চসিকে আয়বর্ধক প্রকল্প চান মেয়র

কর আদায়ে গেজেটের আরো ২৬ খাত নিয়ে আলোচনা, কন্টেনারবাহী কাভার্ড ভ্যান ও লরি থেকে ফি আদায়ের ভাবনা

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২২ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ

দেশের সিটি কর্পোরেশনগুলোকে স্বাবলম্বী হতে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নির্দেশনার আলোকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীও কর্পোরেশনের আয় বৃদ্ধি নিয়ে ভাবছেন। গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে মেয়র গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর টাইগারপাসস্থ দপ্তরে বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে সভায় মিলিত হন।

সভায় মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, শুধুমাত্র সরকারি অনুদান ও থোক বরাদ্দের ওপর কর্পোরেশনের নাগরিক সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়। কর্পোরেশনকে আত্মনির্ভরশীল ও স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হলে সরকারের দিকে চেয়ে না থেকে করের আওতা বাড়ানো ও আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নাই।

সভায় মেয়র হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্সের হালনাগাদ আদায় কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি সরকারি গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশনের কর, উপকর, রেইট, টোল এবং ফিস আদায়ের আরো যে ২৬টি খাত রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় মেয়র বলেন, সরকারি গেজেট অনুযায়ী আরোপনীয় ২৬ খাতে কর, উপ কর, রেইট ফিস – এর মধ্যে কিছু খাত থেকে কর্পোরেশন আয় করলেও আরো অনেক খাত রয়েছে যা করের আওতার বাইরে। তিনি নগরীর অবকাঠামোগত উন্নয়নকে টেকসই করে সড়কে চলাচলরত কন্টেনারবাহী কাভার্ড ভ্যান, লরি থেকে ফি আদায়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে কি ব্যবস্থা নেয়া যায় সেই বিষয়ে কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের আইনগত দিক বিবেচনা করে দেখতে বলেন।

যে ২৬ খাতে কর, উপকর, টোল এবং ফি নিয়ে ভাবা হচ্ছে : গতকালের সভায় সরকারি গেজেট অনুযায়ী কর্পোরেশন আরো যে ২৬ খাতে কর উপকর, রেইট, টোল এবং ফি আদায় করতে পারবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই খাতগুলো হলো, ইমারত ও জমির বার্ষিক মূল্যের উপর কর, স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের ওপর কর, ইমারত নির্মাণ এবং পুনঃনির্মাণের জন্য আবেদনের ওপর কর, নগরবাসীর ভোগ ব্যবহার বা বিক্রির জন্য পণ্য আমদানির ওপর কর, নগর হইতে পণ্য রপ্তানির উপর কর, টোল জাতীয় কর বা বৃত্তির উপর কর, জন্ম-বিবাহ দত্তক গ্রহণ ও জিয়াফত বা ভোজের উপর কর, বিজ্ঞাপনের কর, পশুর উপর কর, সিনেমা ড্রামা ও নাট্য প্রদর্শনী এবং অন্যান্য আমোদ প্রমোদ এবং বিনোদনের উপর কর, মোটর গাড়ি এবং নৌকা ব্যতীত অন্যান্য যানবাহনের উপর কর, বাতি অগ্নি রেইট, মামলা নিম্পত্তি রেইট জনসেবামূলক কার্য সম্পাদনের জন্য রেইট, পানি কল ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনার জন্য রেইট, সরকার কর্তৃক আরোপিত করের উপর, উপকর স্কুল ফিস, কর্পোরেশন কর্তৃক পরিচালিত কোনো জনসেবামূলক ধার্য হতে প্রাপ্ত করের উপর ফিস, মেলা, প্রদর্শনী শিল্প, প্রদর্শনী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং অন্যান্য জনসমাবেশের উপর ফিস, বাজারের উপর ফিস, কর্পোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স, অনুমোদন ও অনুমতির জন্য ফিস, কর্পোরেশন কর্তৃক বিশেষ কার্যের জন্য ফিস, পশু জবাই দেওয়ার জন্য ফিস, এই আইনের যে কোনো অধীনে অনুমোদিত অন্য কোনো ফিস, সরকার কর্তৃক আইন বলে অন্য কোনো কর চাইলে সিটি কর্পোরেশন আদায় করতে পারবে।
সভায় মেয়র বলেন, আয়বর্ধক প্রকল্পে নিজস্ব আয় বৃদ্ধি না করলে কর্পোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধ করে নাগরিক সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা কষ্টকর হয়ে পড়বে। এ সময় মেয়র ভূ-সম্পত্তি শাখাকে কর্পোরেশনের সমস্ত সম্পত্তির হিসাব অবিলম্বে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার মাধ্যমে তাঁর নিকট উপস্থাপন করতে বলেন। মেয়র বলেন, মোট সম্পত্তির বিবরণ হাতে পেলে বুঝবো কোথায় কি পরিমাণ সম্পত্তি অব্যবহৃত অবস্থায় আছে এবং কোথায় কোন আয়বর্ধক প্রকল্প নেয়া যায়।
সভায় কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, আইন কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দীন, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব মো.আবুল হাশেম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো.আলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আকবর আলী, ঝুলন কুমার দাশ উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাহে রমজানের সওগাত
পরবর্তী নিবন্ধঅবশেষে চালু হচ্ছে লক্ষ্মীছড়ার দুটি ব্রিজ