বন্দরে নিলাম অযোগ্য ৭শ টন রাসায়নিক

বিপাকে কাস্টমস, ধ্বংস করার জন্য মতামত চেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে চিঠি

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৩ জুন, ২০২২ at ৮:১১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘ সময় ধরে পড়ে থাকা নিলাম অযোগ্য ৭০০ টন বিভিন্ন ধরনের বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থ নিয়ে বিপাকে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেনার ডিপোতে আগুন লেগে রাসায়নিক ভর্তি কন্টেনার বিস্ফোরণের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছেন কাস্টমস কর্তারা। নিলাম অযোগ্য এসব রাসায়নিক ধ্বংসের প্রক্রিয়া শুরুর জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ধ্বংসের তালিকায় থাকা এসব রাসায়নিকের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কঠিন পদার্থ, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, ডাইথোনাইট, সালফক্সিলেট, হাইড্রোক্লোরাইড, নাইট্রো গ্লু সলিউশন, কস্টিক সোডা, ফার্মাসিউটিক্যালস উপাদান, বেভারেজ কনসেনট্রেটসহ বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক। গত ১৫-২০ বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের পি-শেডে এসব রাসায়নিক পড়ে আছে। এর আগে অবশ্য এসব রাসায়নিক কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কয়েক দফায় নিলামে বিক্রির চেষ্টা করে। কিন্তু বিডারদের আগ্রহ না থাকায় মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়ে এসব রাসায়নিক পণ্য।
জানা যায়, মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিক ধ্বংস করতে কিছু নিয়ম মানতে হয়। সাধারণ অন্য সব মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য স্কেভেটর দিয়ে বড় গর্ত করে মাটিতে পুঁতে ধ্বংস করা হলেও রাসায়নিকের বিষয়টি ভিন্ন। কারণ রাসায়নিক পদার্থ মাটির গুণাগুণ নষ্ট করে ফেলে। তাই পরিবেশ অধিপ্তরের পরামর্শ মেনে রাসায়নিক পদার্থ ধ্বংস করতে হয়। এর আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সুনামগঞ্জের ছাতকে লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট কারখানার জিও সাইকেল প্রকল্পে ৪৯ টন বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ধ্বংস করা হয়। এছাড়া গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৮ টন সোডিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম সালফেট, কস্টিক সোডা, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, ব্যাটারি তৈরির উপকরণ এবং ওষুধ তৈরির নানা রাসায়নিক পদার্থ ও লেবানন থেকে ফেরত আসা ত্রুটিযুক্ত প্রায় সাড়ে ১৭ টন প্যারাসিটামল সিরাপ ধ্বংসের জন্য পাঠানো হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার মো. আল আমিন আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে ধ্বংসযোগ্য ৭০০ টন বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক রয়েছে। আমরা সেইসব রাসায়নিক ধ্বংসের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের মতামত চেয়েছি। তাদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা ধ্বংস কার্যক্রম শুরু করব। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাস আজাদীকে বলেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাসায়নিক ধ্বংসের বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো চিঠি পাইনি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৪ আগস্ট লেবাননের বৈরুত বন্দরে এ ধরনের রাসায়নিক পদার্থের বিস্ফোরণে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা রাসায়নিক ধ্বংসের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সে সময় চট্টগ্রাম বন্দরে কী পরিমাণ বিপজ্জনক পণ্য আছে তা খতিয়ে দেখার জন্য ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি বন্দরের ভেতরে ২৩ ধরনের বিপজ্জনক রাসায়নিক পণ্যের মজুদ খুঁজে পায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআরও দুজনের মৃত্যু বিএম ডিপোয় বিস্ফোরণ
পরবর্তী নিবন্ধট্রাকে বালুর নিচে মদের বস্তা