ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়াসহ মশাবাহিত রোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় মশক নিধনে ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম ও বিশেষ প্রচারণামূলক’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। আজ মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১১ টায় নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির পার্কে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। প্রতিটি ওয়ার্ডকে চারটি জোনে ভাগ করে বাস্তবায়ন করা হবে কর্মসূচি।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, কর্মসূচির মধ্যে মশক নিধনে কীটনাশক ছিটানো কার্যক্রম চলমান থাকবে। তবে প্রচারণামূলক কার্যক্রম চলবে আগামী এক সপ্তাহ। এর মধ্যে আগামীকাল বুধবার নগরের ১২টি পয়েন্টে আর্বান ভলেন্টিয়ার এবং রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকরা সচেতনতামূলক মাইকিংয়ের পাশাপাশি লিফলেট বিতরণ করবেন। এর পরদিন বৃহষ্পতিবার থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এ প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এদিকে আজকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১২০ জন আর্বান ভলেন্টিয়ার, রেড ক্রিসেন্টের ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক কর্মসূচিতে সহায়তা করবে। কীটনাশক ছিটানোর জন্য মজুদ রাখা হবে ১২ থেকে ১৫টি ফগার মেশিন এবং ২০ থেকে ৩০ টি স্প্রে মেশিন। সিটি মেয়র উদ্বোধনের পর দুইটি টিমে ভাগ হয়ে যাবে স্বেচ্ছাসেবক এবং চসিকের স্প্রে ম্যানরা। একটি টিম সুগন্ধা এবং অপর টিম নাসিরাবাদ হাউজিং এলাকায় কীটনাশক ছিটানোর পাশাপাশি প্রচারণা চালাবে। আগামীকাল থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চলবে কার্যক্রম।
এদিকে আগামীকাল প্রচারণামূলক কার্যক্রমের জন্য বাছাইকৃত শহরের পয়েন্টগুলো হচ্ছে- অঙিজেন মোড়, দুই নম্বর গেইট, বহাদ্দারহাট, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, নিউ মার্কেট, জিইসি মোড়, বাদামতল, ইপিজেড মোড়, বড়পোল. একে খান মোড় এবং আন্দরকিল্লাহ মোড়।
এ বিষয়ে চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো. আবুল হাশেম দৈনিক আজাদীকে বলেন, মেয়র মহোদয়ের উদ্বোধনের পর দিনভর নাসিরাবাদ ও সুগন্ধা আবাসিক এলাকায় ফগিংয়ের পাশাপাশি প্রচারণা চালানো হবে। নিজস্ব জনবলের পাশাপাশি আর্বান ভলেন্টিয়ার টিম এবং রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। বুধবার থেকে একইসঙ্গে ১২ টি পয়েট এবং ওয়ার্ডে প্রচারণা ও ফগিং করা হবে।
কর্মসূচি কতদিন চলবে জানতে চাইলে বলেন, প্রচারণাটা সপ্তাহব্যাপি করবো। ওষুধ ছিটানো অব্যাহত থাকবে। পর্যাপ্ত কীটনাশক মজুদ রয়েছে জানিয়ে বলেন, আমাদের ৩০০ জনের বেশি জনবল আছে। এর মধ্যে ২০০ জন স্প্রে ম্যানও আছে।
সিভিল সার্জন ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাপসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৭০ জনের অধিক রোগী শনাক্ত হয়। এছাড়া মহানগরসহ জেলায় বাড়ছে ম্যালেরিয়া রোগী। শুধু চলতি মাসেই চট্টগ্রামে ২৬ জন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত শনাক্ত হয়। এছাড়া জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত পর্যন্ত শনাক্ত হয় ৪৯ জন। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং সামনে বৃষ্টি হলে প্রাদুর্ভাব আরো বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় চসিকসহ সারা দেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোর জন্য কর্মপন্থা ঠিক করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর প্রেক্ষিতে ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম ও বিশেষ প্রচারণামূলক’ কর্মসূচি গ্রহণ করে চসিক।