যে কোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে হামলা!

কিয়েভ ছাড়ছেন মার্কিন কূটনীতিকরা

আজাদী ডেস্ক | রবিবার , ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

রাশিয়া যে কোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে সামরিক হামলা চালাতে পারে- শুক্রবার এই সতর্কতা জারির পরদিনই যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভে তাদের দূতাবাসের কর্মীদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। গতকাল শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর কিয়েভের দূতাবাস থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে বলে ওয়াশিংটন পোস্ট খবর দিয়েছে। বার্তা সংস্থা এপি খবর দেয়, কিয়েভ থেকে দূতাবাস কর্মীদের সরিয়ে পোল্যান্ড সীমান্তের কাছাকাছি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
গত শুক্রবার হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া যে কোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করতে পারে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান বলেন, রাশিয়া হয়ত ব্যাপক মাত্রায় বিমান হামলা দিয়ে অভিযান শুরু করবে। তাহলে মার্কিন নাগরিক এবং দূতাবাস কর্মীদের নিরাপদে সরিয়ে আনা কঠিন হয়ে পড়বে। তবে রাশিয়া বারবার বলেছে, ইউক্রেন সামরিক হামলা চালানোর কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। কিন্তু ইউক্রেন থেকে তাদের কূটনীতিকদের সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ইউক্রেন সরকার এবং তৃতীয় কোনো রাষ্ট্রের সম্ভাব্য উসকানির কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে তিনি বলেন, রুশ দূতাবাস এবং কনস্যুলেটগুলো খোলা থাকবে।
পুতিনকে ফোন করবেন বাইডেন : যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এই সতর্কতা এমন সময় জারি করা হচ্ছে, যখন যুদ্ধ এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার খবর পাওয়া যাচ্ছে। জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ আলাদাভাবে টেলিফোনে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান বলেছেন, রুশ সৈন্যরা এখন যে কোনো সময় ইউক্রেনে বড় ধরনের হামলা চালানোর প্রস্তুতি শেষ করেছে। যদি আমরা সুনিশ্চিতভাবে ভবিষ্যতের কথা বলতে পারি না। আমরা জানি না ঠিক কী হবে। কিন্তু এমন ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, যাতে এখনই ইউক্রেন সরে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
তিনি বলেন, আমেরিকা এখনো জানে না পুতিন হামলা শুরুর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা। কিন্তু হামলা শুরুর ছুতো খুঁজছে ক্রেমলিন এবং ব্যাপক বিমান হামলা দিয়ে হামলা শুরু হবে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, রাশিয়া হামলা শুরু করলে আটকে পড়া মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে আনতে তিনি সৈন্য পাঠাবেন না। তবে যুক্তরাষ্ট্র পোল্যান্ডে মোতায়েনের জন্য অতিরিক্ত তিন হাজার সৈন্য পাঠাচ্ছে, যারা আগামী সপ্তাহে পৌঁছবে। বলা হয়েছে, মার্কিন সৈন্যরা ইউক্রেনে গিয়ে যুদ্ধ করবে না। কিন্তু আমেরিকান মিত্রদের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করবে।
এদিকে যেভাবে রাশিয়া সৈন্য বাড়াচ্ছে এবং সামরিক মহড়া শুরু করেছে সেটাকে আমেরিকানরা সামরিক অভিযানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি হিসাবে মনে করছে। রাশিয়া শুক্রবার ক্রিমিয়ায় নৌ মহড়া চালিয়েছে। এছাড়া বেলারুশে ১০ দিনের সেনা মহড়া অব্যাহত রেখেছে।
সর্বশেষ গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন শুক্রবার ঘনিষ্ঠ ন্যাটো মিত্র দেশগুলোর নেতাদের সাথে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন শীঘ্রই সেনা অভিযানের নির্দেশ দিতে পারেন।
জানা গেছে, বাইডেনের শীর্ষ সামরিক উপদেষ্টা জেনারেল মার্ক মাইলি রাশিয়া, ক্যানাডা, ব্রিটেন ও ইউরোপের সামরিক উপদেষ্টাদের বারবার ফোন করছেন। রাশিয়া অভিযোগ করছে, আমেরিকানরা ইচ্ছা করে ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তবে জেক সালিভান বলেন, তারা মিত্রদের সাথে গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করার ব্যাপারে যতটা সম্ভব স্বচ্ছ থাকার চেষ্টা করছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফেসবুকে ভুয়া অশ্লীল ভিডিও, গ্রেপ্তার ২
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপির আন্দোলনের হুমকি ‘হাস্যরস’ সৃষ্টি করে : তথ্যমন্ত্রী