পটিয়ায় প্রথমবারের মতো ‘ট্রে পদ্ধতিতে’ ধানের চারা উৎপাদন করে চমক দেখালেন এক কৃষক। উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও ডোয়ার পাড়া এলাকায় মোহাম্মদ সোহাফ উদ্দীন নামের এক প্রশিক্ষিত কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে ট্রে পদ্ধতির এ ধানের চারা উৎপাদন করেন। ব্রি-৯৩ ধানের বীজ রোপনের মাধ্যমে ট্রে পদ্ধতিতে এ ধান বীজ লাগানো হয়। আমন ফসলের জন্য এ ধানের চারা উৎপাদন শুরু করেন তিনি।
এর আগে ওই কৃষক পটিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এ পদ্ধতিতে তিনি আমন ধানের বীজ আড়াই শতক জায়গায় রোপণ করেন। এর জন্য দুইশত টি ট্রে ব্যবহার করা হয়। উৎপাদিত আমন ধানের বীজ ২.৪০ একর বা ২৪০ শতক জায়গায় চাষ করা যাবে। প্রতি ট্রেতে ৮০-১শ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়। প্রতিটি ট্রের গভীরতা ১১ ইঞ্চি থেকে ২২ ইঞ্চি। প্ল্যাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদিত এ ট্রে বাজারে পাওয়া যায়। যার কারণে এ ট্রেগুলো অনেকটা সহজলভ্য বলেও জানান কৃষক সোহাফ উদ্দীন।
জানা যায়, ‘ট্রে’তে ১ ইঞ্চি বা তিন ভাগের দুই ভাগ মাটির প্রয়োজন হয়। বাকি অংশে বিভিন্ন জৈব সার দিয়ে এ ট্রে পূর্ণ করতে হয়। এতে ধান বীজ ছিটিয়ে সহজভাবে ধানের চারা উৎপাদন করা হয়। উৎপাদিত ধানের চারা লাইন থেকে লাইন ১২ ইঞ্চি ও গোছা থেকে গোছা ৬-৮ ইঞ্চি পর্যন্ত দূরত্ব রেখে রোপণ করতে হয়। এর ফলে আগাছা পরিষ্কার ও অন্যান্য সার বালাইনাশক দিতে সুবিধা হয়। এ পদ্ধতির আরো সুবিধা হচ্ছে সিজনে সাধারণত শ্রমিকের অভাব দেখা দেয় ও দাম বেশি থাকে। এক্ষেত্রে কাজ কৃষক নিজে করতে পারেন বলে খরচও অর্ধেকে নেমে আসে।এ বিষয়ে কৃষক সোহাফ উদ্দীন জানান, এ পদ্ধতিতে ধানের চারা উৎপাদন খুবই সহজ। তাছাড়া এতে ধান গাছ নষ্ট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না। বর্ষা মৌসুমে ভারী বর্ষণে বীজতলা ডুবে গেলে সহজেই তা উঁচু স্থানে তোলে রাখা যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্পনা রহমান জানান, ট্রে পদ্ধতিতে ধান চারা উৎপাদন একটি সুন্দর ও আধুনিক পদ্ধতি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় উপজেলার ১০ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। চাষাবাদের পূর্ণ মৌসুমে শ্রমিকের অভাব দেখা দিলে এ পদ্ধতির কারণে তুলনামূলক অনেক কম শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। এটি একটি একটি চমৎকার পদ্ধতি। এর মাধ্যমে আধুনিক চাষাবাদে কৃষকরা অনেক উপকৃত হচ্ছে।