তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি বলেছিল সরকারের পতন ঘটাবে, ১০ তারিখের পর থেকে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ চলবে। তারা সরকারের পতন ঘটাতে এসে নিজেদের পতন ঘটিয়ে দিয়েছেন। সরকারের পদত্যাগ চাইতে এসে নিজেরা পদত্যাগ করে বসলেন সংসদ থেকে। তিনি বলেন, বিএনপি মনে করেছেন সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে সরকারের ভিত নড়ে যাবে। সরকারের একটু কাতুকুতু লেগেছে এর বেশি কিছু হয়নি। তারা যেদিন পদত্যাগ করেছে সেদিনই সংসদ সচিবালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে সংসদের আসন শূন্য ঘোষণা করেছে। সামনে উপনির্বাচন হবে, এখন তারা বুঝবে কি ভুলটি তারা করেছেন। গতকাল সোমবার নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। প্রধান অতিথি হিসেবে র্ভাচুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিতে গিয়ে বিএনপি নিজেরাই ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেছে। কঠিন দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেলে, দেওয়ালের যেমন কিছু হয় না, উল্টো যে ধাক্কা দেয় সেই মাথায় ব্যথা পায়। তেমনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ধাক্কা খেতে এলে আওয়ামী লীগের কিছুই হবে না। উল্টো বিএনপি ভেঙে পড়ে যাবে। বিএনপি বলেছিল, ১০ ডিসেম্বর তাদের ১ দফা দাবি। আর সমাবেশে তারা দিল ১০ দফা দাবি। তাদের দাবিগুলো মনযোগ দিয়ে পড়লাম। দাবিগুলো ঘোড়ার ডিমের মতই দশটা ঘোড়ার ডিম, নতুন কোনো কিছু সেখানে নেই। ১ দফা থেকে এখন দশ দফায় গেছে। গাধা জল ঘোলা করে খাওয়ার মতোই বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করার কথা বলে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ করেছে -বলেন তথ্যমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। অনেক হিসেব নিকেশ করেই বিএনপি ঢাকায় সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন। ঘোষণা দিয়েছিলেন দশ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে। শেষমেষ বিএনপি অফিসের ভেতরে পাওয়া গেল পনেরটি তাজা বোমা, ১৬০ বস্তা চাল, আড়াই লাখ পানির বোতল আর লাঠিসোটা। তার মানে হচ্ছে তারা আসলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য নয়াপল্টনে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল।
তিনি বলেন, ৭ তারিখ থেকে সমাবেশ শুরু করে পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করল। যখন সরকার কঠোর হল তখন আবার বসল, তারা বেছে নিল গোলাপবাগ মাঠ। সেখানে চট্টগ্রামের দেওয়ানহাটের মত গরুর হাট বসে। এত ময়দান থাকতে তারা বেছে নিল গরুর হাটের ময়দান। পঞ্চাশ হাজার বর্গফুটের এই ময়দানে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ ধরে। আশপাশের রাস্তা মিলিয়ে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ হাজার মানুষের সমাবেশ করলেন তারা।
তিনি বলেন, আজকে সমগ্র বাংলাদেশ বদলে গেছে। আয়তনের দিক দিয়ে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৯২তম, অথচ পৃথিবীতে ধান উৎপাদনে তৃতীয়, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে সপ্তম, আম উৎপাদনে দ্বিতীয়। বাংলাদেশে এখন খালি পায়ে মানুষ দেখা যায়না। ছেঁড়া কাপড় পড়া মানুষ সহজে দেখা যায়না, আকাশ থেকে কুঁড়েঘর সহজে খুঁজে পাওয়া যায়না। এটিই হচ্ছে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এটি কোনো যাদুর কারণে হয়নি, শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বের কারণে এভাবে বাংলাদেশ বদলে গেছে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি, ড. আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভী এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।