ভারত-বাংলাদেশ নৌপথে পণ্য পরিবহনে গতি আসেনি

এই রুটে ১ কোটি টন পন্য হ্যান্ডলিংয়ের সম্ভাবনা

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৮ আগস্ট, ২০২২ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

ভারতের সাথে বাংলাদেশের নৌপথে পণ্য পরিবহনে প্রত্যাশিত গতি আসেনি। পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে অভ্যন্তরীণ নৌ পথে ভারতের সাথে বাংলাদেশের পণ্য পরিবাহিত হয়ে আসলেও তা এখনো পুরো বছরে ৫০ লাখ টন পার হতে পারেনি। সামনের দিনগুলোতে দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহন বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭২ সালে ভারতের সাথে বাংলাদেশের নৌ বাণিজ্যের চুক্তি হয়। নৌপথে পণ্য পরিবহনের জন্য প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিটি) নামের এই চুক্তির আওতায় দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবাহিত হয়। তবে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতির কারণে ভারত থেকে শুধু পণ্য আমদানি হয়। বাংলাদেশ থেকে খুব বেশি পণ্য ভারতে রপ্তানি হয় না। ভারত থেকে একসময় শুধুমাত্র সিমেন্ট কারখানার কাঁচামাল ফ্লাই অ্যাশ আমদানি হতো। গত বেশ কয়েক বছর ধরে ফ্লাই অ্যাশের পাশাপাশি চাল, গম, ভুট্টা, স্টিল উপকরণসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি হচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে তৈরি পোশাক, পাট, সুতা, হালকা প্রকৌশল যন্ত্রপাতি, প্লাস্টিক ও ভোগ্যপণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। বাংলাদেশ বছরে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের পণ্য ভারতে রপ্তানি করলেও নৌপথে রপ্তানি হয় না বললেই চলে। ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যের পাশাপাশি ট্রান্সশিপমেন্টে বেশ কিছু পণ্যও নৌপথে পরিবাহিত হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের ১০টি সুনির্দিষ্ট নৌপথ দিয়ে এসব প্রটোকল চুক্তির আওতাধীন জাহাজ চলাচল করে। দুই দেশের মধ্যে উপকূলীয় নৌ চলাচল চালু থাকায় পণ্য পরিবহন ব্যয় এবং সময় দুটোরই সাশ্রয় হচ্ছে বলে জানিয়ে সূত্র বলেছে, ভারত বাংলাদেশ নৌপথে সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে এক ভয়েজ সম্পন্ন হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০০০ সালের আগ পর্যন্ত শুধুমাত্র ভারতীয় জাহাজই প্রটোকল চুক্তির আওতায় পণ্য পরিবহন করত। ২০০০ সালের পর বাংলাদেশের লাইটারেজ জাহাজও এই রুটে যুক্ত হয়। প্রটোকল অনুযায়ী দুই দেশের সমান সংখ্যক জাহাজ চলাচল করার কথা থাকলেও কার্যত তা হয়নি।
বাংলাদেশ-ভারতের নৌরুটে পণ্য পরিবহন বেশ সাশ্রয়ী হলেও এই রুটে পণ্য হ্যান্ডলিং খুব একটি গতি পায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২৬ লাখ ২৪ হাজার টনের বেশি। ২০১৭-১৮ সালে আমদানি-রফতানির পরিমাণ ছিল ২৭ লাখ টন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ২৪ লাখ টন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ২৭ লাখ ৮০ হাজার টনের বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে পরিবহনের পরিমাণ ছিল ৩৯ লাখ ৫৯ হাজার টন। সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরে সাড়ে ৪৭ লাখ টন পণ্য পরিবহন হয়েছে। অথচ এই রুটে অন্তত এক কোটি টন পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, নৌ প্রটোকলের আওতায় বাংলাদেশ ও ভারতের পাঁচ শতাধিক জাহাজ চলাচল করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবেপরোয়া গতির বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিলে
পরবর্তী নিবন্ধশাটল ট্রেনে চবির সাবেক শিক্ষার্থীকে মারধর