হাজার হাজার বিক্ষোভকারী শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের বাসভবনে ঢুকে পড়ার কয়েক ঘণ্টা পর এবার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের ব্যক্তিগত বাসভবনে আগুন দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা আজ শনিবার(৯ জুলাই) রাতে কলম্বোতে বিক্রমাসিংহের ব্যক্তিগত বাসভবনে ঢুকে পড়ে আগুন লাগিয়ে দেয়।
বিক্রমাসিংহে সেই সময় ওই বাড়িতে ছিলেন না। তাকে আগেই একটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে তার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, কলম্বোর ওই বাড়ির উপরে রাতের আকাশ আলোকিত হয়ে আছে। বিপুল সংখ্যক মানুষ ভিড় করে আছে বাইরে।
এর আগে শনিবার বিকালের দিকে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে তার দলের নেতাদের বলেছিলেন, দেশের ভালোর জন্য সর্বদলীয় সরকার গঠনের পথ প্রশস্ত করতে তিনি পদত্যাগেও রাজি।
বিরোধী দলের পক্ষ থেকে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যে পরিকল্পনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে তাতেও সম্মতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছিল ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।
স্বাধীনতার পর সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা। প্রধানমন্ত্রী নিজে মুখে বলেছেন তার দেশ ‘দেউলিয়া হয়ে গেছে’।
দেশটিতে খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের যে তীব্র ঘাটতি তার জন্য গোটাবায়া এবং তার ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে সরকারের অব্যবস্থাপনাকেই বেশিরভাগ মানুষ দায়ী মনে করেন।
বিক্ষোভের মুখে গত মে মাসে মাহিন্দা পদত্যাগ করেন। গোটাবায়া পদত্যাগ করতে রাজি নন। প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এরমধ্যেই শনিবার প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে কলম্বোয় গণবিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়।
গণবিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীতে কারফিউ জারি করলেও বিক্ষোভকারীদের স্রোত ঠেকাতে পারেনি। বিক্ষোভে অংশ নিতে দ্বীপদেশটির বিভিন্ন অংশ থেকে মানুষ গাড়ি, ভ্যান, বাসে করে রাজধানীতে ছুটে এসেছেন।
পরে বিরোধী দল ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর চাপে আজ শনিবার সকালে পুলিশ ওই কারফিউ তুলে নেয়।
তারপর শনিবার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে বিক্ষোভকারীরা কলম্বো ফোর্টের চাথাম স্ট্রিটের সড়কে থাকা পুলিশ ব্যারিকেড টপকে প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে পড়ে।
বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে পুলিশ জলকামান ও গুলি ছুড়েও তাদের দমাতে পারেনি।