বছর ঘুরে নতুন বছর এসেছে, মুখস্থ সত্য। চাল আমদানিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে এখন দ্বিতীয়, এটাও কী সত্য! শুনতে কেমন কেমন লাগলেও খবরটা আসলে খাঁটি ও সত্য। বেশ ক’বছর ধরে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এটাও সুন্দর সত্য। বাজারে চালের খুচরো দাম এত আমদানির পরও এখনো ঊর্ধ্বমুখী, এটাও পচা সত্য। পঞ্চাশ টাকার নিচে বাজারে মোটা চাল বিক্রি হয় না। চালের পাশাপাশি গমের আমদানি যেমন বেড়েছে তেমনি দামও। একই অবস্থা ডাল, ভোজ্য তেল, চিনিরও। প্রশ্ন হচ্ছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চাল আমদানিকারক হলো কেন? গম, ডাল, তেল, চিনি কী খাদ্যপণ্য নয়? খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ মানে তো সব খাদ্যপণ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া- নাকি অন্যকিছু?
আসলে কোনকিছুই হিসেবে মেলে না! হয়তো অর্থনীতি, বাজারনীতি বা গণিত শাস্ত্র বুঝিনা বলে! যারা বুঝেন, আশা করি তারা বিষয়টা খোলাসা করবেন। শুভংকরের প্যাঁচ বোঝা আসলে খুবই কঠিন। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মজয়ন্তী, মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উৎসব আয়োজন চলছে দেশজুড়ে, নানা আঙ্গিক ও মাত্রায়। আয়োজনে বিশেষকাজে যুক্ত একজন ভাগ্যবানের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের বিষয়টা দু’আয়োজনেই বেশ প্রচারণা পাচ্ছে। কিন্তু চাল ডাল, আটা ময়দা, তেলসহ সব খাদ্যপণ্যের বেপরোয়া ঊর্দ্ধগতিও একইসাথে মিডিয়া শিরোনাম হচ্ছে। চাল আমদানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে উঠে আসার খবরটিও। এসব খবর কী দেশের খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের মত বড় অর্জনকে ম্নান করে দিচ্ছে না?
তিনি দমফাটা অট্টহাসিতে শব্দদূষণ উপহার দিয়ে নাতিপোয়া ভূঁড়ি কাঁপিয়ে বলেন, আরে কেন এমন হবে! মানুষ কী না খেয়ে আছে নাকি? চিকন চালসহ বাংলাদেশ চাল রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে, জানেন না আপনি? ডাল গম, ভুট্টা দেশে প্রচুর আবাদ হচ্ছে। সামনে থেকে আমদানির বদলে রপ্তানি হবে, দেখুন। চিকন ও সুগন্ধি চাল রপ্তানির খবর জানি। কিন্তু বিলিয়ন ডলারের চাল আমদানির তুলনায় এগুলোর রপ্তানি আয় জাতীয় অর্থনীতেতে গুণতির বাইরে। ইনাকে এসব বলা মানে খামাকা অন্যূন ৭৫ টাকা কেজি দামের চালের ভাতে অর্জিত দামি এনার্জির বিপুল অপচয় মাত্র। পাত্তাই দেবেন না। দলে সক্রিয়ভাবে যুক্ত না থেকেও তিনি বিপুল সুবিধাভোগী। নিজেকে পেশাজীবি পরিচয় দিলেও নির্দিষ্ট কোন পেশা নেই, ব্যবসা বা চাকরিবাকরিও নেই। তবুও তিনি বেশ আরামআয়েশে আছেন, মিডিয়ায় ভাসেন। নেতা, জনপ্রতিনিধিসহ কিছু সুবিধাভোগী প্রভাবশালী পেশাজীবী নেতার সাথে তার সম্পর্ক নিবিড়। এদের ছাতার নিচে কিছু সংগঠনেও জড়িত আছেন । ক’মাস সম্ভবত পছন্দের পেশাজীবি নেতার নেতৃত্বাধীন একটা প্রতিষ্ঠানে কাজও করেছেন। তারপর থেকে অগায়রা বগায়রা আর কী! তিনি সম্ভবত সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবে কোন প্রভাবশালীর আশীর্বাদে ছোটখাট দায়িত্বও পেয়েছেন। এনিয়ে দৌড়ঝাঁপেও আছেন বেশ। আমাকে চুপ দেখে আত্মতুষ্টির শ্লেষেমাখা হাসি উপহার দিয়ে বলেন, আপনি তো অনেক বিজ্ঞ, জ্ঞানীও। একটু খোঁজ খবর নিলে বুঝবেন, কত সুগন্ধি চাল, পান-সুপারি,শাকসব্জি, ফল ফলারিসহ, মাছ মাংসের মত অপ্রচলিত আইটেম দেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে?
মাফ করবেন, এসব তাজা খাদ্যপণ্য রপ্তানি খাতে বাংলাদেশ বছরে কত কোটি টাকা বা ডলার আয় করে, তা কী আপনার জানা আছে? সবিনয়ে জানতে চাই।
কেন, আপনি টিভি, পত্রিকায় দেখেন নি? তার পাল্টা প্রশ্ন।
না তো ভাই, একদম না, বিগলিত হয়ে বলি।
লেখালেখিও করেন। সাধারণ জ্ঞানের পাশাপাশি রপ্তানি বাণিজ্যের খোঁজ খবর রাখা উচিত নয় কী?
অবশ্যই উচিত ভাই। বাংলাদেশ অন্য দেশে মাংস রপ্তানি করে, এটাও জানতাম না এতদিন! আসলে আমি না, আস্ত আহাম্মক। তো বাংলাদেশ থেকে কোন পশুর মাংস রপ্তানি হয় এবং বছরে কত মেট্টিক টন, একটু বলবেন কী প্লিজ?
শুনে তিনি বিশাল হেঁচকি তুলে একের পর এক হাঁচি দিতে থাকেন। একেকটার শব্দওজন ৫০০ ডেসিবলের উপরে। এমনিতেই মৌসুমী জ্বরে ভুগছি, এত ডেসিবলের এত্তোগুলো শব্দবোমার স্প্লিন্টারের ধাক্কা সহ্য করা বড্ড, বড্ড কঠিন হয়ে গেল…