একটি বেসরকারি টেলিভিশনের উপস্থাপিকার ছবি এডিট করে তৈরি অশ্লীল ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে নুর হোসাইন নুরু নামে যুবদলের এক কর্মীকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে গুলশান থানা পুলিশ। একই অভিযোগে নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন ঢাকায় ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী সজীব মিয়া। ওই উপস্থাপিকার দায়ের করা পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় এ দুজনকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে গুলশানে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে এ তথ্য দেন। তিনি দাবি করেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া দুজন জানিয়েছেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সবুজবাগ থানা কমিটির সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম তন্ময় ও যুবদলের এক সিনিয়র নেতার নির্দেশে নুর ও সজীব ফটোশপে এডিট করা ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। গুলশান থানা পুলিশ জানায়, ওই উপস্থাপিকা গত ৩ ফেব্রুয়ারি গুলশান থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি বলেন, একটি মৌলবাদী সম্প্রদায় ও কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মী তার কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে চেহারার কিছু অংশ ফটোশপের মাধ্যমে এডিট করে নগ্ন ও অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে। অভিযোগে তিনি আরও বলেন, ‘নুর হোসাইন নুর’ নামে একটি ফেসবুক আইডিসহ আরও একাধিক ফেসবুক আইডি ও ব্লগ থেকে তার এই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, পুলিশ তদন্ত করে একটি ফেসবুক আইডি ও একটি ব্লগ থেকে এই অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের হালিশহর থেকে গ্রেপ্তারকৃত নুর স্বীকার করেছে, তার ফেসবুক থেকে ভিডিওটি ছড়ানো হয়েছে। সে বলেছে তার সিনিয়র এক যুবদলের নেতা তাকে এই ভিডিওটি পোস্ট করতে বলেছিলেন। সেই নেতার আদেশে ভিডিওটি সে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এই সিনিয়র নেতার আদেশে সে ফেসবুকে সরকার বিরোধী বিভিন্ন মিথ্যা পোস্টও দিয়েছে।
এছাড়া আমরা ‘জনগণের মুখোমুখি’ নামে একটি ব্লগকে শনাক্ত করেছি। সজীব মিয়ার মালিকানাধীন এই ব্লগটি থেকেও উপস্থাপিকার ছবি এডিট করে বানানো অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে সজীব মিয়া জানায়, সে ছাত্র অধিকার পরিষদের সবুজবাগ থানা কমিটির একজন কর্মী। সংগঠনের সবুজবাগ থানার সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম তন্ময়ের কাছ থেকে এই ভিডিও পেয়েছে। তার নির্দেশেই সে ভিডিওটি তার ব্লগে পোস্ট করেন। যেহেতু এই দুজনের নির্দেশে তন্ময় ও সজীব ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছে, সেহেতু তাদের গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করলে ভিডিওটি কী উদ্দেশ্যে তারা ভাইরাল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তা জানা যাবে।