ওষুধ ও চিকিৎসা বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে নদী

| বৃহস্পতিবার , ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ

ওষুধ ও চিকিৎসায় ব্যবহৃত রাসায়নিক বর্জ্য যেভাবে বিশ্বের নদীগুলোকে দূষিত করছে, তা পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে বলে উঠে এসেছে এক গবেষণায়। এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্ক পরিচালিত ওই গবেষণায় প্যারাসিটামল, নিকোটিন, ক্যাফেইনের পাশাপাশি এপিলেপসি ও ডায়াবেটিসের ওষুধের ব্যাপক উপস্থিতি ধরা পড়েছে দূষণের নমুনায়। খবর বিডিনিউজের।
বিশ্বজুড়ে পরিচালিত বিস্তৃত এ গবেষণায় দেখা গেছে, পাকিস্তান, বলিভিয়া ও ইথিওপিয়ার নদীগুলো সবচেয়ে বেশি দূষণের শিকার। আর আইসল্যান্ড, নরওয়ে ও অ্যামাজনের চিরহরিৎ বনের নদীগুলো সবচেয়ে কম দূষিত হয়েছে। নদীতে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাওয়া ওষুধ যৌগগুলো কতটা সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলছে, সে বিষয়ে খুব বেশি তথ্য এখনও জানা যায়নি। তবে এটা বোঝা গেছে, মানুষের ব্যবহার করা প্রজনন নিয়ন্ত্রণের উপকরণ নদীতে মিশে মাছের বৃদ্ধি ও প্রজননকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, নদীতে অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি বৃদ্ধি হয়ত ওইসব ওষুধের কার্যকারিতাই কমিয়ে দিচ্ছে।
একশর বেশি দেশের এক হাজারের বেশি এলাকা থেকে নদীর পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এ গবেষণায়। সব মিলিয়ে ২৫৮টি নদীর পানির নমুনা পরীক্ষা করে এক-চতুর্থাংশের বেশি নদীতে ‘সক্রিয় ওষুধ প্রস্তুতের উপকরণের’ উপস্থিতি এমন মাত্রায় পাওয়া গেছে, যা জলজ প্রাণীর জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে।
গবেষক দলের প্রধান ড. জন উইলকিনসন বলেন, সাধারণত যেটা হয়, আমরা এসব রাসায়নিক বস্তুগুলো সেবন করি। আমাদের ওপর সেগুলো কিছু প্রত্যাশিত প্রভাব রাখে এবং এরপর আমাদের দেহ থেকে বের হয়ে যায়। সেসব রাসায়নিক নদী বা জলায়শে গিয়ে মেশে। এখন পর্যন্ত আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, সবচেয়ে আধুনিক দক্ষ পানি পরিশোধনাগারগুলোও এসব যৌগকে পুরোপুরি অপসারণ করতে পারে না।
সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হওয়া দুটি ওষুধ উপকরণ হচ্ছে কারবাম্যাজেপাইন, যা এপিলেপসির চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়, ও মেটফরমিন, যেটা ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত। আফ্রিকায় আর্টেমিসিনিনের উপস্থিতি অনেক বেশি পরিমাণে ধরা পড়েছে, যা ম্যালেরিয়ার ওষুধ হিসেবে সেবন করা হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নদীতে অ্যান্টিবায়োটিক উপাদানের উপস্থিতি বাড়তে থাকলে সেগুলো প্রতিরোধের সক্ষমতা তৈরি হবে ব্যকটিরিয়ায়, ওষুধের কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং শেষ পর্যন্ত ‘পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বৈশ্বিক হুমকি’ সৃষ্টি করবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবোন কান্দিলের হত্যাকারী ভাইকে মুক্তি দিল পাকিস্তানের আদালত
পরবর্তী নিবন্ধছৈয়দুর রহমান আনোয়ারা বেগম দাতব্য চিকিৎসালয়ে আলোচনা সভা