পনা বিভাগ থেকে পুরো বিষয়টি মনিটরিং চলছে। প্রকল্পের কনসালটেন্ট নিয়োগের জন্য ই-ওয়াই আহ্বান করা হয়েছে।
জানা গেছে, সদর দপ্তরের ভবন নির্মাণের জন্য বিপিসি প্রায় ৪শ কোটি টাকা ব্যয় করবে। তবে সংস্থার শীর্ষ একজন কর্মকর্তা বলেন, খরচের হিসাব করার সময় এখনো আসেনি। জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরামর্শক নিয়োগ করা হবে। তারা ডিজাইন করার পর প্রকল্পটির ব্যাপারে খরচ নির্ধারণসহ আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলো নিশ্চিত করা হবে।