কয়েক বছর আগেও পটিয়ায় তেমন সরিষা ক্ষেত ছিল না। বলতে গেলে সরিষা চাষ বিষয়ে আগ্রহ বা পারদর্শিতাও ছিল না বেশিরভাগ কৃষকের। কিন্তু কৃষি বিভাগের সহায়তা ও উৎসাহে এখন উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। অল্প সময় ও স্বল্প খরচে বেশি লাভ পাওয়ায় বর্তমানে সরিষা চাষে দিন দিন ঝুঁকছে কৃষকরা। ৮৫-৯০ দিনের মধ্যে বীজ সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষকরা স্বল্প মেয়াদী ও অধিক লাভের আশায় এ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়নের ভান্ডারগাঁও এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সরিষা ক্ষেতের মাঠ। ভোরে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সরিষার গা থেকে মুক্তার মত ঝকমকে শিশির কণা গড়িয়ে পড়ছে মাঠে। সকালের রোদে ঝলমল করতে থাকে মাঠভর্তি হলুদ সরিষা ফুল। যতদূর চোখ যায় কেবল হলুদ আর হলুদ। ধীরে ধীরে বেলা গড়িয়ে নামে বিকেল। বিকেলের ‘কনে দেখা’ আলোয় হলুদ ফুলগুলোর রূপ যেন আরেকটু খোলে। মিষ্টি বাতাসে দুলে দুলে ওঠে ফুলের ডগা। দিগন্ত বিস্তৃত হলুদ সরিষা ফুলে সেজে উঠেছে প্রকৃতি। স্থানীয় কৃষক মো. নুরুল আবছার জানিয়েছেন, তিনি গত বছর থেকে উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় সরিষা চাষ শুরু করেন। লাভ পেয়ে এ বছর ৪৫ শতক জায়গায় সরিষা চাষ করেছেন। এর জন্য কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার ও চাষাবাদ খরচ ও সার্বিক সহায়তা পাচ্ছি। তিনি আরো জানান, গত বছর নিজের পরিবারের সারা বছরের তেলের চাহিদা মিটিয়ে ও বাড়তি অংশ বিক্রি করে লাভবান হয়েছি। এ বছরও একইভাবে লাভবান হওয়ার আশা করছি। তবে গত বছরের শেষের দিকে বৃষ্টি থাকায় এবার একটু দেরিতে ফলন হয়েছে। তাই চলতি মাসের শেষের দিকেই ফলন তুলতে পারবেন বলে আশাবাদী। একই মত ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় সরিষা চাষি মো. শাহজাহান, শাহাদাত হোসেন ও মো. রিদওয়ান আরমানসহ অনেকে।
এ বিষয়ে পটিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্পনা রহমান জানান, এ অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে সরিষা চাষ সম্পর্কে তেমন কোনো আগ্রহই ছিল না। বর্তমানে উপজেলার কাশিয়াইশ, হাইদগাঁও, কচুওয়াই, কেলিশহর ও কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান, জুলধা ও চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের অনেক কৃষক সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তাদেরকে কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।