সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেনার ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান এই দুজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দুজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। অপরজনের মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রাম নগরীর বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে। আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনার ৮ দিন পর গতকাল জীবন প্রদীপ নিভে যাওয়া এই দুজনেই বয়সে তরুণ। মাত্র ২২ বছর বয়সেই মৃত্যুর কাছে হার মানতে হল এই দুজনকে। বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪৮ জনের মৃত্যু হলো। গতকাল ভোররাত ৩টার দিকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গাউসুল আজম নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়। তিনি ফায়ার সার্ভিস কর্মী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায়। গাউসুল আজমের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন গতকাল আজাদীকে বলেন, আগুনে গাউসুল আজমের শরীরের ৭৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। শ্বাসনালী পুড়ে গিয়েছিল। গত বেশ কয়দিন ধরে তাকে আইসিইউতে লাইফ (ভেন্টিলেশন) সাপোর্টে রাখা হয়। রোববার ভোর ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে আরো দুজনের অবস্থাও সঙ্কটজনক বলে জানান তিনি।
এদিকে, গতকাল দুপুর ২টার দিকে নগরীর বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে নুরুল কাদের নামে অপর এক রোগীর মৃত্যু হয়। ২২ বছর বয়সী নুরুল কাদের বিএম ডিপোর কর্মী ছিলেন। তার বাড়ি বাঁশখালীর বৈলছড়ি ইউনিয়নের পূর্ব চেচুরিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম এ কে এম ফাইজুর রহমান চৌধুরী।
নুরুল কাদেরের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ টি এম রেজাউল করিম আজাদীকে জানান, দগ্ধ নুরুল কাদেরকে ৫ জুন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আমাদের হাসপাতালে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তার শরীরে প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ পুড়ে যায়। মাথায় গুরুতর আঘাত ও শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে কিডনি সমস্যাও ধরা পড়ে। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার দুপুর ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত ও দগ্ধ আরো ৭ জন রোগী বর্তমানে ভর্তি রয়েছে বলে জানান তিনি।
গতকাল দুজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ৪৮ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান। এছাড়া এ ঘটনায় আহত ও দগ্ধ আরো ৬২ জন রোগী বর্তমানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়। চমেক হাসপাতাল, সিএমএইচ ও পার্কভিউ হাসপাতালে এসব রোগী চিকিৎসাধীন। এর বাইরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছে আরো ২২ জন।