আজ থেকে তিনদিন ব্যাপী চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রামে প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে প্রামাণ্যচিত্র ‘বধ্যভূমিতে একদিন’। প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা, অভিনেতা ও কলাম লেখক কাওসার চৌধুরী এটি নির্মাণ করেছেন। মুজিব বর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয় সম্মুখস্থ শেখ রাসেল চত্বরে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘বধ্যভূমিতে একদিন’ প্রদর্শিত হবে।
‘বধ্যভূমিতে একদিন’ প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মিত হয়েছে একাত্তরে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার আলবদর আল শামসদের গণহত্যা, লুণ্ঠন, নির্যাতন নিপীড়ন, যুদ্ধাপরাধ এবং তাদের মানবতাবিরোধী অপরাধের কাহিনীগুলোকে উপজীব্য করে।
কাহিনী প্রসঙ্গে নির্মাতা কাওসার চৌধুরী বলেন, পূর্ব বাংলার ওপর পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রামের পর, একাত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। যুদ্ধের এই নয় মাসে- দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার আলবদর আলশামসের হাতে শহীদ হয় ৩০ লক্ষ বাঙালি, ধর্ষিত হয় ২ লক্ষ নারী। দখলদারদের অত্যাচারে বাংলাদেশের এক কোটি মানুষ দেশ ত্যাগ করে ভারতে শরণার্থীর অসহায় জীবনযাপন করে এই সময়ে। সনাতন ধর্মের অগণিত মানুষ ধর্মান্তরে বাধ্য হয়। এই নয় মাসে বাঙালিদের কয়েক লক্ষ বাড়িঘর এবং বিভিন্ন স্থাপনা পুড়িয়ে দেয় দখলদারদের সম্মিলিত বাহিনী। নির্বিচারে লুণ্ঠন করে বাঙালিদের ধন-সম্পদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত প্রামাণ্যচিত্র ‘বধ্যভূমিতে একদিন’ নির্মাণ করতে গিয়ে আমরা নীলফামারি থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১৪৮টি বধ্যভূমিতে- মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা মানুষ, গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী, শহীদ পরিবারের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনাদের ‘কথন’ ধারণ করে এই প্রামাণ্যচিত্রে সংযোজন করেছি।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসান, বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর এবং চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক। প্রদর্শনীকালে ‘বধ্যভূমিতে একদিন’ এর নির্মাতা কাওসার চৌধুরী উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।