বয়সের ছাপ লুকানোর জন্য আমরা কত কিছুই না করি। অথচ পালংশাকের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কোষের ক্ষয় রোধ করে শরীরকে তারুণ্যদীপ্ত এবং সুস্থ-সবল রাখে। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়। মস্তিষ্কের কোষগুলোকেও সতেজ এবং কর্মক্ষম রাখে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও রয়েছে এই শাকের। প্রতি ১০০ গ্রাম পালংশাকে রয়েছে ৯০ দশমিক ৮ গ্রাম পানি, ১ দশমিক ৮ গ্রাম খনিজ লবণ, শূন্য দশমিক ৬ গ্রাম আঁশ, ৩০ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ৩ দশমিক ৩ গ্রাম ৩ গ্রাম আমিষ, ২ দশমিক ১ গ্রাম শর্করা, ৭৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৮ দশমিক ৭ মিলিগ্রাম লোহা, ৭ হাজার ৯০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন-এ ও ১৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি। এক কাপ পালংশাক খাদ্যআঁশের দৈনিক চাহিদার ২০ শতাংশ পূরণ করে। ভিটামিন-এ এবং কে-এর দৈনিক চাহিদা মেটায়। এতে উচ্চমাত্রার আমিষ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই, লোহা, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, ফলিক অ্যাসিড ও সেলেনিয়াম রয়েছে। এসব পুষ্টি উপাদান শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্মের জন্য অপরিহার্য।
বয়সের ছাপ কমানোর পাশাপাশি পালংশাক শরীরকে নানাভাবে সুরক্ষা দেয়। এক নজরে এর উপকারিতাগুলো দেখে নেওয়া যাক।
রক্তচাপ কমায় : উচ্চমাত্রার ম্যাগনেশিয়াম থাকার কারণে পালংশাক রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : এই সবজিতে থাকা ভিটামিন-এ শরীরের রোগ প্রতিরোধী রক্তকণিকা শ্বেতকণিকা বাড়ায় এবং দেহকে বিভিন্ন সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা করে।
ক্যানসারের প্রতিরোধ : পালংশাকে রয়েছে ১০টিরও বেশি ভিন্ন ধরনের ফ্ল্যাভোনয়েড, যা জটিল রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। বিশেষ করে দেহের ক্ষতিকর মুক্তকণিকা (ফ্রি র্যাডিকেল) নিষ্ক্রিয় করে ক্যানসার ঠেকায়।
চোখের সুরক্ষায় : পালংশাকে লুটেনসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইটোকেমিক্যাল থাকে, যা দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে সাহায্য করে। পালংশাকের বিটা ক্যারোটিন চোখে ছানি পড়ার ঝুঁকি কমায়।
ত্বকের সুরক্ষায় : পালংশাকে থাকা ভিটামিন-এ ত্বকের বাইরের স্তরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটা বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা যেমন ব্রণ ও বলিরেখা কমায়।
শরীর বজায় রাখতে : পালংশাকে রয়েছে উচ্চমাত্রার লোহা, যা দেহে অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া এতে রয়েছে লিষ্ফোবিক অ্যাসিড, যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যেমন ভিটামিন সি ও ই-কে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। এ কারণে পালংশাক ক্লান্তি ভাব দূর করে।
প্রদাহ কমাতে : পালংশাকে আছে নিওজেন্থিন, যা প্রদাহ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যাঁদের অস্থিসন্ধিতে ব্যথা আছে তারা অবশ্যই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এটি রাখলে উপকার পাবেন।
হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায় : এই সবজিতে থাকা ফলিক অ্যাসিড হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে। তাই আমাদের সবার উচিত উপকারী ও সস্তা সবজিটি খাদ্য তালিকায় নিয়মিতভাবে রাখা।