সেদিনও ক্লান্ত দিনের শেষে ব্যস্ত নগরীতে রাত নেমেছিলো। সবাই আচ্ছাদিত হয়েছিলো গভীর ঘুমে। ভারী নিঃশ্বাসের শব্দ ছাড়া তেমন কিছুই শোনা যাচ্ছিলো না।
ধানমণ্ডি-৩২ নম্বরের বাইরে দু’চার কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দও কিছুক্ষণ পর নীরবতায় ছেয়ে যায় ভারী বুটের শব্দে। কারা এলো? সম্বিত ফিরে পায়নি কেউ! সুনশান-নিস্তব্ধ, গভীর রাত; গভীরতা ক্রমশ বাড়ছে, আর বাড়ছে ভারী অথচ পাষাণ বুটের আওয়াজ। ধুপধাপ শব্দে কেঁপে উঠছে ধানমণ্ডি-৩২ নম্বর।
সবশেষ করে দিয়েছে ঘাতকেরা, রক্তাক্ত করেছে সারা বাড়ি। কাউকে ছাড়ে নি সেদিন। হ্যাঁ,ওটা আমাদের নেতা বাঙালির পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি। যেখানে সেদিন রক্তাক্ত হয়েছিলো বাঙালির স্বপ্ন, রক্তাক্ত হয়েছিলো জাতির পিতা, রক্তাক্ত হয়েছিলো বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। রক্তাক্ত হয়েছিলো শিশু শেখ রাসেল, কোটি কিশোরের প্রাণ, রক্তাক্ত হয়েছিলো শেখ জামাল-শেখ কামাল কোটি তারুণ্যের শক্তি।
আমরা আমাদের নেতাকে হারিয়েছি, হারিয়েছি বাঙালির অমূল্য ধন, জাগরণ শক্তি। আজকের দিনে শ্রান্ত মনে বলতে চাই, মহান এই ত্যাগের দিনে স্মরণ করি বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে, তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। বিপথগামীরা আমাদের বাংলার নেতা, জাতির পিতাকে কেড়ে নিলেও কেড়ে নিতে পারে নি আমাদের চেতনা, জাগরণ এবং শক্তি। বঙ্গবন্ধুর দেখানো আদর্শকে সামনে রেখে এগিয়ে চলতে হবে দেশ ও জাতির কল্যাণ সাধনায়। নিজেদেরকে বিলীন করে দিতে হবে দেশ ও দেশের স্বাধীনতা রক্ষায়। কারণ আমরা হারতে শিখিনি, আমরা ’৫২ এবং ’৭১ এর আন্দোলন করা বিজয়ী জাতি। যাদের ত্যাগের বিনিময়ে রচিত হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাস।