চকরিয়ায় অর্ধ কোটি টাকার ফুল বিক্রি

চাষিদের মুখে হাসি

চকরিয়া প্রতিনিধি | সোমবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৫:৪৫ পূর্বাহ্ণ

করোনা সংকটের শুরু থেকে মলিন ছিল কক্সবাজারের চকরিয়ার ফুল চাষিদের মুখ। অন্যান্য খাতের মতো ফুল খাতেও চাষিদের গুণতে হয়েছে লোকসান। তবে সেই সংকট কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন এখানকার কয়েকশ ফুল চাষি। এরই মাঝে হাজির হয়েছে বিশ্ব ভালবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসব। এই দুই পর্বকে সামনে রেখে গত এক সপ্তাহ ধরে রকমারি ফুল বিকিকিনির ধুম পড়ে যায় উপজেলার বরইতলী, হারবাংসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নে।
ফুলচাষিরা জানান, বিশ্ব ভালবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসবকে ঘিরে তরুণ-তরুণীদের আয়োজনের কমতি থাকে না। আর ফুল ছাড়া তো ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসব উদযাপনের কথা চিন্তাই করা যায় না। তাই চাহিদা মেটাতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার ব্যবসায়ীরা চকরিয়ার গোলাপ নগর খ্যাত বরইতলী ও হারবাং থেকে আগেভাগেই বিভিন্ন প্রজাতির ফুল কিনে নিয়েছেন। কয়েকদিন আগে থেকেই পাইকাররা আগাম অর্ডার দিয়ে রেখেছিলেন। এবারের ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসবকে ঘিরে চকরিয়ার চাষিরা বিক্রি করেছেন বিভিন্ন প্রজাতির অন্তত অর্ধ কোটি টাকার ফুল।
বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নের ফুল চাষিরা জানান, বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নে প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ শ্রমিক বাণিজ্যিকভাবে সৃজিত ফুলের বাগানে পালাক্রমে শ্রম দিয়েছেন। গোলাপ ও গ্লাডিওলাস ফুলের বেশি কদর থাকায় সেসব ফুল বিক্রি হয়েছে বেশি। এতে লাভের মুখ দেখেছেন চাষিরা।
চকরিয়ার ফুলের বেশি চাহিদা রয়েছে চট্টগ্রামের কাজির দেউড়ি, চেরাগী পাহাড়, আগ্রাবাদসহ মহানগরের বড় বড় ব্যবসায়ীদের কাছে। তারা এখানকার চাষিদের কাছে অন্তত এক মাস আগেই নানা রঙের গোলাপ, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ নানা ফুলের চাহিদা দিয়ে থাকেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেই হিসেবে চট্টগ্রাম, কঙবাজারসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শতাধিক পাইকার অর্ধ কোটি টাকার ফুলের অর্ডার দিয়ে রাখেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন চকরিয়ার বরইতলী গোলাপ বাগান মালিক সমিতির আহ্বায়ক মো. মঈনুল হোসেন।
বরইতলী একতা বাজার এলাকার ফুলচাষি নজির আহমদ বলেন, অন্যের দেখাদেখি তামাক চাষ ছেড়ে গত আট বছর ধরে উদ্যোগী হই ফুল চাষে। দুই কানি জমিতে গোলাপ ও গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। এবার প্রায় চার লাখ টাকার ফুল বিক্রি করেছি।
চাষিরা জানান, প্রতিটি গোলাপের দাম মানভেদে পাইকারিভাবে বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। রকমারি রঙের গ্লাডিওলাস বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। এতে চাষির পাশাপাশি বাগান পরিচর্যা ও ফুল তোলায় নিয়োজিত প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষের মুখেও হাসি ফুটেছে।
বাগান মালিক সমিতির আহ্বায়ক মঈনুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, দিবস উপলক্ষে চাহিদা বাড়ায় বরইতলীর দেড় শতাধিক চাষির প্রত্যেকে ফুল বিক্রি করে পর্যাপ্ত লাভের মুখ দেখেছে।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন আজাদীকে বলেন, দাপ্তরিক হিসেবে প্রায় ২০০ একরে গোলাপ এবং প্রায় দেড়শ একর জমিতে গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ হয়েছে। কৃষি দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমগনামা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা, উত্তেজনা
পরবর্তী নিবন্ধদড়ি ছিঁড়ে রং মিস্ত্রির মৃত্যু