চট্টগ্রাম-দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কক্সবাজার অংশে দৃষ্টিনন্দন ‘আইকনিক রেলস্টেশন’ বিল্ডিংয়ের মূল স্ট্রাকচারের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে ফিনিশিংয়ের কাজ। ছাদের উপর বসানো হচ্ছে মূল স্টিল ক্যানোফি, পুরোদমে কাজ করছেন শ্রমিকরা। একই সঙ্গে চলছে সৌন্দর্যবর্ধন, গ্লাস ফিটিং, ফায়ার ফাইর্টিং, স্যানিটারি ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ। দেশের বৃহৎ ও দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশনটি দেখতে অনেকটা ঝিনুকের আদলে। বলা হচ্ছে এটি এশিয়ার বৃহৎ রেলস্টেশন।
এই স্টেশন বিল্ডিংয়ের কন্সট্রাকশন ম্যানেজার প্রকৌশলী আবদুল জব্বার মিলন আজাদীকে বলেন, ৬ষ্ঠ তলা পর্যন্ত আইকনিক স্টেশন বিল্ডিংয়ের মূল স্ট্রাকচারের কাজ শেষ হয়েছে। এখন ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। চীন থেকে স্টিল ক্যানোফি এসেছে। যা বসানো হচ্ছে ছাদের উপর। মূল স্টেশনের ভবনের পাশেই ফুট ওভারব্রিজ, ৩টি প্লাটফর্ম ও স্টেশন ভবনের ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। মূল স্ট্রাকচারের কাজ শেষ হলেও ফিনিশিংয়ে সময় বেশি লাগে। নির্দিষ্ট সময়সীমার আগেই আমরা স্টেশনের কাজ শেষ করতে পারবো। ২৯ একর জমির উপর নির্মিত হচ্ছে দেশের একমাত্র আইকনিক রেলস্টেশন। যার নির্মাণ ব্যয় হচ্ছে ২১৫ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা হলে তারা জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ১০০ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে এখন পর্যন্ত বসেছে ৫৩ কিলোমিটার। কক্সবাজার অংশে ৪১ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম অংশে ১২ কিলোমিটার। পুরো রেললাইনজুড়ে কক্সবাজার অংশের কাজের অগ্রগতি বেশ ভালো। এই অংশের কাজ করছে ম্যাক্স গ্রুপ। কক্সবাজার অংশের কাজ প্রকল্পের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হবে বলে জানান এই অংশের কাজে নিয়োজিত প্রকৌশলীরা। তবে কক্সবাজারের পরে চট্টগ্রাম অংশে এখনো কাজ অনেক বাকি। ২০টির মতো কালভার্টের কাজ বাকি রয়েছে।
স্টেশন ভবনের কাজে নিয়োজিত প্রকৌশলীরা জানান, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে নির্মিত হচ্ছে ঝিনুকের আদলে দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশন। অত্যাধুনিক অনেক সুযোগ-সুবিধা থাকবে এই রেলস্টেশনে। সামনে অংশে তৈরি হবে বিশাল আকৃতির ঝিনুকের ফোয়ারা। ঝিক ঝিক শব্দ করে ট্রেন আসার পর যার পাশ দিয়ে প্রবেশ করতে হবে স্টেশনে। তারপর চলন্ত সিঁড়ির মাধ্যমে সেতু হয়ে চড়তে হবে ট্রেনে। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য থাকবে ৩টি বড় জায়গা।
স্টেশন ভবনে থাকবে কাউন্টার, স্বাগত জানানোর কক্ষ, তারকামানের হোটেল, রেস্তোরাঁ, মালামাল রাখার লকার, শিশু যত্ম কেন্দ্র, মসজিদসহ অত্যাধুনিক সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা। পর্যটকরা চাইলে রাতের ট্রেন ধরে সকালে কক্সবাজার পৌঁছে মালামাল স্টেশনে রেখে সারা দিন সমুদ্রসৈকত বা পর্যটন স্পট ঘুরে রাতে ফিরে যেতে পারবেন। আর বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য রাখা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এই আইকনিক স্টেশনে প্রতিদিন ৪৬ হাজার যাত্রী গমন ও ৪৬ হাজার যাত্রী বহির্গমন করতে পারবে।