লোহাগাড়ায় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের উদ্যোগে এবং কাপ্তাইয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের উদ্যোগে বিশ্ব হাতি দিবস পালন করা হয়েছে।
লোহাগাড়া : লোহাগাড়া প্রতিনিধি জানান, বিশ্ব হাতি দিবস উপলক্ষে গতকাল সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এক র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শাহজাহানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) এম. ইব্রাহিম কবির। বিশেষ অতিথি ছিলেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী। বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা নূর জাহান স্বাগত বক্তব্য রাখেন ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা দিপান্বীতা ভট্টাচার্য্য। চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাহমুদ হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পদুয়া রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক এ. কে. এম আজহারুল ইসলাম, লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আতিকুর রহমান, বড়হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিজয় কুমার বড়ুয়া ও মেহেদী হোসাইন।
বক্তারা বলেন, বন্যহাতি আমাদের জাতীয় সম্পদ। বর্তমানে দেশে বন্যহাতি মহাবিপন্নের তালিকায় রয়েছে। তাই বন্যহাতির প্রতি আক্রমণাত্মক না হয়ে তাদের সুরক্ষায় সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তারা।
কাপ্তাই : কাপ্তাই প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় গতকাল বিশ্ব হাতি দিবস পালন করা হয়। এ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি, সমাবেশ এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বিশ্ব হাতি দিবসের অনুষ্ঠানে বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নের্তৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী, গণমাধ্যম কর্মী এবং স্থানীয় সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের ডিএফও ছালেহ মো. শোয়াইব। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডিএফও আ.ন.ম. আব্দুল ওয়াদুদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ৪নং কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুল লতিফ এবং কাপ্তাই কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মো. লোকমান আহমেদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা খন্দকার মাহামুদুল হক মুরাদ। সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, বন্য হাতিকে যদি আমরা বন্ধু মনে করতে পারি, হাতির চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করি, হাতিকে কোনভাবে উত্যক্ত না করি এবং হাতির খাবারের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সে মোতাবেক ব্যবস্থা করি তাহলে বন্য হাতি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করবে না। অনেক সময় বন্য হাতি লোকালয় চলে আসে এবং মানুষের জান মালের ক্ষতি সাধন করে এমন খবর পাওয়া যায়। এর মূল কারণ হলো হাতি বনে পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে না। খাবারের সন্ধানেই বন্য হাতি লোকালয়ে চলে আসে। কোন কোন স্থানে কিছু দুষ্টু প্রকৃতির মানুষ হাতিকে লক্ষ করে গুলতি ছোড়ে, ইট পাথর নিক্ষেপ করে এসব কারণেও বন্য হাতি ক্ষিপ্ত হয়ে মানুষের ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করে। ডিএফও ছালেহ মো. শোয়াইব বলেন, বন্য হাতি যাতে মানুষের ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য আমরা কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সোলার ফেঞ্চিং বসিয়েছি। ভবিষ্যতে আরো অনেক স্থানে সোলার ফেঞ্চিং বসানো হবে। হাতি মানুষের ক্ষতি করলেও আইন অনুযায়ী হাতির কোন ক্ষতি করা যাবে না। বন্য হাতির সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে চলাচল করতে পারলে আশাকরি বন্য হাতি মানুষের কোন ক্ষতি করবে না। পরে উপস্থিত সকলের অংশগ্রহণে একটি র্যালি বের করা হয়।