আহলে বায়তে রাসুল স্মরণে প্রতি বছরের মতো দশদিনের শাহাদাতে কারবালা মাহফিল শুরু হচ্ছে আগামী রোববার। নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদের প্লাজায় ৩৭ তম এ মাহফিল চলবে ৯ আগস্ট পর্যন্ত। মাহফিলে পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করবেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মিশরের রাষ্ট্রী ক্বারী শায়খ আহমদ নায়না। আহলে বায়তে রাসুলের মান-মর্যাদা নিয়ে বিশ্ব বরেণ্য ইসলামিক স্কলার, পীর মাশায়েখগণ আলোচনা করবেন।
গতকাল মঙ্গলবার নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পরিষদ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সমাজসেবায় একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পপতি সূফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিশোধ নয়, মানুষের প্রতি ভালবাসাই হলো নবী পরিবারের বৈশিষ্ট্য। কারাবালা যুদ্ধে নিজেদের জীবন দিয়ে ভালবাসার সেই নজির রেখে গেছেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, খতীবে বাঙাল মাওলানা মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন আলকাদেরী ১৯৮৬ সালে জমিয়তুল ফালাহ কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই হিজরি নববর্ষ, মাহে মুহর্রম ও আহলে বায়তে রাসুলের স্মরণে ১০ দিনব্যাপী শাহাদাতে কারবালা মাহফিল করে আসছিলেন। এবছরও যথারীতি ৩৭তম আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান বলেন, শাহাদাতে কারবালা মাহফিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে মূলত আহলে বায়তে রাসূলের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসাই প্রদর্শন করেন ঈমানি চেতনায় উদ্দীপ্ত আহলে বায়তপ্রেমী নিষ্ঠাবান মুসলমানরা। তাই আহলে বায়তে রাসূলের আত্মত্যাগের ঘটনা মুসলমানদের মাঝে জাগরুক রাখতে এবং দ্বীন ও সত্যের প্রতি সবাইকে উদ্দীপ্ত ও উজ্জীবিত রাখতে শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের আয়োজন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এতে অংশগ্রহণ ঈমানি দায়িত্ব। এবারের শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে দেশ ও বিদেশের উলামা-মাশায়েখ, শিক্ষাবিদ, গবেষক, ইসলামী চিন্তাবিদ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, মন্ত্রীবর্গ, সরকারি বেসকারি পদস্থ ব্যক্তিবর্গ অতিথি ও আলোচক হিসেবে অংশ নেবেন।
ইরাকের বাগদাদ শরীফের বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রা.) আওলাদ আশ্-শাইখ আস্-সৈয়দ আল্লামা আফিফুদ্দীন আল্ জিলানী আল বোগদাদী, ভারতের কাসওয়াসা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন কায়েদে মিল্লাত হযরত শাহ সূফী সৈয়দ মাহমুদ আশরাফ আশরাফী আল জিলানী, ফখরুল মাশায়িখ হযরতুল আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ আশরাফ আশরাফি আল জিলানী, তাজুল উলামা হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ নূরানী মিয়া হাশেমী, শ্রীলংকার আল্লামা মুহামম্মদ ইহসান ইকবাল কাদেরী ও খতীবে লা-সানী মাওলান আকবর ইহসানী প্রমুখ মাহফিলে উপস্থিত থাকবেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চবি শিক্ষক ড. জাফর উল্লাহ বলেন, হযরত ইমাম হোসাইনের নেতৃত্বে আহলে বায়তে রাসূল সদস্যগণ সেদিন ইয়াযিদি শক্তির কাছে মাথা নত না করে, ইসলামের ন্যায়, সত্য ও ইনসাফের ঝাণ্ডাকে উড্ডীন করেছেন। কারবালার ময়দানে নবী পরিবারের তুলনাহীন আত্মত্যাগ ও কোরবানির মধ্য দিয়ে ইসলামের ভিত্তি মজবুত হয়েছে। দ্বীন ইসলামের পুনরুজ্জীবন ঘটে কারবালার হৃদয়ভেদী ঘটনার মধ্য দিয়ে। কঠিন মুসিবত সত্ত্বেও হযরত ইমাম হোসাইনের (রা.) দ্বীন ও হকের ওপর অবিচল থাাকার নজীর মুসলমানদেরকে সত্যের পথে উৎসর্গীত হওয়ার প্রেরণা জোগায়। কারবালার এ প্রেরণা ইসলামের পুনর্জাগরণে এবং মুসলমানদের আত্মমর্যাদা ও আত্মশক্তি নিয়ে উন্নত শিরে বেঁচে থাকতে উৎসাহিত করে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল আনোয়ার হোসেন, গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক ও মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান সমন্বয়ক আলী হোসেন সোহাগ, শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পরিষদের সহসভাপতি খোরশেদুর রহমান, ব্যবসায়ী আলমগীর পারভেজ, মো. ছগির চৌধুরী, সিরাজুল মোস্তফা, আনোয়ারুল হক, সফিউল আজম, ড. জাফর উল্লাহ, মো. দিলশাদ আহমেদ, মো. সাইফুদ্দিন, অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন, জাফর আহমদ সওদাগর, এস এম শফি, মাহবুবুল আলম, মনছুর শিকদার, খোরশেদুর রহমান চৌধুরী সহ আনজুমান,গাউসিয়া কমিটি ও আশরাফিয়া তরিকার নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দরবারের মোতয়াল্লি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।